@@আসন্ন ঈদে কি করণীয় ও বর্জনীয় @@
লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল গাফফার ১৬ জুলাই, ২০১৫, ০৯:৪১:৩৭ রাত
ঈদ মুসলমানদের আত্মার পরিশুদ্ধি, মুসলমানদের ঐক্য ও সংহতি, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের প্রতি আনুগত্য ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের একটি মার্জিত উৎসব। তবে দুঃখের ব্যাপার হল আমরা অনেকেই এ দিনটিকে যথার্থভাবে পালন করতে ব্যর্থ হই। নানাবিধ ইসলাম বহির্ভূত কাজে লিপ্ত হয়ে হারিয়ে ফেলি ঈদের মাহাত্ম্য, পাশ্চত্য সংস্কৃতির গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসায়ে আনন্দ উপভোগ করি। ঈদের মুল শিক্ষা থেকে আমরা চলে যাই দূরে, বহু দূরে। এ ধরনের আচরণ থেকে বেঁচে থাকা প্রতিটি মুসলমানেরই জরুরি । তাই আসুন ঈদের দিনে আমাদের কি কি করনীয় আর কি কি বর্জনীয় জেনে নেই ।
ঈদের দিনে করনীয়:
১) ঈদ উপলক্ষে একে অপরকে অভিনন্দন ও ঈদের শুভেচ্ছা জানানো সুন্নত। তবে এর নির্দিষ্ট কোন পদ্ধতি নেই। আমাদের দেশে ঈদ মোবারক আরব দেশ গুলোতে কালামাতুবু খায়ের এই সমস্ত কথা গুলো বলতে শুনা যায় ।
২) পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অর্জন করা।,গোসল করে সুন্দর পোষাক পরিধান করা। কিন্তু মহিলাগণ তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ করবে না এবং আতর-সুগন্ধি ব্যবহার করবে না
৩) ঈদুল ফিতরের নামাযে যাওয়ার পূর্বে কিছু খেয়ে বের হওয়া সুন্নাত।
৪) ঈদের নামাযে বের হওয়ার আগে ফিতরা আদায় করবে। ঈদের দুই-এক দিন আগে ফিতরা পরিশোধ করলেও চলবে। নবী (সাঃ) ঈদের নামাযের জন্য বের হওয়ার পূর্বে ফিতরা আদায় করতে বলেছেন।
৫) চলার পথে আওয়াজ করে তাকবীর পাঠ করা। । শীঘ্র শীঘ্র ঈদের মাঠে যাওয়া।
৬) এক রাস্তা দিয়ে যাওয়া অন্য রাস্তা দিয়ে ফিরে আসা। (বুখারী)
৭)ঈদের দিনে উন্নত খাবার খাওয়া এবং পোষাক-পরিচ্ছদে মাত্রাতিরিক্ত করা মুস্তাহাব।
8) ঈদের নামাযের পূর্বে বা পরে কোন প্রকার নফল নামায পড়া জায়েয নেই। তবে ঈদের নামায মসজিদে হলে বসার পূর্বে দু রাকাআত তাহিয়্যাতুল মসজিদ পড়ে নিবে।
৯) দূরের আত্মীয়দেরকে এই পবিত্র ও খুশীর দিনে ভুলে না যাওয়া। দূরের আত্মীয়দের বাড়িতে যাবো এবং তাদেরকে দাওয়াত দিয়ে সাধ্যানুযায়ী উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা ঈদের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক
১০)গরীব-দুঃখীদের খুঁজ-খবর নেওয়াঃ
সাহায্য-সহযোগীতার হাত প্রসারিত করে গরীব-দুঃখীদেরকেও ঈদের আনন্দে শরীক করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ছাওয়াবের কাজ।
ঈদের দিনে বর্জনীয় :
১) বিজাতীয় আচরণঃ মুসলিম সমাজে এ ব্যাধি ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। পোশাক-পরিচ্ছদে, চাল-চলনে, শুভেচ্ছা বিনিময়ে অমুসলিমদের অন্ধ অনুকরণে লিপ্ত হয়ে পড়েছে মুসলমানদের অনেকেই। এর মাধ্যমে একদিকে তারা সাংস্কৃতিক দৈন্যতার পরিচয় দিচ্ছে অপর দিকে নিজেদের তাহজিব-তামাদ্দুনের প্রতি প্রকাশ করছে অবজ্ঞা-অনীহা। এ ধরনের আচরণ ইসলামে শরিয়তে নিষিদ্ধ। হাদিসে এসেছে নবী (সাঃ) বলেন। যে ব্যক্তি অন্য জাতির সাথে সাদৃশ্যতা রাখবে সে তাদের দলভুক্ত বলে গণ্য হবে। (আবু দাউদ)
২) ঈদের দিনে পুরুষ কর্তৃক নারীর বেশ ধারণ ও নারী কর্তৃক পুরুষের বেশ ধারণ। পোশাক-পরিচ্ছদ, চাল-চলন ও সাজ-সজ্জার ক্ষেত্রে পুরুষের নারীর বেশ ধারণ ও নারীর পুরুষের বেশ ধারণ হারাম। ঈদের দিনে এ কাজটি অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়। হাদিসে এসেছে। ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেনঃরাসূল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুরুষের বেশ ধারণকারী নারী ও নারীর বেশ ধারণকারী পুরুষকে অভিসম্পাত করেছেন। ( আবু দাউদ)
৩) ঈদের দিনে কবর জিয়ারত না করা ,ঈদের দিনে কবর জিয়ারতকে অভ্যাসে পরিণত করা বা একটা প্রথা বানিয়ে নেয়া শরিয়ত সম্মত নয়। রাসূলুল্লাহ (মাঃ) বলেনঃ
তোমরা আমার কবরে ঈদ উদযাপন করবে না বা ঈদের স্থান বানাবে না। (আবু দাউদ)
যদি ঈদের দিন কবর জিয়ারত করা হয় তবে কবরে ঈদ উদযাপন হয়েছে বলে গণ্য হবে ।
৪) নারীদের খোলা-মেলা অবস্থায় রাস্তা-ঘাটে বের হওয়া ।
‘নারীদের সাথে দেখা-সাক্ষাত করা এবং তাদের সাথে অশালীন আচরণ বিনিময় করাঃ
দেখা যায় অন্যান্য সময়ের চেয়ে এই গুনাহের কাজটা ঈদের দিনে বেশি করা হয়। নিকট আত্মীয়দের মাঝে যাদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ শরিয়ত অনুমোদিত নয় ,তাদের সাথে অবাধে দেখা-সাক্ষাৎ করা হয়।
৫) ঈদের রাতে বা দিনে অশ্লীল গান, বাজনা, নাচ, ছবি, নাটক ইত্যাদির মাধ্যমে ঈদের আনন্দ উপভোগ করা।
পরিশেষে আমরা মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা জানাই, তিনি যেন মুসলিম জাতিকে ঈদ থেকে শিক্ষা নিয়ে তাদের জীবনকে ধন্য করেন এবং ঈদের দিনে সকল ইসলাম বিরুধী আচরণ থেকে মুসলিমদেরকে হেফাজত করেন। আমীন ।
যারা এক নিমেষেই ঈদ কাট বানাতেচান তারা এখানে চাপুন
বিষয়: বিবিধ
১৯৭১ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
০ ঈদে এসব না করলে আর কখন করবে ? সারা বছর রান্না ঘরেই তো কাটায় । এক আধটু শখ করে যা সাজে তাও ঈদে । এর জন্য কাপড় চোপর , কসমেটিক্স কত কি কেনে ! পারলারে গিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করে তো এই ঈদের জন্যই !
ঈদে যদি নাই বা সাজতে পারে মনের মত করে তাহলে ঈদটা কি তার জন্য বোরিং হয়ে যাবে না !!
জাজাকাল্লাহ খায়ের ভাইয়া ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন