প্রবাসীদের জন্য ২০১৮ দুঃখ না সুখ !! ========================
লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল গাফফার ০১ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০৭:৩৯ রাত
আসসালামু আলাইকুম , দেখ দেখ করতে অবশেষে শেষ হতে চললো ২০১৭ । চলতি বছরে বিশ্বে অনেক কিছুই ঘটে গেছে নাটকীয়তায় গোপনে বা লুকিয়ে মোদ্দা কথা এই বছর বিশ্ব মানবজাতীকে আশানুরূপ কিছু দেতে পারেনি । তবুও নতুন আশায় মানব জাতী আবারো আশায় বুক বাঁধবে , চলতি বছরের সব ভুলভ্রান্তি কাটিয়ে উঠার আপ্রাণ চেষ্টায় হইতো সব ঠিক হয়ে যাবে । এই ভাবনা থেকেই অনুন্নত দেশের লোক গুলো বরাররের ন্যায় স্বপ্নপুরির ডানায় চড়ে হচ্ছে দেশান্তর । বাংলাদেশে এই প্রক্রিয়া অনেক প্রাচীন হলেও, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেবাংলাদেশের শ্রমিকদের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশ উন্মুক্ত হয়ে যায় এবং সে সময় থেকেই বাংলাদেশে জনশক্তি রপ্তানি কাজে নিয়োজিত সংস্থা ক্রমাগতভাবে সংখ্যায় বৃদ্ধি পেতে থাকে । যা আজো অবধি চলমান । জনশক্তি রপ্তানি সরকারিভাবে বেকার সমস্যার চাপ হ্রাসের একটি পদ্ধতি হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে ।১৯৭৫ সালে ৭৬৫ জন শ্রমিক বিদেশে পাড়ি জমান এধারা ক্রমানয়ে বাড়তে থাকে । মধ্যপাচ্যের দেশ সৌদি আরব এযাবৎ কালের বাংলাদেশী অভিবাসী গমনে শীর্ষে এখন পর্যন্ত ।ধর্মী রীতিনীতি ,এবং অব্যাহত অর্থনীতি সমৃদ্ধি টিকসই থাকায় বাংলাদেশের মত অনুন্নত দেশের অদক্ষ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ বেশি থাকায় আজ অবধি বাংলাদেশী অভিবাসীদের পছন্দের দেশ হিসাবে সৌদি আরবে শীর্ষে । এবং বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণেও শীর্ষে থাকার রের্কড ধরে রেখেছে সগৌরবে । দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকায় পুনরায় বাংলাদেশী ভিসা চালু হওয়ায় অসংখ্য বাংলাদেশী সৌদি আরবে পাড়ি জমান চলতি বছরেই যা দীর্ঘ অতীত রের্কডে আর নেই । কিন্তু সেই তুলনায় বাংলাদেশে এই দেশ থেকে রেমিটেন্স বাড়েনি বরং নিম্নমুখি । নতুন পুরাতন বাংলাদেশী অভিবাসীর চাহিদা মাফিক কাজ না পাওয়া অনেকে মানবেতর জীবন কাটছে এখন । সৌদি সরকারের অর্থনীতিতে দৈন্যতা দীর্ঘ কয়েক বছরে এত নিম্ন মুখি, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের মতে, সৌদি রাষ্ট্রীয় ঘাটতি জিডিপি'র 1২.4% তে দাঁড়িয়েছে।
এর কারণ হিসাবে প্রায় একযুগেরও বেশি সময় ধরে চলা জ্বালানি তৈলের দাম , স্বর্ণ , রাশিয়া, ইরান অধিক পরিমাণ তৈল উৎপাদন বাড়িয়ে দেওয়া এবং পাশের দেশ ইয়ামেনের সাথে যুদ্ধে জুড়িয়ে যাওয়াকেই প্রধান কারণ হিসাবে বিবেচনা করা হয় । আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে যে যদি খরচ এবং তেলের দামের অবনতি অব্যাহত থাকে তবে দেশের পাঁচ বছরের মধ্যে সম্পদের অভাব দেখা দিতে পারে। দেশের রাজস্ব আয়ের ৯০% আসে প্রেট্রলিয়াম থেকে । বিশ্বে তৈলের নিম্নমুখীতার জন্য দেশের অভ্যন্তরীণ প্রেট্রলিয়াম দ্রব্যাদির উপর যে ভুর্তকি ছিলো তা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার এরি ধারা বাহিকতায় ২০১৫ সালে ডিসেম্বরে ২৪ তারিখে এসব প্রেট্রলিয়াম দ্রব্যসামগ্রীর উপর ৪০% দাম বাড়ানো হয় । কয়েক বছরে সৌদি প্রিন্স সালমান অর্থনীতি এমন দৈন্যতা থেকে মুক্তি পাবার জন্য অজস্র অভ্যন্তরীণ সংস্কার করেছেন তদুপুরি এসংকট কেটে উঠতে না পারায় , অসামজস্য কর আরোপ করেই চলছেন । এসব কর প্রবাসীদের জন্য সুখকর না হওয়ায় ইতিমধ্য এদেশ থেকে প্রায় দেড় মিলিয়ন প্রবাসী নিজ দেশে পাড়ি দিয়েছেন । জেট জ্বালানি ছাড়া জ্বালানি তেলের দাম ২0২3 সাল নাগাদ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছানোর আশা করা যায় না এবং জিডিপি'র ঘাটতি 1২.4% তে দাঁড়িয়েছে তা ২০২০ সালের মধ্য কাটিয়ে উঠার জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে । অর্থনীতিতে সংস্কারের জন্য ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের পরিকল্পনা অনুযায়ী, জ্বালানি ভর্তুকিগুলি সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা সিদ্ধান্ত্ব নেন । বিশ্বে সবচেয়ে কম দামে প্রেট্রল ডিজেলের যে মূল্য নিয়ে দীর্ঘ রের্কড ছিল তা এবছরে ভাঙতে যাচ্ছে ।সেই লক্ষ্যেই নতুন বছরের ১ তারিখেই বাড়তে যাচ্ছে এযাবৎ কালের সব চেয়ে নজির বিহীন কর । প্রেট্রলিয়াম দাম ডিসেম্বরের ১১ তারিখের রিপোর্ট অনুযায়ী ৮০% বাড়ার কথা থাকলেও শেষ অবধি সমস্ত জিনিসের উপর ৫% কর আরোপ করেছে । এখন থেকে সৌদি প্রবাসীরা ১০০ রিয়ালের দ্রব্যসামগ্রী কিনতে হবে ১০৫ রিয়াল । এছাড়াও , ব্যাংকে টাকা প্রেরণে দিতে হবে এস্টা চার্জ , ইলেক্টিক মোবাইল কিনতেরও গুনতে হবে অতিরিক্ত চার্জ ,এছাড়া আকামা করতে এখন থেকে সরকারকে দিতে হবে মাসে ২০০ রিয়াল এস্টা । মদ্দা কথা ব্যবহারয্য সব কিছুতে কর দিতে হবে সরকারকে যে পর্যন্ত সৌদি অর্থনীতির নিম্নমুখিতা অব্যাহত থাকবে । এহেন পরিস্থিতে সর্বত্র ধমধম বিরাজ করছে ,সৌদি প্রবাসীদের জন্য এবছর এসব মোকাবেলা করা সব চেয়ে চ্যালেন্স যা দীর্ঘ ইতিহাসে প্রবাসীদের জন্য ছিল কল্পনাতীত । এবং এর প্রভাব আমাদের দেশে অর্থনীতিতেও নড়বড়ে করে তুলবে ।
বিষয়: বিবিধ
৯৮০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন