মক্কা মদিনায় ঘুরে এলাম অতপর ব্লগার শাহাদাৎ হোসেন ( নবীনগর ) এর সাথে কিছুক্ষণ

লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল গাফফার ০২ জুন, ২০১৩, ০১:২৫:৫৯ রাত



আলহামদুলিল্লাহ ঘুরে এলাম পবিএ মক্কা ও মদিনায় , গত ৩১ তারিখ বিকাল ২.৩০ বুধবার এ যাএা শুরু , এটি ছিল মক্কা মদিনায় দ্বিত্বীয় যাএা । তাও আবার এই বছরের ৫ মাসের মাথায় , বরাবরের মতই মক্কা মদিনায় যেতে বুধবারকেই বেছে নেই , আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব বর্তমান সময়ের ছবি , এছাড়াও প্রথমবারের মত জিয়ারাতে আমি যে সমস্ত স্থান পরিদর্শন করলাম তার একটা সংক্ষিপ্ত বিবরণ ।

বাসে উঠার পর পরেই ফোন দেই মদিনায় অবস্থান করা বিড়িটুডে ব্লগের ব্লগার শাহাদাৎ হোসেন (নবীনগর ) উনার সাথে পরিচয় মাস কয়েক হবে । উনি একটি কোম্পানির ব্রাঞ্চ ম্যানেজার হিসাবে দায়িত্বরত । আলকাশিম থেকে বাস প্রতিদিন ছাড়ে কেঊ জালিয়াত থেকে, কেঊ সরকার অনুমতিত ওমরা বাসে । বুধবার অসংখ্য বাস যাএা করে মক্কার উদ্দেশে , কয়েকটি কারণ বলছি , মাঝখানে দুই দিন বন্ধ সরকারী ছুটি , অনেক কম্পানিও এই দুই দিন অফিস বন্ধ রাখে , আর কেউ যদি মদিনায় মসজিদে নব্বীতে জুম্মার সালাত আদায় করতে চান , আমার এ ছাড়াও আরেকটা উদ্দেশ্য ছিল নবীজীর কবর জেয়ারত , যাতে নবীজীকে খুব কাছে থেকে তথা উনার পাশে শুয়ে থাকা সাহাবী গণকে সালাম জানানো । বাস চলছেত চলছে উদ্দেশ্য ফজরের আযানের আগে মক্কায় পৌছা , মাঝখানে একটি বিরতি যত পারা যায় মাগরিব , এশার সালাত শেষ করে রাতের শেষ ভোজন টুকুও করে নেই ।যাওয়ার পথে মরুভূমির বুকে তাকালে দেখা যায় বড় বড় পাথর , জঙ্গলি কাটা যুক্ত ঊদ্ভিত মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আছে, মাঝে মধ্য শত শত রাখালহীন ছাগলের পাল, উটের পাল, ইচ্ছা মত ঘুরে বেড়াচ্ছে , দুই , তিনশ , কিলোমিটার পথ অতিক্কম করার পরেও শেষ খুঁজে পাচ্ছিনা , জেনে অবাগ হবেন এই দেশে এক কিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ১ জনের একটু উপর , পৃথিবীতে কোন দেশে নদী নেই বলতে এই দেশকেই বুঝানো হয় , এই দেশে কোন বন্যা হয়না ।

রাত ২ টায় কাঙ্ক্ষিত স্থানে পৌছে যাই, যথারীতি গোসল সেরে ইহরাম বেধে আবার যাএা শুরু ৩,৩০ এ কেবলার পাশে আমাদের নির্ধারিত হোটেলে পৌছে মালছামান রেখেই পবিএ ক্বাবা তওয়াফ করার উদ্দেশ্যে রওনা দেই । যথা সময় তওয়াফ , সাফামারওয়া পাহাড় ৭ চক্কর শেষে সোজা হোটেলে রেস্ট নেই । দিনে দিনে লোক সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ক্বাবার পাশে জায়গা আরও প্রস্থ করা হচ্ছে , কয়েকটি ছবি দেখেই বুঝতে পারবেন ।





বর্তমান ক্বাবার ছবি



পুরাদমে কাজ চলছে



রাতের পবিএ ক্বাবা শরীফ



এটি ক্বাবার পাশেই যা মক্কা ৪০ কিলোমিটার দূরে থেকেও দেখা যায় ।

শুক্র বার সকালে মদিনা মনোওয়ারা উদ্দেশ্যে যাএা করি মদিনার কিছু ছবি





রাতের মসজিদে নববীর ছবি

যাবার পথেই প্রথমে মসজিদ কুবা স্থান পরিদর্শন এর পরে মসজিদে কেবলাতিন । নিচে এই পবিএ দুই মসজিদের সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হল ।



১)মসজিদে কুবা ) সূরা তওবার ১০৮ আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘‘অবশ্য যে মসজিদের ভিত্তি প্রথম দিন হতে তাকওয়ার উপর স্থাপিত হয়েছে তা এর উপযোগী যে তুমি তাতে নামাজের জন্য দাঁড়াবে। এটি ইসলাম ধর্মে মুসলমানদের প্রথম আদি মসজিদ নামে পরিচিত । হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) মক্কা থেকে হিজরত করে উনার সাহাবীদের নিয়ে এই মসজিদের ভিত্তি স্থাপন করেন । এটি মদিনা নগরীর নিকটবর্তী কুবা –তে অবস্থিত । কুবা যায়গা নামাঅনুসারে একে কুবা মসজিদ বলা হয় । মসজিদটি দোতালা এবং আয়তাকার এড় ছাদে ১ টি বিশাল গম্বুজ এবঞ ৫ টি অপেক্ষাকৃত ছোট গম্বুজ রয়েছে । পবিএ হজ্জ ,ওমরা পালনকালে এখানে নফল নামাজ আদায় করা হয়ে থাকে । কোবার মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করা একটি ওমরাহর সমতুল্য পুণ্যের কাজ (তিরমিযি শরিফ, ইবনে আবিশাইবা ২য় খণ্ড)। এখানে গিয়ে দুই রাকাত নামাজ আদায় করলাম ।



২) মসজিদে কেবলাতাইন ) কেবলা পরিবর্তনের ঘটনা এই মসজিদে সংঘটিত হয়েছিল বলে এটা মসজিদে কেবলাতাইন বা দুই কেবলার মসজিদ নামে পরিচিত। নবীজি একদিন যখন এই মসজিদে যোহরের নামাজে মসজিদুল আকসার দিকে মুখ করে ইমামতি করছিলেন তখন নামাজরত অবস্থায় তাঁর উপর কাবা শরীফের দিকে মুখ ফিরিয়ে নামাজ পড়ার জন্য ওহী নাজিল হয়। তখন তিনি নামাজরত অবস্থাতেই ঘুরে কেবলা পরিবর্তন করে কাবা শরীফকে কেবলা করে বাকী নামাজ আদায় করেন। তখন থেকে কাবা শরীফ মুসলমানদের নামাজের কেবলা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

মসজিদে নববীর পাশে বাস থামিয়ে ১.৩০ পর বাস ছেড়ে যাবে বলে চালক জানিয়ে দিল । তখন বাজে সকাল ১১.৩০ আমি ব্লগার শাহাদাৎ ভাইকে আবার ফোন দেই , ফোন ধরলেন না বলে মসজিদের ভিতরে চলে যাই , যাবার সময় খেয়াল রাখতে হল কত নং গেট দিয়ে ঠুকলাম , কারণ , যত নং দিয়ে এসেছি তত নং দিয়ে যেতে না পারলে পায়ের জুতার সন্ধান পাওয়া দুষ্কর । সময় গড়িয়ে ১২.৩০ প্রথম আজান , এর ৫ মিনিট পর ২ ত্বীয় আজান , ইমাম সাব খুতবা পড়ছেন , হঠাৎ শাহাদাৎ ভাইয়ের ফোন বেঝে উঠল

কি করি ধরেই ফেললাম , আস্তে আস্তে বলছি জি বলুন , আপনি কোথায় আছেন এখন ? আমি ভিতরে ৩৬ নং গেটের পাশেই আছি ।

অহো ! আমিত ২৫ নং গেট দিয়ে ঠুকেছি , ফোন কেটে দিলেন । নামাজ শেষে বের হয়েই খুঁজতে থাকি ২৫ নং গেট এক লোককে জিজ্ঞাসা করলে জানিনা বলে । কি করার সামনে এগুতেই থাকি কি বলবো এত বড় মসজিদ যেখানে এক সাথে ১০ লক্ষাধিক মুসল্লি অনায়াসে সালাত আদায় করেন সেখানে মানুষ খুঁজে বেরকরা সত্যিই কষ্টকর । এগুতে থাকলাম পৌছে গেলাম ৩২, ৩১, নং গেটে ফোন দিলাম কোথায় ? ৩৪ নং গেটে আছেন , আসছি , আবার ফোন কোথায় ? ৩১, ৩২, গেটে আসতে বলি উনি আমাকে দেখতে পাচ্ছেনা , মাথায় লাল ক্যাপ আমার দেখতে পাচ্ছেন ? জবাবে না । হঠাৎ বলে উঠলেন টয়লেট দেখতে পাচ্ছেন , হা। ওখানে আছি , আসলাম কিন্তু এখানে আসতে বললেন কেন ? জবাবে আমিত ৩১, ৩২ দিয়ে ঘুরে আসলাম পেলাম নাত । টয়লেট MENS এ আছি ১৩,B এমন কিছু নাম্বার ছিল 13,C 13,D কিন্তু দুর্ভাগ্য কারো সাথে দেখা হচ্ছেনা , একবার উনি বলছেন আমার গায়ে সাদা পায়জামা , পায়ে জুতা , এতিমত হাঁসিও পাচ্ছিল , কারণ , পায়জামা , জুতা এতটাই কমন যে পায়জামা, জুতা ছাড়া মানুষ অতি নগণ্য , এই ভাবে ফোনে প্রায় ১১ মিনিট অবশেষে বলতে বাধ্য হলাম আমি দুঃখিত শাহাদাৎ ভাই , এই বলে ফোন রেখে দেই । আমি জানিনা , আমার কি করণীয় ছিল হইত সে আমাকে ঠিক ঠিক বলেছিল , আমার করনীয় আমি ঠিক ভাবে করতে পারিনি , এর আগে কখনো এমন হয়নি এইত কয়েক মাস আগে পরিচিত একজনকে খুঁজে পেয়েছিলাম মাএ ২ মিনিটে । শাহাদাৎ ভাইয়ের সাথে দেখা হবেনা এটা ছিল অকল্পনীয় , নিজেকে মানিয়ে নিতে পাচ্ছিনা , উনার বেপারে অনেক কিছু জানার ছিল , একটা তজবী তাকে উপহার দিব বলে এনেছিলাম , কারণ , শাহাদাৎ ভাই ছিলেন কোরআনের হাফেজ , অনেক সুন্দর মনের মানুষ । এই ভাবেই ক্লান্ত , অশান্ত মনটা নিয়ে নিজ গন্তবে যাএা করলাম । জাযাকাল্লাহ খায়ের

বিষয়: বিবিধ

৯১৯৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File