" যে কারণে বিবাহিত স্বামীরা হতাশ "
লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল গাফফার ১৫ মার্চ, ২০১৫, ০৩:৫৪:১৩ দুপুর
আজ কাল ব্লগে ফেবুতে বিবাহিত স্বামীদের হায়-হুতাস দেখে কিছু লেখতে ইচ্ছা করলো । বিবাহিত স্বামীরা বুঝাতে চায় তারা মহা বিপদে পড়েছেন। আসলে কি তাই? এর জন্য বিবাহিত স্বামীরাও কি দায়ী নয় ? বিয়েত করেছে মাএ কয়েক দিন বা কয়েক মাস তাই না? এই কয়েক দিন বা মাসে কাঙ্ক্ষিত চাওয়া-পাওয়া পূরণ হবার নয় । কারণ ছেলে বিয়ে করলেও ছেলে ছেলের বাড়িতেই থাকে মেয়ে এর বিপরীত তাকে নতুন পরিবেশ নতুন সংসার বুঝিয়ে উঠতে হিমশিম ক্ষেতে হয় । এই ক্ষেত্রে মেয়েদের আন্তরিকতার অভাব নেই , তাই বলছি এই কয়েক দিনে সম্পর্কের মার্ক করে মন্তব্য বা যা চেয়েছেন তা পাইনি বলে হতাশ হবেন না । বরং মেয়েটিকে আপনি বেশি বেশি সময় দিন আপনার পরিবার আপনার জীবন সঙ্গিনীর কাছ থেকে যে একটু বেশিই প্রত্যাশা করেন তাকে বুঝান । অনেকেই বলে থাকেন ভেবে চিন্তা করে বিয়া-শাদী না করলে যা হবার তাই হয় ! কথাটির সাথে পুরা-পুরি না হলেও অধিকাংশি একমত , কারণ বিয়ে এমন একটি বন্ধন ,চুক্তি যা কবুল বলার আগে অনেক বার ভাবতে হয় ।
তাইত লোক মুখে একটি কথা আছে , মেয়েত অভাব নেই বিয়ে করাতে গেলেই মেয়ের অভাব পরে । বিয়ের ক্ষেত্রে কাম্যবস্ত্ত, চার কারণে কোন নারীকে বিয়ে করা হয়- তার সম্পদের কারণে, বংশমর্যাদার কারণে, সৌন্দর্যের কারণে এবং তার ধর্মানুরাগের কারণে। অতএব, তুমি ধর্মপরায়ণ নারীকে বিয়ে করে সফলকাম হও। (বুখারি, মুসলিম । এখন আপনাকেই বেছে নিতে হবে আপনি কোন বিষয়টাকে প্রাধ্যান্য দিবেন । আপনি যদি ধর্মপরায়ণ মেয়েকে বিয়ে করতে চান ?
তবে আপনাকেও ধর্মপরায়ণ মেয়েকে বিয়ে করার যোগ্যতা রাখতে হবে , এর জন্য আপনাকেও ধর্মপরায়ণ হতে হবে । আপনি যদি ধর্মপরায়ণ মুসলিম না হন আপনার জন্য ধর্মপরায়ণ নারী আশা করা কাম্য নয় । নয়ত আপনার জীবন সঙ্গীটির জন্য আপনার সংসার হবে জাহান্নামের মত ।
বিয়ে সবার জন্য প্রযোজ্য নয় । এই কথাটি সবাইকে জানতে হবে ।বিয়ে ক্ষেত্রেভেদে ফরজ, সুন্নত ,হারাম । ফরজঃ যখন বিয়া না করলে গুনাহ হচ্ছে সেই ক্ষেএে সাবালক হলে বিয়া ফরজ । আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হে যুবক সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যার ক্ষমতা আছে সে যেন বিয়ে করে। কেননা, তা চক্ষুকে নত করে এবং লজ্জাস্থানকে অধিক হেফাজত করে। (বুখারি, মুসলিম)
সুন্নতঃ সাধারণ অবস্থায় যতদূত সাবালক হলে বিয়ে করা সুন্নত ।
হারামঃ যখন কারো কাছে পুরুষ্ট থাকবেনা সেই ক্ষেএে বিয়া করা হারাম , কারণ আপনি বিয়ে করে বউয়ের হক আদায় করতে না পারেন সেই ক্ষেএে উপযুক্ত চিকিৎসা করে ভাল হয়ে বিয়ে করা উচিত ।
বিয়ের আগে অবশ্যই আপনাকে মোহরানা দিতে হবে । মোহরানা’ হল কোন সামগ্রী কিংবা টাকা পয়সা যা বিয়ের সময় স্বামী স্ত্রীকে দেয়ার প্রতিশ্রুতি প্রদান করে। এটি বিয়ের অন্যতম পূর্বশর্ত। কোরান মাজিদ বলে, হে নবি, আমি তোমার জন্যে তোমার স্ত্রীদেরকে হালাল করেছি যাদেরকে তুমি মোহরানা দিয়েছ। (আল-আহযাব, ৩৩:৫০) । সুতরাং মোহরানা না দিয়ে বিয়ে করলে বউয়ের কাছে আপনি ঘৃনার পাএ হবেন । আপনাকে তার অযোগ্য মনে হবে। বিয়ার করার আগে আপনাকে অবশ্যই বদ-অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে । আপনাকে সময় মত বাড়ি ফেরতে হবে বেশি রাত করে বাড়ি ফেরা উচিত নয় । খুব