সংসারে অশান্তির নায়ক ও খলনায়কবৃন্দ

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ আবদুর রহমান সিরাজী ২৯ জুন, ২০১৩, ০৩:০৬:২৪ রাত

একটি ছেলে ও একটি মেয়ের বিবাহের মাধ্যমে একটি নতুন সংসারের পথচলা শুরু হয়। সংসার তথা দাম্পত্য জীবনের সুখ বেহেশতী সুখ আর সংসারের অশান্তি যেন দুনিয়ার জাহান্নাম। একটি ছেলের মন ও একটি মেয়ের মন এক হওয়ার মাধ্যমে সংসারে সুখ-শান্তি আসে, সংসারে উন্নতি হয়। আর যে কোন একটি মন ভেঙ্গে গেলে এই মন জোড়া লাগানো কঠিন কোন কোন ক্ষেত্রে আর জোড়া লাগানো যায় না।

একটি সংসার অশান্তি সৃষ্টি করতে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তারা হচ্ছেঃ

মেয়ে পক্ষে- মেয়ে নিজে, মেয়ের মা, মেয়ের বড় বোন- দুলা ভাই, অনাকাংখিত বন্ধু। আর ছেলে পক্ষে- ছেলের মা, ছেলের বন্ধু প্রমুখ। এখন আমরা দেখব কে কিভাবে অশান্তি তৈরী করে।

মেয়ে নিজে যেভাবে অশান্তি তৈরী করেঃ

বিয়ের পর স্বামীর সংসারের প্রতি মনোযোগী না হয়ে 'বাপের বাড়ী', 'বাপের বাড়ী' করা,। যেসব মেয়েরা বিয়ের পর স্বামী-সন্তান এর চেয়ে বাপ-ভাই এর প্রতি বেশী মনোযোগী তারা স্বামী-সন্তান এর কোন উন্নতি করতে পারে না বরং স্বামী সামান্য সচেতন হলেই সংসারে অশান্তি তৈরী হয়। এছাড়া স্বামীর কাছে অধিক চাওয়া, স্বামীর অপছন্দনীয় কাজ করা, যেভাবে চায় সেভাবে না চলা, ঘ্যানর ঘ্যানর করা, সংসার অগোছালো ও নোংড়া করে রাখা, স্বামী-সন্তানের প্রতি যত্নবান না হওয়া, শ্বশুরবাড়ীর লোকজনকে সম্মান না করা, নিজের বাসায় তাদের নিমন্ত্রন না করার মাধ্যমে একজন মেয়ে নিজের সংসারে অশান্তি ডেকে আনে।

যেসব মেয়ে স্বামীর প্রতি অনুগত থাকে। মা-বাবা, ভাই-বোন এর উপর স্বামীর মতামতকে প্রাধান্য দেয়; স্বামীর সম্মানহানিকর কিছু করে না; স্বামী-সন্তান এর কাজে সহযোগী হয় এবং তাদের প্রতি যত্নবান হয় তাদের সংসারে অশান্তি অনেক কম।

মেয়ের মাঃ মেয়ের সংসারে অশান্তির অন্যতম কারিগর মেয়ের মা। জেনে হোক আর না জেনেই হোক মেয়ের মা কন্যার সংসারে অনাকাংখিত নাক গলিয়ে অশান্তির বীজ বপন করে। একটি জরিপে দেখা গেছে ৮০% বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য দায়ী শ্বাশুরী। নিজের ঘরে নিজের মেয়েকে ভাত-কাপড় যাই দিক আর যে ঘরেই রাখুক মেয়ের জামাই কি খাওয়াল, কোন ঘরে রাখাল, কেমন আচরণ করল এসব চর্চা করা। মেয়ের জামাই এর প্রতি যত্নশীল না হয়ে মেয়ের প্রতি অধিক গুরুত্ব প্রদান, জামাইদের যথাযথ সমাদর না করা, জামাই এর উপর নিয়ন্ত্রন নেওয়ার চেষ্টা, মেয়ের জামাই এর কাছ থেকে বিভিন্ন অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা, জামাই-মেয়ের সংসারে তাদের ব্যক্তিগত ঝগড়া বিবাদে নাক গলানো, একাধিক মেয়ের জামাই থাকলে একজনের উপর অন্যজনকে প্রাধান্য দেওয়া, মেয়ের জামাই সম্পর্কে কটুক্তি করা মুলত সংসারে অশান্তি সৃষ্টি করে।

মেয়ের মা বিয়ের প্রথমেই জামাইকে আপন করে নেওয়া, মেয়ের জামাই এর সুবিধা-অসুবিধা শেয়ার করা, জামাই-মেয়ের ঝগড়াতে মেয়ের পক্ষ না নিয়ে জামাই এর পক্ষ নিয়ে মেয়েকে শাসন করা, জামাই কে যথাযথ সম্মান দেওয়া, আদর-আপ্যায়ন করা, উপহার দেওয়া এর মাধ্যমে একজন মা তার মেয়ের সংসারে অশান্তি দুর করতে সহযোগিতা করতে পারে এবং নিজেও সম্মানী হতে পারে।

মেয়ের বড় বোন-দুলাভাই ঃ ছোট বোনের প্রতি ভালবাসা আর শালীর প্রতি দাবি থেকে বোন জামাই আর ভাইরার উপর মাতব্বরী করার মানষিকতা, ছোট বোন কিভাবে তার স্বামীর উপর প্রাধান্য বিস্তার করবে এসব কুবুদ্ধি দেওয়া, তাদের সংসারে অযাচিত পরামর্শ দেওয়া, শ্বশুর বাড়ীর কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নিজেদের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া এর মাধ্যমে বড় বোন এবং দুলাভাই সংসারে অশান্তি সৃষ্টিতে সহায়ক হয়।

ছোট বোনকে সুপরামর্শ দেওয়া, ছোট ভাইরার সাথে সম্মানজনক আচরণ করা, একে অপরকে উপহার দেওয়ার মাধ্যমে বড় বোন এবং দুলাভাই একটি সংসারে অশান্তি দুর করতে সহায়ক ভুমিকা পালন করতে পারে।

অনাকাংখিত বন্ধুঃ কোন পুরুষ মানুষই বউয়ের ভালবাসার ভাগ অন্য কা্উকে দিতে চায় না বা দেওয়া সম্ভবও না। সেজন্য মেয়ের যে কোন প্রকারের বয়ফ্রেন্ড তা হতে পারে খালাতা ভাই, চাচাত ভাই, ফুফাত ভাই, মামাত ভাই, অফিস কলিগ, ক্লাসের বন্ধু এদের সাথে বিয়ের পর দুরত্ব বজায় রেখে না চললে সংসারে অশান্তি হবেই। বিয়ের পর মেয়ের প্রকৃত বন্ধু তার স্বামী এটা ঠিক রাখলেই সমস্যা হওয়া কথা না।

ছেলের মাঃ বউ-শ্বাশুরীর দ্বন্ধ চিরন্তন। ছেলের বউয়ের উপর অযাচিত মাতবরী করা, ছেলের কাছে বউয়ের নামে কুটনামি করা, ছেলের অর্থ কুক্ষিগত করা, বউয়ের সাথে ছেলের খারাপ ব্যবহারে সমর্থন করার মাধ্যমে সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হয়।

ছেলের বউয়ের সাথে ভাল ব্যবহার, তার ভুলত্রুটি সংশোধনের উদ্দেশ্যে ধরিয়ে দেওয়া, ছেলে বউয়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করলে ছেলেকে প্রশ্রয় না দেওয়ার মাধ্যমে একজন মেয়ে তার ছেলের সংসারে অশান্তি লাঘবে সহায়তা করতে পারে।

ছেলের বন্ধু ঃ নিজের স্ত্রী, শ্বশুরবাড়ী, সংসারের কথা বন্ধুর সাথে শেয়ার করা আর তার কুপরামর্শ আর উস্কানিমুলক কথা-বার্তার এর মাধ্যমে নিজের ভিতর ক্ষোভ সৃষ্টি হওয়া আর সেই ক্ষোভ স্ত্রীর উপর প্রয়োগ করার মাধ্যমে একজন ছেলের বন্ধু সংসারে অশান্তি সৃষ্টিতে সহায়ত করে।

নিজের সংসারের কথা কারও সাথে আলোচনা না করে যে কোন বিষয় স্ত্রীর সাথে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে সংসারে অশান্তি রোধ করা যায়।

বিষয়: বিবিধ

৩৮৮৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File