হে মহীয়সী নারীগণ,আমি সফলতার সংজ্ঞা খুঁজেছি আপনাদের মাঝে..সালাম আপনাদের প্রতি..

লিখেছেন লিখেছেন অবারিত ০৮ মার্চ, ২০১৩, ০১:৪৯:৩৫ রাত

সশ্রদ্ধ সালাম জানাই ইসলামের ইতিহাসের সেই সমস্ত মহীয়সী নারীদের যারা কিয়ামত পর্যন্ত প্রতিটি মুসলিম নারীকে উদ্বুদ্ধ করে যাবেন...

সালাম হে খাদীজাতুল কোবরা (রা)...নিঃসন্দেহে ইসলামের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম মহীয়সী নারীদের একজন আপনি।আপনি সেই মহাসম্মানিতা নারী যাকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন স্বয়ং সালাম জানিয়েছেন।ইসলামের সূর্য যেদিন পূর্বদিগন্তে প্রথম উদিত হয়েছিলো সেদিন রাসূল(সা) এর রিসালাতের উপর প্রথম ঈমান আনয়নকারী ছিলেন আপনি। যেদিন সমগ্র দুনিয়া রাসূলুল্লাহ(সা) এর বিরোধিতার ঝড় তুলেছিলো সেদিন আপনিই আপনার সমস্ত ভালোবাসা,স্নেহ,মমতা,দৃঢ় ঈমান,মহান অন্তকরন সমস্ত দিয়ে স্বামীকে আগলে রেখেছিলেন।আপনি আপনার সমস্ত ধন-সম্পদ অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছিলেন দ্বীন ইসলামের জন্যে।হে উম্মুল মুমিনীন,সমগ্র মুসলিম উম্মাতের পক্ষ থেকে সালাম আপনাকে।

সালাম হে আছিয়া (রা)...ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম জালেম শাসক ফেরাউনের স্ত্রী আপনাকে সালাম...আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের চূড়ান্ত বিদ্রোহী জালেম স্বামীর সামনে দৃঢ় ঈমানের যে জ্ব্লন্ত পরীক্ষা আপনি দিয়ে গেছেন তা কিয়ামত পর্যন্ত প্রতিটি মুসলিম নারীকে এই শিক্ষাই দিয়ে গেছে যে এক মুমিন নারীর জীবনে আল্লাহর সন্তুষ্টি তার স্বামী,সন্তা্‌ন,পরিবার অর্থাৎ যা কিছু তার প্রিয় আছে সমস্ত কিছুর উর্ধ্বে...

সালাম হে খানসা বিনতে আমর ইবনে আশ-শারীদ (রা)... সন্তানের প্রতি মায়ের সুতীব্র আবেগ আর ভালোবাসা আমার অজানা নয়।নারীর জীবনে সন্তানের চেয়ে প্রিয় বস্তু আর কিছু নেই।আপনি তো ইসলামের ইতিহাসের সেই বিস্ময়কর নারী যিনি কাদেসিয়ার রনাঙ্গনে তাঁর সন্তানদের শাহাদাতের জন্যে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।অতঃপর চার ছেলের শাহাদাতের খবর শুনে আল্লাহর কাছে এই বলে কৃ্তজ্ঞতা জানালেন, "সকল প্রশংসা আল্লাহর যিনি তাদেরকে শাহাদাত দান করে সম্মানিত করেছেন।আর আমি আমার রবের নিকট আশা করি, তিনি আখিরাতে তার অনন্ত রহমতের ছায়াতলে তাদের সাথে আমাকে একত্রিত করবেন।" সুবহানাল্লাহ,বিশ্বাসের কি চূড়ান্ত পর্যায়ে নিজেদের সঁপে দেয়া...

সালাম আল্লাহর রাসূলের নয়নের মনি ফাতিমা (রা) কে,আল্লাহর রাসূল যাকে জান্নাতের নারীদের সর্দারনী বলেছেন...আজকের আধুনিকা ও শিক্ষিতা নারী স্বামীর আনুগত্য,সন্তান প্রতিপালন ও সংসারের দেখভালকে নিজের জন্যে অবমাননাকর মনে করে।কিন্তু স্বামীর জন্যে কত আনুগত্যপরায়ন স্ত্রীই না ছিলেন আপনি,কত উত্তম মা ছিলেন সন্তানদের জন্যে,সংসারের চরম দারিদ্রতার পরেও কোনোদিন স্বামীর প্রতি অভিযোগ করেননি,সংসারের জন্যে অজস্র পরিশ্রম করেও একে কখনো নিজের জন্যে অবমাননাকর মনে করেননি...

আয়েশা সিদ্দিকা (রা),আসমা বিনতে আবু বকর (রা),উম্মু সুলাইম(রা),সুমাইয়া(রা)...সালাম আপনাদের সকলকে প্রতি...

সেই সাথে সালাম আজকের সেই সমস্ত নারীদের প্রতি...যারা নারী মুক্তিকামীদের দেখানো পথে তথাকথিত 'মুক্তি ও প্রগতি' না খুঁজে,আল্লাহ প্রদত্ত নিজেদের প্রকৃত মর্যাদাকে প্রগতিবাদের শ্লোগানের কাছে বিকিয়ে না দিয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দেখানো পথেই নারীর প্রকৃ্ত মর্যাদাকে খুঁজে নিতে পেরেছে। যাদের প্রচেষ্টা নিজেকে একজন সফল ক্যারিয়ারিস্ট নারী হিসেবে গড়ে তোলা নয়,বরং খাদিজা,আয়েশা,আছিয়া,ফাতিমা,খানসা (রা) দের প্রকৃ্ত উত্তরসূরী হয়ে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টি অর্জনের প্রচেষ্টার মাঝেই যারা জীবনের প্রকৃ্ত সফলতা খুঁজে পেয়েছে...

আল-কুরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যে ক্ষমা ও মহা পুরষ্কারের সুসংবাদ তাদের দিয়েছেন,সেই সুসংবাদটিই তাদের কাছে আরেকবার পৌঁছে দিচ্ছি...

"একথা সুনিশ্চিত যে, যে পুরুষ ও নারী মুসলিম, মুমিন, হুকুমের অনুগত, সত্যবাদী, সবরকারী,আল্লাহর সামনে বিনত, সাদকাদানকারী, রোযা পালনকারী, নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজতকারী এবং আল্লাহকে বেশী বেশী স্মরণকারী আল্লাহ তাদের জন্য মাগফিরাত এবং বিরাট প্রতিদানের ব্যবস্থা করে রেখেছেন" (সূরা আহযাবঃ৩৫)

বিষয়: বিবিধ

১৩০৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File