কে দায়ী- রাজাকার না চেতনাধারী
লিখেছেন লিখেছেন রাফায়েল ১৬ মার্চ, ২০১৩, ০৯:২০:২৯ রাত
ক্রমেই ঘনীভুত হয়ে আসছে সাম্প্রতিক সময়ের হত্যাকান্ড গুলোর রহস্য। গত ১৬ ফেব্রুয়ারী রাজিব হায়দার খুন হওয়ার পর আরো অনেক গনজাগরন মঞ্চের সাথে সংশ্লিষ্ট অনেক আন্দোলনকারীকে বিভিন্ন জায়গায় হত্যা করা হয়েছে, যার মধ্যে সিলেটের যুবলীগ নেতা জগৎযোতী তালুকদার, নারায়নগন্জের গনজাগরন মঞ্চের আহবায়ক রফিউল রাব্বীর ছেলে তানভীর ত্বকি নিহত এবং সনিউর রহমান নামক একজন নাস্তিক ব্লগার ছুরিকাহত হন। তারা সরাসরি জামাত বিরোধী ছিলেন বলে তাদের হত্যার পর দেশের মিডিয়া এবং গনজাগরন মঞ্চ এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিরা কোন ধরনের প্রমান ছাড়াই জামাত শিবিরকে দোষারোপ করেন। রাজীব হায়দার মৃত্যুর পর মিডিয়া সরাসরি জামাত শিবিরকে এর সাথে জড়িত বলে খবর প্রকাশ করে এবং গনজাগরন মঞ্চ জামাত পরিচালিত সোনার বাংলাদেশ ব্লগ নিষিদ্ধের দাবি জানায়,পরবর্তিতে সরকার এই ব্লগটিকে বন্ধ করে ফেলে। রাজীব হায়দারের হত্যা কান্ডের তদন্তে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ৫ ছাত্রকে আটক করা হয় এবং তারা তাকে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ আরো জানিয়েছে তারা এক শিবির নেতার নির্দেশে হত্যাকান্ডটি চালিয়েছে। তবে এই এক শিবির নেতা যে কোন নেতা পুলিশ তা জনসম্মুখে প্রকাশ করে নি। তাতে করে মানুষের মনের সন্দেহের সৃষ্টি হচ্ছে । সিলেটের জগৎযোতী তালুকদার সিলেট গনজাগরন মঞ্চের একজন নেপথ্য সৈনিক ছিলেন এবং তিনি ছিলেন যুবলীগের সাবেক সভাপতি। তাকেও দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে হত্যা করে এবং এই ঘটনার পর কিছু মিডিয়া আবারো জামাত শিবিরকে দোষারোপ করা শুরু করেন।যেহেতু তাদের এই আন্দোলন জামাতের বিরুদ্ধে এবং জামাত এিরকম সহিংস আচরন আগেও করেছে বলে জনগনও এই ধরনের তথ্যকে সরল মনেই মেনে নেয়।জগৎযোতি হত্যার আগেরদিন একটি মটর সাইকেল শোরুমে আগুন দেয় ছাত্রলীগ, যদিও প্রথম অবস্থায় মিডিয়াতে শিবিরের কর্মকান্ড হিসবে এসেছিল কিন্তু পরবর্তিতে এটা ছাত্রলীগের কাজ ছিল বলে মিডিয়ায় প্রকাশ হয়। তদন্তে এই মটর সাইকেল শোরুমে আগুন দেয়ার বিষয়টা এখন মুখ্য বিষয় হিসেবে দেখছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। দুঃখজনক হলেও সত্য যে তার মৃত্যুর পর বৃহত্তর আওমালীগ খুব একটা প্রতিক্রিয়া দেখায় নি। সবশেষে তানভীর ত্বকি হত্যার সাথেও শিবিরকে জড়ালেও এখন আওয়ামিলীগের অন্তঃকোন্দলের ফলাফল হিসেবেই এই হত্যাকান্ড হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। নিহতের বাবা এবং স্থানীয় মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভি সরাসরি শামীম ওসমানকে দায়ি করেন। তবে শামীম ওসমান তার উপর আনীত অভিযোগকে অস্বীকার করেন। তবে মিডিয়া এই ব্যাপারগুলো এখন আর খুব একটা ফোকাসে আনছে না এবং দুঃখজনক হলেও সত্য যে বাংলাদেশের তরুন প্রজন্ম এই ব্যাপারে নিশ্চুপ এবং নীরব ভুমিকা পালন করছে।মিডিয়ার হলুদ সাংবাদিকতা আর সরকারের সব অপকর্মকে জামাতের নামে চালিয়ে দেয়া সাধারন মানুষ ব্যাপক আতংকিত। এছাড়াও ২৮ ফেব্রুয়ারী সাইদির রায়ের পর জেগে উঠা সহিংসতায় অনেক মানুষ প্রান হারায় এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্রদায়ের মানুষের উপর আক্রমন করা হয়।সরকারের কাছে আগে থেকেই তথ্য ছিল হিন্দু সম্রদায়ের মানুষের উপর এই ধরনের আক্রমন হবে, কিন্তু প্রশাসন সেই ব্যাপারে নিরব থাকায় স্থানীয় হিন্দু এবং এদেশের আপামর মানুষের ভেতরে এক ধরনের আতংক সৃ্ষ্টি হয়েছে। এমনকি এখনো পর্যন্ত দুষ্কৃতিকারীদের ধরার ব্যাপারে প্রসাশন উল্লেখযোগ্য কোন ভূমিকা পালন করে নি। এতে সচতন মানুষরা মনে করছেন, এই ধরনের কর্মকান্ড সাধারনত স্থানীয় ভূস্বামীরা করে থাকে তারা এই ধরনের সাম্রদায়িক দাংগা লাগিয়ে মানুষকে বাস্তুহারা করে এবং নামমাত্র মুল্য এই জমিগুলো কিনে নেয়।
বিষয়: রাজনীতি
১৪১৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন