৫ই মে ২০১৩- একটি ভয়ালরজনী ও সফল গনহত্যা, কেন?
লিখেছেন লিখেছেন মডার্ন মুসলিম ০৯ মে, ২০১৩, ০৩:০১:২৮ দুপুর
বাংলাদেশের ইতিহাসে এতদিন একটি কাল রাতের কথা আমরা জানি তাহলো ২৫ মার্চ ১৯৭১। যে রাতে সশস্ত্র পাক হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র ঘুমন্ত বাঙ্গালীর উপর ঝাপিয়ে পড়ে গনহত্যা চালিয়েছিল। সেকথা আর লিখবনা, লিখবো ৫ই মে কালো রাতের কথা। সে রাতে যারা গনহত্যার শিকার হয়ে ছিল তারা কারা ছিল? তারা ছিল আল্লাহ ও রাসুল(সাঃ) প্রেমিক ধর্মপ্রান মুসলিম। এই ধর্মপ্রান মুসলিমেরা এসেছিল কিছু দাবি নিয়ে, যে দাবি ছিল মুসলমানদের প্রানের দাবী, এ দাবি না মানলে নিজেকে মুসলিম পরিচয় দেওয়া যাবেনা। কিন্তু বাংলাদেশের হাসিনা সরকার এই দাবি মানাতো দূরে থাক তারা বাংলাদেশকে পরিপুর্ন ইসলাম মুক্ত করার মিশনে নেমেছে, সেই মিশনেরই একটি অংশ হলো আজকের এই গনহত্যা।
গত চার বছর ধরেও তারা চালিয়ে আসছে বিভিন্ন হত্যাকান্ড, গুম, খুন, ধর্ষন প্রভৃতি মানবতা বিরোধী ও অনৈতিক কার্যকলাপ। যার কোন বিচার হয়নি এবং হবেওনা। গত চার বছরের হত্যাকান্ড ছিল একটি রেজিস্টার্ড ইসলামী রাজনৈতিক দলকে শেষ করার উদ্দেশ্যে। কিন্তু ৫ই মে যে গনহত্যা হয় যার নাম “অপারেশন ফ্রিডম” সেটা কিসের জন্যে?
“হেফাযতে ইসলাম” কোন রাজনৈতিক সংগঠন নয়, তারা যে দাবি নিয়ে এসেছিল সেটা ইসলামিক দৃষ্টিকোন ও ধর্মপ্রান মুসলিম হিসেবে কোন রকম অযৌক্তিক বা অপ্রাসঙ্গিক ছিলনা। ৯০% মুসলিম অধ্যুষিত দেশে এ দাবি উঠা খুবই স্বাভাবিক। তারপরও হাসিনা সরকার কোন আলোচনা-সমালোচনায় না গিয়ে সরাসরি গনহত্যা কেন করলো? প্রকৃত অর্থে আওয়ামীলীগ সরকার ও প্রতিবেশি রাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এই সুযোগ হাতছাড়া করেনি। কেননা তারা জানতো সেদিন হেফাযতে ইসলামের সমাবেশে যারা এসেছিল তারা বাংলাদেশের বাছাই করা প্রকৃত ইসলাম প্রেমিক মুসলিম ও আলেম সমাজ। হাসিনা ও তার প্রভু ভারতীয় গোয়েন্দাদের হয়তো একটু কষ্ট হতো সারা বাংলাদেশ থেকে আল্লাহ ও নবী প্রেমী আলেম ও ধর্মপ্রান মুসলিমদের খুঁজে বের করে হত্যা করা। কারন বাংলাদেশকে ইসলাম শুন্য করতে হবেতো! তাইতো এই গনহত্যার মাস্টার প্ল্যান।
গনহত্যার কোন সুস্পস্ট প্রমান যাতে না থাকে সে জন্য তা করা হয় রাতের অন্ধকারে। যখন সেখান থেকে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়, করা হয় মিডিয়া গুলোকে ব্ল্যাক-আউট। দু একটি মিডিয়া যাদের হাতে গনহত্যার রেকর্ড ছিল তা যাতে প্রকাশ না পায় সেজন্য ভোর হওয়ার পুর্বেই সেগুলোকে নির্বাহী আদেশে বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং তাদের অফিসের সকল যন্ত্রপাতি ও রেকর্ড সরকারী বাহিনী লুট করে নিয়ে যায়। তারপরও সত্য কখনো গোপন থাকেনা।
৫ই মে কালো রাতে কিভাবে গনহত্যা হয়েছিল যারা বেঁচে ছিলেন তাদের বর্ননায় বেরিয়ে এসেছে অনেক সত্য, তাদের ভাষায় তিনদিক থেকে যৌথ বাহিনী ভারী মেশিন গান, একে ৪৭, মর্টার দ্বারা ব্রাশফায়ার করতে করতে এবং গ্রেনেড ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করতে করতে শাফলা চত্তরের দিকে এগিয়ে যায় সাথে ছিল ১২টি সাঁজোয়া যান যেগুলো ঘুমন্ত, মৃত, অর্ধমৃত ও জীবিত মানুষকে পিষ্ট করতে করতে বীরধর্পে এগিয়ে যায়। পিছনে ছিল ক্লিনার টিম তারা মৃত ও অর্ধমৃত মানুষ গুলকে ২৫টি ময়লার গাড়িতে তুলে নেয়, সবার পিছনে ছিল ওয়াসা এবং ফায়ার সার্ভিসের পানির টিম যারা পানি দিয়ে রক্ত পরিস্কার করে ফেলে। সকালে নগরবাসী দেখে বাহ! কি পরিস্কার মতিঝিলে হেফাযতও নেই তাদের রক্তও নেই। হাসিনা সরকার কত একটিভ, কত আন্তরিকতা ও সফলতার সাথেইনা তারা কাজ করে যার নজির ৫ই মে কালোরাত। কেউ জানলো না কেউ শুনলো না কেউ দেখলো না হাসিনা সরকারের রাতের অন্ধকারের এতবড় এই সফলতার কথা।
নাহ মনে হয় বিশ্ববাসী জেনে যাচ্ছে গুনবতী হাসিনার এই গুনের কথা, নদী-নালাতে শত শত লাশ ভেসে উঠছে, বি জি বি হেড কোয়ার্টারে ৯ ট্রাক মৃতদেহ, খন্ড খন্ড ভিডিও চিত্র, অসংখ্য ফটোগ্রাফ ইতিমধ্যে বেরিয়ে পড়ছে। কতজন মৃত্যুবরন করেছে সে রাতে? বেশির ভাগই প্রকাশিত হচ্ছে ৩০০০, কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে হাজার হাজার, ননকাউন্টেবল। আচ্ছা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কোথায় ছিল? তারাতো বেশি দূরে ছিলনা, আমি শতভাগ নিশ্চিত এই গনহত্যা সেনাবাহিনীর গ্রীন সিগনাল পেয়েই হয়েছিল। শুধু এটি নয় এই সরকার কতৃক পুর্বেকার সকল গনহত্যাও তাদের গ্রীন সিগনাল ছিল।
সেনাবাহিনী আজ আর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নেই এরা এখন হাসিনা সরকারের কিলার বাহিনীর পরোক্ষ মদতদাতা ও ভারতীয়দের গোলাম বাহিনী। যা বাংলাদেশের মানুষ দেখতে পাচ্ছে কিন্তু কিছু করতে পারবেনা। সেনাবাহিনীর প্রধান দায়ীত্ব নাকি দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা কর ও জনগনের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া। বাংলাদেশের সার্বভৌম বহু আগেই গেছে বাকি আছে শুধু বাংলাদেশের মুসলিমদের জান, মালের কথা বাদই দিলাম, জানতো ইতিমধ্যে নেয়া শুরু হয়ে গেছে বিভিন্ন গনহত্যার মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশের মুসলমানদের আর সেনাবাহিনীর প্রয়োজন নেই। সেনাবাহিনী এখন আদর্শচ্যুত, চরিত্রহীন, লম্পট, অর্থলোভী, পদলোভী আর ভারতীয় বেতনভুক্ত খাঁটি দালাল। এরা হাসিনার গনহত্যার ও গনতন্ত্রের keep watching করে ও মৌন সম্মতি দিয়ে যাচ্ছে। আবার শোনা যাচ্ছে ৫ই মে কালো রাতে যারা কিলিং মিশনে ছিল তাদের মধ্যে অনেকে নাকি স্ট্যাটাস দিচ্ছে যে, তারা নাকি চাকরি হারানোর ভয়ে কিলিং মিশনে গিয়েছিল, তা নাহলে নাকি তাদের বউ বাচ্চা না খেয়ে মরে যাবে কিন্তু তারা যাদের বিনা অপরাধে হত্যা করেছে তাদের বউ-বাচ্চা-মা-বাবা কি নেই? তারা কি না খেয়ে মরে যাবে না? ঐসব অচেতন কিলারেরা তো জানেনা যে রিজিকের দায়ীত্ত্ব আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের। ভুপৃষ্ঠের এমন কোন প্রানী নেই যার রিজিকের দায়ীত্ব আল্লাহ নেননি।
বাংলাদেশের এই গনহত্যার বিচার দুনিয়ার কারো কাছে চাইব না। কারন দুনিয়াতে মুসলিম হত্যার বিচার হয়না। মুসলিমদের মানবধিকারও থাকতে নেই, তাই নেইও। আমরা মুসলিমেরা চাইও না। এই নষ্ট দুনিয়াটা মুসলমানদের জন্য নয়, এই দুনিয়াটা মানুষরুপী হায়েনাদের জন্যে। বাংলাদেশেও থাকবে শুধু হায়েনারা। মুসলিমেরা যতক্ষন ঈমান থাকবে ততক্ষন লড়াই করে শহীদ হয়ে যাবে। মহান আল্লাহই তাদের জান্নাতে আপ্যায়ন করাবেন। কেননা এই দুনিয়াটা আল্লাহর কাছে একটি মাছির ডানার সমতুল্যও না, যা প্রকৃত অর্থে মূল্যহীন। মহান আল্লাহ মুসলমানদের সহায় হোন, আমিন।
বিষয়: বিবিধ
২৫৭২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন