@গাড়ি এক্সিডেন্টের পর ড্রাইভার পালিয়ে যায় কেন?
লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল গাফফার ২২ জুন, ২০১৮, ০১:১৩:০৩ রাত
প্রতিনিয়ত দেশের কোথাও না কোথাও মর্মান্তিক সব দুর্ঘটনার ঘটছে যা উদ্বেক জনক হলেও আমাদের দেশে যেন তা গা- সহ্য হয়ে গেছে । বিচলিত হয়ে লাভ কি ? সব দায় সরকারকে দিয়েই এড়িয়ে যাচ্ছি । সরকার প্রশাসনও যার যার স্বাদ মত চালিয়ে যাচ্ছে ।যানবাহনের তুলনায় সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার পুরো পৃথিবীতে বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি । সরকার বিভিন্ন সময় এসব দুর্ঘটনা কমিয়ে আনার জন্য বললেও আদৌ দৃশ্যমান কোন কিছু পরিলক্ষিত হয়নি । আসলে সরকারে সৎ ইচ্ছার অনেক ঘাটতি রয়েছে বলে অনেকেই মনে করেন । এত অপরিকল্পিত রাস্তা , একি রাস্তায় এক সাথে হরেক রকমের ছোট-বড় যানবাহন বাংলাদেশ ছাড়া আর কোন দেশে আছে বলে মনে হয় না । প্রতিবছর পুলিশের হিসাবে ৩০০০ লোক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় প্রকৃত পক্ষে এর সংখ্যা ১২০০০ উপরে । প্রতিনিয়ত রাজধানীর সহ বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা মেট্রেপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ।মামলাও হচ্ছে তবুও কেন অনাকাঙ্ক্ষিত মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় অকালে মানুষের জীবন যাচ্ছে ? এক্সিডেন্ট হতেই পারে
কিন্তু এক্সিডেন্ট হবার পরেও চালক আরো বেপুরুয়া কেন হচ্ছে ?১৯ জুন মঙ্গল বার মহাখালী ফ্লাইওভারের ওপরে বেপরোয়া গতিতে আসা একটি প্রাইভেট কার সেলিম ব্যাপারী (৪৫) নামে এক লোককে চাপা দিয়ে দ্রুত বিজয় সরণির দিকে পালিয়ে যায়। সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকার পরও এমপি পুত্র হওয়ায় তাকে আটক করা হচ্ছেনা । এখানে কয়েকটি বিষয় মাথায় রেখে রাষ্ট্র পুলিশ প্রশাসন সত্যিই উদ্দোগী হয় আমার বিশ্বাস কয়েক সপ্তাহের মধ্যিই এসব বেপুরুয়া চালক দুর্ঘটনার লাগাম টেনে ধরা সম্ভব ।
১। জনসাধারণ যখন মনে করবে বেপুরা চালকদের পুলিশে দিলে তার সাজা নিশ্চিত ! তখনি পুলিশ জনসাধারণ থেকে আন্তরিক সহযোগিতা পাবে এবং সেই সাথে চালক যে পালিয়ে যায় এ প্রবণতাও কমে আসবে । কারণ গাড়ির চালকেরা খুব ভালো করে জানে সে যদি পালিয়ে না যায় তবে জনসাধারণ তাকে মেরে ফেলবে । আর জনসাধারণ মনে করে একে পুলিশে দিয়ে কি লাভ কিছুক্ষণ পর বা নাম মাত্র সাজা পেয়ে বাঁ জামিনে বেরিয়ে আসবে । মোট কথা রাষ্ট্রকে জনসাধারণকে আশ্বস্ত করতে হবে । যে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয় ।
২/ মূর্খ আনাড়ি লোকদের গাড়ির লাইসেন্স না দেওয়া । একজন মূর্খ আনাড়ি লোক মানেই অসচেতন কাণ্ডজ্ঞানহীন ব্যক্তি।
৩/ যারা সরকার অনুমদিত গাড়ি চালানো লাইসেন্স পেয়েছে তাদেরকে পুলিশ প্রশাসন থেকে আশ্বস্ত করতে হবে । যে কোন সমস্যা পুলিশ প্রশাসন তাদের সহযুগিতা করবে । এতে করে লাইসেন্স করতে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করবে ।
৪/ ফিটনেস বিহীন গাড়ি রাস্তা চালানো টোটালি নিষেধ করতে হবে । এবং যেসব গাড়ির মালিকরা লাইসেন্স ছাড়া চালক দিয়ে গাড়ি চালায় সেসব গাড়ির মালিকদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে ।
৫/ হাইওয়ে বড় গাড়ির অভারটেক নিষেধ করতে হবে সেই সাথে এসব গাড়ি নির্দিষ্ট ইস্পিডের উপর গাড়ি না চলে সেজন্য গাড়ির গিয়ার কমিয়ে দেওয়া যেতে পারে , উন্নত বিশ্বে এমন করার উদাহরণ অনেক আছে ।
৬। দিনে বাঁ রাতে নির্দিষ্ট একটি সময় করে দেওয়া যেতে পারে এত টাইম থেকে এত টাইম ছোট ছোট বাঁ বড় গাড়ি রাস্তায় চলা নিষেধ, এতে করে কিছুটা শৃঙ্খলা চলে আসবে । বিশেষ করে সেসব যায়গা যেখানে ছোট বড় গাড়ি একত্রে চলার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যাম লেগে থাকে ।
৭ / গাড়ির চালক গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল , সিগারেট , মদ পান সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ করতে হবে সেই সাথে যাত্রীদের চালকে তার মত গাড়ি চালাতে দিতে হবে পেশ্রার দেওয়া যাবেনা । দূর যাত্রায় একের অধিক ড্রাইভার থাকতে হবে ।
৮/ হাইওয়ে তে স্পীড কেস করা ক্যামেরা বসাতে হবে যাতে করে নির্দিষ্ট ইস্পিডের উপরে গাড়ি চাললে সেই গাড়ির নাম্বার ছবি হাইওয়ে পুলিশ তাদের কন্ট্রল রুম থেকে দেখতে পাবে এবং সেসব গাড়ির মালিকের নাম্বারে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফাইন দিয়ে মেসেস সেন্ড করতে হবে ।
৯। যেসব রাস্তা বড় বড় গর্ত রয়েছে সেসব রাস্তায় সব সময় সচল রাখতে হবে । ট্রাফিক সিস্টেমকে
আরো উন্নত, আধুনিকায়ন এবং কার্যকর করতে হবে।
১০। সড়ক দুর্ঘটনা, নদী পথে লঞ্চ দুর্ঘটনা, রেল পথে ট্রেন দুর্ঘটনা। এগুলোকে জাতীয় সমস্যা হিসাবে নিতে হবে ।
সর্বপরি আমাদের সবাইকে দায়িত্বশীল এবং সচেতন হতে হবে।মনে রাখতে হবে একটি সুখ মানুষকে সারা জীবন হাসাতে
পারেনা কিন্তু একটি দুঃখ সারা জীবন মানুষকে কাঁদাতে পারে । আমাদের সবার এবং সম্মিলিত সহযোগিতায় সড়ক ও নৌ পথে সকল প্রকার দুর্ঘটনা বন্ধ হউক। দুর্ঘটনায় স্বজন হারানোর কান্না চিরতরে বন্ধ হউক। বন্ধ হউক অকাল মৃত্যুর এই মিছিল এবং নিশ্চিত হউক জীবনের নিরাপদ যাত্রা আর সুন্দর জীবন।
বিষয়: বিবিধ
১১৮৮ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
খুবই গুরুত্বপূর্ণ আহ্বান মাশাআল্লাহ। ভাল লাগলো লিখাটি। জাযাকাল্লাহ।
বেপুরা - বেপরওয়া
আদো - আদৌ
উদ্বেগি - উদ্দোগী
দ্বায় - দায়
সহযুগিতা - সহযোগীতা
অভারটেক - ওভারটেক
ইস্পিড - স্পীড
কন্ট্রল - কন্ট্রোল
বাঁ - বা/অথবা
পেশ্রার - প্রেশার
মেসেস - মেসেজ
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন