মামা ভাগ্নে সংলাপ আর নির্মম বাস্তবতা
লিখেছেন লিখেছেন রাফায়েল ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১১:২৩:২৯ সকাল
চিন্তিত মামাকে দেখে ভাগ্নের প্রশ্ন,
ভাগ্নে:- মামা, তুমি তুমি এত চিন্তিত কেন?
মামা:- নারে ভাগ্নে এমনি।
ভাগ্নে:- না মামা তুমি অবশ্যই কোন বিষয়ে টেন্সড।
মামা:- আমার কিছু টাকা চুরি গেছে, সেজন্য একটু টেন্সড।
ভাগ্নে:- ছিঃ মামা, তুমি আমাকে সন্দেহ কর।
এইটা কোন ক্লাস এইট এর ডাইলোগ মেকিং না। এটা বস্তাপচা শাহবাগ আন্দোলনের একটা বিষয়। শিক্ষিত জনগোষ্ঠি কখনই বলে নি শাহবাগ আন্দোলন নাস্তিকদের আন্দোলন। এটা জামাতের প্রপাগান্ডা। আমি অনেক মুসলিম দলের নেতাদের বলতে শুনেছি তারা বলেছে, ইসলাম নিয়ে যারা কটুক্তি করেছে তাদেরকে ফাসিতে ঝুলানো। কিন্তু আওয়ামী শাহবাগ বাহিনী ইসলামীক দল গুলোকে জামাত নাম দিতে গিয়ে তারা নিজেরাই নিজেদের উপর দায় নিয়ে নিল। কত বড় আহাম্মক, কেন শুধু শুধু নিজেদের উপর এত বড় দায় নিতে যাবি। কয়দিন আগে দেখলাম প্রজন্ম চত্তরের একটা পেজে লিখেছে শাহবাগ আন্দোলনের কারা নাস্তিক আর তারা কতটুকু সক্রিয় এই আন্দোলনে। তাদের কথায় মনে হল এইসব উগ্র নাস্তিকরা আন্দোলনের সাথে তত ঘনিষ্টভাবে জড়িত না। তাহলে কেন তারা শুক্রবারের আন্দোলনকে জামাতিদের আন্দোলন বলে রাষ্ট্র বিরোধী আন্দোলন বলে চালিয়ে দিত চাইল।তাইলে নিজেরাই তো নাস্তিকদের দায় মাথায় নিয়ে নিল, তাহলে দুষটা মুলত কার, সব দুষ ওই আওয়ামী শাহবাগীদের। নিজেরাই নিজেদের নাস্তিক বলে চালিয়ে দিল।আর আমি তাদরকেই বলছি, যারা শাহবাগ যায়নি তাদেরকে রাজাকার বলার অধিকার তাদরকে কে দিল? তারা যদি মনুষকে রাজাকার বলে তাহলে মানুষ অবশ্যি তাদেরকে কিছু বলে নিজের ঝাল মিটানোর চেষ্টা করবে। সেটাই সাভাবিক। কারন প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রয়া আছে।
আওয়ামী শাহবাগীদের কিছু প্রশ্নের জবাব,
১. জামাত আকীদা পরিপন্থী আর সন্ত্রাসী দল হলে আওয়ামিলীগও তার থেকে আরো জঘন্য একটি দল। তার মুলত চেতনা ৭১ এর কথা বলে ৭১ এর চেতনা কেই রেপ করেছে এতদিন। তারা নিজেদেরকে মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র স্বপক্ষ শক্তি বললেও তাদের দলে কোন সময়েই ১০ জনের বেশি মুক্তিযুদ্ধা ছিলেন না।বরং তার থেকে তিনগুন বেশি রাজাকার তাদের দলে আছে। আর সন্ত্রাস আওয়ামিলীগ কতটা করতে পারে তা আমরা অনেক দিন ধরেই অবলোকন করছি। ৭১ এ যারা মানবতা বিরোধী আপরাধ করেছে তাদের ভিতরে শুধু জামাতিদের বিচার চাওয়াটা কতটুকু যুক্তিযুক্ত। পাশাপাশি আওয়ামিদের বিচার না চাওয়ার কারনটা কি। রাজাকার থাকার কারনে যদি জামতকে নিষিদ্ধ করতে হয় তাহলে একই কারনে আওয়ামিলীগকেও নিষিদ্ধ করার দাবি উঠছে না কেন। আওয়ামিলীগ তো জামতের থেকে কম সন্ত্রাস করে না বরং আরো অনেক গুন বেশী সন্ত্রাস করে। তাহলে এই শাহবাগী নামক আন্দোলনকারীরা যে আওয়ামিলীগ এর একটা অঙ্গ সংগঠন সেটা আর বুঝতে কারো বাকি থাকে নাকি। আর আমজনতা আওয়ামিলীগের অঙ্গ সংগঠন কখনই হতে পারে না।
২. এই ব্যাপারে একমত যে, রাজাকরের বিচার হওয়া উচিত।কিন্তু শাহবাগের আন্দোলনের স্লোগান হল, ”রাজাকারের বিচার চাই,পক্ষ নিলে রক্ষা নাই ”, কিন্তু মজার ব্যাপার হল তারা নিজেরাই একটি পক্ষকে বেছে নিয়েছে যা সাংঘাতিক রকমের স্ববিরোধিতা। তাই তারা নিজেদের আন্দোলনের তেজ তারা নিজেরাই হারিয়েছে। সেটার দূষ সম্পুর্ন তাদেরই নিতে হবে।
৩. রাজিব মারা যাওয়ার পর সে নাস্তিক কিংবা বাংলাদেশে নাস্তিকতার বিস্তার হচ্ছে এই ধরনের কথা নাকি ছড়ানো হচ্ছে বলে অনেকের অভিমত। আসলে সেটা তাদের সম্পুর্ন মিথ্যা অপপ্রচার। বাংলাদেশে প্রায় ৭-৮ মাস আগে এইসব নাস্তিক্যবাদ বিরোধী আন্দোলন হয়েছিল আর ধর্মকারী, সামহোয়ার, আমার ব্লগ আর নাগরিক ব্লগ নিষিদ্ধের দাবি করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার তা কোন আমলে নেয়নি। তাহলে গাফলতির দায়তো সম্পুর্ন সরকারের উপরই বর্তায়। আর রাজিব শাহবাগ আন্দোলনের কোন নেতা ছিল না। তারপরও তার মৃত্যুর পর তাকে শহিদের সম্মান দেয়াটা মুসলিম ব্লগার এবং মানুষ কোন ভাবেই মেনে নিতে পারবে না সেটা খুবই স্বাভাবিক। সে যদি আন্দোলনের বড় কিছু নাই হবে থাকে তাহলে তাকে নিয়ে অত মরাকান্না কেদে আর শহীদের মর্যাদা দিয়ে তার প্রতি মানুষের আগ্রহ কেন বাড়িয়ে দেয়া হল। নিজেরাই নিজেদের পাতে ফাদে পা দিয়ে হোচট খেয়ে পড়লে আমাদের কিই বা করার আছে।
তাই আমি বলতে চাই, নাস্তিক বিরুধী আন্দোলন এই দেশে একদম নতুন নয়। অনেক দিন আগ থেকেই সেটা চলে আসছে। আর তাই শাহবাগীদের বলব, আপনারা যার খেয়েই আন্দোলন করুন আর কারো না খেয়েই আন্দোলন করুন না কেন, সাধারন জনতাকে জামাত বলে ইগনোর করবেন না।আর শুধু শুধু নাস্তিকদের দায়ভার নিজেরা নিবেন না।
বিষয়: বিবিধ
১৫০২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন