রমজান আলোচনা > রোজা ভঙ্গের কারণ সমুহঃ
লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল গাফফার ০৫ জুলাই, ২০১৪, ০১:৪৪:০১ রাত
পবিত্র রমজান মাস চলছে, এই মাসে প্রায় সকল মুসলিম ই মহান আল্লাহ্ তা’আলার সন্তুষ্টির জন্যে সাওম পালন করে থাকেন । সাওম একটি আরবি শব্দ, যার আভিধানিক অর্থ করলে দাঁড়ায় “বিরত থাকা”, আর সাওম কে ফারসী ভাষাতে রোজা বলা হয়। এই রোজার কিছু কিছু বিষয় রয়েছে যা ভঙ্গ করলে রোজা হয়না , কিন্তু আমরা অনেকেই এগুলোকে রোযা ভঙ্গের কারণ মনে না করে মানুষের মাঝে সংশয় সৃষ্টি করে থাকি।
আসুন যেনে নেই >
রোজা ভঙ্গের কারণ সমুহঃ
১/ইচ্ছাকৃত পানাহার করলে।
তবে কেউ যদি অনিচ্ছাকৃত ভাবে পানি খেয়ে ফেলে বা অন্য কোন খাবার খেয়ে ফেলে তাহলে রোজা ভাঙ্গবে না। খাওয়ার সময় যদি মনে পরে যে ব্যক্তি রোজা ছিলো, তাহলে মুখের খাবার ফেলে দিতে হবে। এছাড়া যতটুকু অজান্তে খেয়ে ফেলেছে ততটুকুর জন্যে রোজা ভাঙ্গবে না। নবী করিম (সা) বলেন -
যদি কেউ ভুলক্রমে পানাহার করে তবে সে যেন তার সিয়াম পূর্ণ করে নেয়, কেননা, আল্লাহ তায়ালাই তাকে এ পানাহার করিয়েছেন।” (অর্থাৎ এতে তার রোযা ভাঙ্গেনি)। (বুখারী শরীফ – ১৯৩৩ ও মুসলিম শরীফ – ১১৫৫)
২/স্ত্রী সহবাস করলে ।
তবে তার মানে এই না যে আপনি আপনার স্ত্রীকে আদর-যত্ন করতে পারবেন না। তাকে ছুতে পারবেন, তবে রোজা অবস্থায় কামভাবে না ছোয়াটাই ভালো। তাছাড়া অন্যান্য স্বাভাবিক বিষয়াদিতে কোন সমস্যা নেই।
৩/ ইচ্ছাকৃতভাবে বীর্যপাত ঘটালে ।
তবে স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভাংবেনা। তবে স্বপ্নদোষ হয়েছে এমনটা বোঝামাত্রই ফরয গোসল করে নিজেকে পবিত্র করে নিতে হবে।
৪/ কুলি করার সময় হলকের নিচে পানি চলে গেলে।
তবে কেউ যদি অনিচ্ছাকৃত ভাবে পানি খেয়ে ফেলে বা অন্য কোন খাবার খেয়ে ফেলে তাহলে রোজা ভাঙ্গবে না। খাওয়ার সময় যদি মনে পরে যে ব্যক্তি রোজা ছিলো, তাহলে মুখের খাবার ফেলে দিতে হবে। এছাড়া যতটুকু অজান্তে খেয়ে ফেলেছে ততটুকুর জন্যে রোজা ভাঙ্গবে না। নবী করিম (সা) বলেন -
যদি কেউ ভুলক্রমে পানাহার করে তবে সে যেন তার সিয়াম পূর্ণ করে নেয়, কেননা, আল্লাহ তায়ালাই তাকে এ পানাহার করিয়েছেন।” (অর্থাৎ এতে তার রোযা ভাঙ্গেনি)। (বুখারী শরীফ – ১৯৩৩ ও মুসলিম শরীফ – ১১৫৫)
৫/ ইচ্ছকৃত মুখভরে বমি করলে।
তবে যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি হয়ে থাকে তাহলে তাতে কোন সমস্যা নেই। অনিচ্ছাকৃত বমি হলে, বমি করার পর সমস্ত মুখ ভালো করে পানি দিয়ে কুলি করে ধুয়ে নিতে হবে যেন মুখের কোথাও বিন্দুমাত্র খাবারের কণা জমে না থাকে। নবী (সা) বলেন -
যে ব্যক্তি অনিচ্ছা বমি করল তাকে উক্ত সিয়াম কাযা করতে হবেনা। কিন্তু যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় বমি করল তাকে উক্ত সিয়াম অবশ্যই কাযা করতে হবে (আবূ দাউদ – ২৩৮০)
৬ / নাকে বা কানে ওষধ বা তৈল প্রবেশ করালে।
তবে অনিচ্ছাকৃত হলে সেটা আলাদা। একটু সাবধানে হতে হবে বিশেষ করে রমজান মাসে ।
৭/ জবরদস্তি করে কেহ রোজা ভাঙ্গালে । আপনার জীবন বিপন্ন , খুব দুর্বল হলে ভাঙ্গতে পারেন তবে পরিবর্তিতে এই রোজা পালন করতে হবে । আল্লাহ গাফুরুর রাহিম ।
৮/ ইনজেকশান বা স্যালাইরনর মাধ্যমে দেমাগে ওষধ পৌছালে।
এ ব্যাপারে একাধিক মতামত রয়েছে। ইনজেকশন যদি এমন হয় যে তাহলে শরীরের বল বৃদ্ধি করবে (যেমন গ্লুকোজ) তাহলে সে জাতীয় ইনজেকশন ব্যবহারে রোজা ভেঙ্গে যাবে। কারণ খাবার যেই কাজ করে এক্ষেত্রে অনেকটা একই কাজ করছে এটি। তবে শুধুমাত্র চিকিৎসার জন্যে যদি ইনিজেকশন দেয়া হয় (যেমন ইনসুলিন, পেনিসিলিন) তাহলে রোজা ভাঙ্গবে না। রক্ত নেওয়া থেকেও বিরত থাকতে হবে ।
৯/ কংকর পাথর বা ফলের বিচি গিলে ফেললে।
১০/ সূর্যাস্ত হয়েছে মনে করে ইফতার করার পর দেখা গেল সুর্যাস্ত হয়নি।
১১. দাঁত হতে ছোলা পরিমান খাদ্য-দ্রব্য গিলে ফেললে।
তবে ভুলে চলে গেছে আপনি অনুভব করতে পারেননি এই ক্ষেত্রে কোন সমস্যা হবে না তবে অনুভব করলে বের করে ভেলে দিতে হবে ।
১২. ইচ্ছাকৃত লোবান বা আগরবাতি জ্বালায়ে ধোয়া গ্রহন করলে। ধুম -পান করলে বা কেউ পাশে সিগারেট ফুঁকে ধোয়া ছাড়লো আর সেই ধোয়া আপনার শ্বাস-প্রশ্বাসে চলে যায় ।
১৩. মুখ ভর্তি বমি গিলে ফেললে ।
তবে অনিচ্ছাকৃত হলে সেটা আলাদা।
১৪. রাত্রি আছে মনে করে সোবহে সাদিকের পর পানাহার করলে। আপনার রোজা ভেঙ্গে যাবে । আরো বিস্তারিত জানার জন্য এখানে চাপুন
আসুন আমরা সতর্ক হই মাহে রমজানের হক আদায় করি বেশি বেশি ভাল কাজ করি , যাকাত দেই । খারাব কাজ থেকে বিরত থাকার উপযুক্ত এই মাসে আমরা সংসোধন হই তবেই ইহ কালে পরকালে আমরা নাজাত পাব ।
বিষয়: বিবিধ
১৬৩৫ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জাযাকাল্লাহ খাইরান...
নিচে লিংগ দিয়েছি ।
আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।
আপনার জন্য আন্তরিক দোয়া এবং শুভ কামনা রইলো।
মন্তব্য করতে লগইন করুন