ছোট মেয়েকে বিয়ে করা উচিত নয় যদি বিয়ে হয়েই যায় তবে মনে রাখতে হবে আন্তরিকতা দিয়ে যেটা আদায় করা যায় কঠোরতা দিয়ে তা পাওয়া যায় না । নতুন অবস্থায় তাকে মাফ করুন তার ভাল কাজে প্রশাংসা করুন , মাঝে মাঝে ঘুরতে নিয়ে যান । জীবন সঙ্গিনীকে কোন সময় অবজ্ঞা অবহেলা করবেন না । কারণ সে আপনাকে পচ্ছন্দ করছে ,তার পছন্দকেও সম্মান দিন । শুশুর-শাশুড়ি নিয়ে বাঝে কথা বলা যাবেনা , সর্বশেষে যেটা বলতে চাই দাম্পত জীবন সুখী হবার জন্য আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করুন ।
বিষয়: বিবিধ
১৪৮১ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক সুন্দর করে গুছিয়ে বাস্তবভিত্তিক পরামর্শ দিয়েছেন।
আমিও বলি, ধর্মপরায়ণ মেয়েকে বিয়ে করার খায়েশ থাকলে নিজেকে ধর্মপরায়ণ করে তোলা অতীব জরুরী। তার চেয়ে বড় কথা হল, একজন পর্দানশীন মেয়ের বাবা তখনি তার মেয়েকে আপনার হাতে তুলে দেবেন যখন দেখবে আপনি বউকে পর্দার ভিতরে রাখার সামর্থ রাখেন।
ঘরে তাদেরই মন বসে না, রাত্তির করে তারাই বাসায় ফিরে যারা বিবাহের পূর্বে মেয়ে ছেলের সাথে অবাধ মেলামেশা করেছে, এমন কি অসংখ্যবার দৈহিক মিলন করে রোমান্টিকতার প্রান্তসীমায় পৌছেছে, তবে ব্যতিক্রমও আছে যারা কিনা নানান কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে রাত করে বাটি ফিরতে হয়, সে অবস্থায় বউয়ের উচিত নয় স্বামীকে অহেতুক সন্দেহ করা।
আমি অনেক কে দেখেছি দ্বীনি কাজে এতো বেশি ব্যস্ত থাকেন, ঘরের বউয়ের প্রতি খেয়াল পর্যন্ত থাকে না, ফলশ্রুতিতে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে বা ঘতে থাকে। সুতরাং আমি যতই দ্বীনি কাজ করি না কেন, স্ত্রীর হকের প্রতি খেয়াল খুব খুব জরুরী।
যেসব দ্বীনদার ভাইয়েরা স্ত্রী সংসারের প্রতি উদাসীন থেকে বুজুরগীপনা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, এই সত্য ঘটনাটি তাদের জন্য-
বোখারী শরীফে বর্ণিত এক হাদীসের সারাংশ হচ্ছে, হজরত সালমান ফারেসী আবু দারদার সাথে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হন। একদা সালমান আবু দারদার সাথে সাক্ষাতে যান, কিন্তু দেখা পান নি। তিনি তার স্ত্রী কে সাদামাটা ও সাজগোজ হীনভাবে দেখতে পান। তিনি এর কারণ জিজ্ঞেস করেন। স্ত্রি বলেন, দুনিয়া কিংবা স্ত্রীর প্রতি আবু দারদার কোন ভ্রূক্ষেপ নেই। সে সর্বদা রোজা রাখে এবং নামাজ পড়ে। তারপর আবু দারদা ঘরে ফেরেন, তখন সালমানের জন্য খাবার প্রস্তুত করেন। রাতের প্রথম ভাগে আবু দারদা তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার ইচ্ছা করেন কিন্তু সালমান তাকে রাতের শেষ তৃতীয়াংশের আগে নামাজ পড়তে নিষেধ করেন। তারপর সালমান তাকে বলেন, তোমার উপর তোমার রবের, তোমার শরীরের এবং তোমার স্ত্রীর হক আছে। প্রত্যেককে তার হক বা অধিকার দিয়ে দাও। তারপর আবু দারদার রাসূল (স) এর কাছে যান এবং হজরত সালমান ফারেসীর কথাগুলো শুনান। তখন রাসূল (স) বলেন, সালমান সত্য বলেছে।
অতএব বুঝতেই পারছি, ইসলামে বৈরাগ্যতার সুযোগ নেই।
বিয়ার আগে অবশ্যই দুষ্টমি ছেড়ে দিতে হবে । অনেক ধন্যবাদ
কোন ছবিই কি পান নি এটা ছাড়া?
ধন্যবাদ ভাইয়া ।
সাবলীল ভাষায় চমৎকার বর্ণনা, ভালো লাগলো।
তিন বলার বলতে হবে? একবার বললে হবে না? তা আমিতো একবার বলেছি, এখন আমার কি হবে?
সুন্দর পোষ্টের জন্য লাইক আর ধন্যবাদ জানিয়ে গেলাম ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন