Yes,We Deserve It...
লিখেছেন লিখেছেন অবারিত ০৫ মার্চ, ২০১৩, ০১:১৬:৫৫ রাত
জামাত-শিবিরের লোকেরা ইসলামের নাম ভাঙ্গিয়ে অপরাজনীতি করছে,ইসলামের বদনাম করছে,জ্বালাও-পোড়াও এর রাজনীতি করছে,দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে...মানলাম অনেক কিছুই করছে তারা।
কিন্তু শুধু একটি প্রশ্ন জিজ্ঞেস করি...আর কত?আর কত?আর কত?বছরের পর বছর কতটুকু নির্মম অত্যাচার,নিপীড়ন,মিথ্যা অপবাদ,জুলুম আর নির্যাতনের স্টীম রোলার সহ্য করার পর মানুষ নিশ্চুপ থাকতে পারে একবার বলবেন কি?দিনের পর দিন ঘরে ঘরে ক্রন্দনের রোল,মজলুমের হাহাকার যখন চলছিলো তখন কোথায় ছিলো আপনাদের শান্তিকামী অন্তর?পুলিশি তাড়া খেয়ে এখানে সেখানে,রাস্তায়-ঘাটে রাত কাটানো যে ছেলেটি এক রাতের জন্যে তার মায়ের কাছে ফিরে আসলো আপনারা তখন দেখেছিলেন কি ওই অসহায় মায়ের নির্ঘুম রাত?বুকের মানিককে কাছে পেয়ে খুশি হওয়ার সুযোগটিও পেলেননা মা...সারারাত জানালার গরাদ ধরে নির্ঘুম রাত কাটিয়ে দিলেন...না জানি কখন পুলিশ এসে তার ছেলেটিকে ধরে নিয়ে যায়।চোখের পানি আটকে রাখতে পারিনি যখন শুনেছিলাম ফ্লাইওভারের গার্ডার ধসে মারা যাওয়া মানুষদের ভেতর ওই ভাইটিও ছিলো যে পুলিশের ভয়ে ঘরে না ঘুমিয়ে ফ্লাইওভারের নিচে রাত কাটাতে এসেছিলো।আপনারা দেশপ্রেমী মানুষরা তখন তো সেখানে ছিলেননা যখন ছোট ছোট বাচ্চাগুলো ক্ষুধার যন্ত্রনায় কাঁদছিলো...ঘরে বাজার করার মানুষ নেই,টাকা নেই,অসহায় মা আগলে ধরে আছেন ছোটো ছোটো বাচ্চাগুলোকে...কারন কয়েক মাস ধরে তাদের বাবা নিঁখোজ,না হয় পুলিশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
বছরের পর বছর হাজার হাজার পরিবার এমনি জুলুম সহ্য করেছে।এমন রাত হয়তো খুব কমই ছিলো যে রাতে দরজায় কড়া নাড়েনি পুলিশ।কি দোষ ছিলো মানুষগুলোর?ঘর থেকে,হল থেকে,মেস থেকে,বাস থেকে,রাস্তা থেকে যাকে যেখানে পেয়েছে সেখান থেকেই পুলিশ আর লীগের সন্ত্রাসীরা হিড় হিড় করে টেনে নিয়ে গেছে...কাউকে ধরে নিয়ে গিয়েই খুন করে ফেলেছে,কাউকে রিমান্ডে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে পঙ্গু বানিয়ে দেয়া হয়েছে,আর কাউকে আর খুঁজেই পাওয়া যায়নি। কারো কাছে কোনো ইসলামিক বই বা কোরআন পাওয়া গেলেও জিহাদি বই রাখার অপরাধে এবং জঙ্গী তৎপরতা চালানোর অভিযোগে সাথে সাথে হাজতখানায়...সমস্ত কোরান-হাদীস আর ইসলামিক বই পর্যন্ত মাটির নিচে পুঁতে রাখতে হয়েছে...হায়রে ৯০% মুসলিমের দেশ! খুব জানতে ইচ্ছে করে যারা এখন দেশের এই নৈ্রাজ্য নিয়ে খুব বেশী টেন্সিত...বছরের পর বছরের এই জুলুম-অত্যাচারের সময় তাদের ব্যক্তিগত অভিমতটা কি ছিল!
নির্যাতন আর যুলুমের স্টীম রোলারে পিষ্ট হতে হতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে... এতো অত্যাচার নির্যাতনের পরও প্রতিবাদ করা যাবেনা,কারন তোমরা জামাত শিবির...মুনতাসির মামুনরা বলেছে তোমাদের জন্যে কোনো মানবাধিকার থাকতে নেই...তোমরা জুলুমের প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নামলে তোমাদের গনহারে গ্রেফতার করা যাবে,নির্বিচারে গুলি চালানো যাবে,তোমাদের উপর লাঠি চালানো যাবে...কিন্তু তোমরা যদি রুখে দাঁড়াও তাহলে তোমরা জংগী,তোমরা দেশে নৈ্রাজ্য সৃষ্টি করছ...ভালোই বিচার আপনাদের! একটি আদর্শবাদী দলের লক্ষ লক্ষ কর্মীর উপর জেল-যুলুম আর গণহত্যা চাপিয়ে দিয়ে,তাদের নেতাদের হাজার হাজার মিথ্যা মামলায় ফাঁসিতে ঝুলিয়ে ওই দল নিষিদ্ধ করার পায়তারা করা যায়,বাংলার যমীনে ইকামাতে দ্বীনের আন্দোলনকে চিরতরে স্তদ্ধ করে দেয়ার ষড়যন্ত্র করা যায়,তাদের নিষিদ্ধ করে এই জমীনে ধর্মনিরপেক্ষ আইন বাস্তবায়নের এজেন্ডা fulfill করা যায় ...কিন্তু খবরদার তোমরা কেঊ প্রতিবাদ করতে পারবেনা,এই জুলুমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারবেনা...তাহলেই তোমরা ইসলামের নাম ভাঁঙ্গিয়ে ইসলাম অবমাননা করছ! হায়রে মুসলমান...!!
জানি কেউ কেউ একধাপ এগিয়ে বলবেন...তোমাদের এই অবস্থার জন্যে তোমরাই দায়ী।স্বীকার করে নিচ্ছি আমাদের এই অবস্থার জন্যে নিঃসন্দেহে আমরাই দায়ী...কারন আমরা বলেছি আল্লাহ ছাড়া কারো আইন মানিনা,আল্লাহ ছাড়া মানুষের উপর প্রভুত্ব করার কোন অধিকার কারো নেই,মানুষের উপর মানুষের সমস্ত প্রভুত্বকে খতম করে আল্লাহর জমীনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠাই আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য...তিনি এক,অদ্বীতিয়।তাঁর উলুহিয়াত,তাঁর রবুবিয়াত,তাঁর সার্বভৌমত্বে কোনো শরীক নেই,থাকতে পারেনা।
নিসন্দেহে আমাদের এই অবস্থার জন্যে আমরাই দায়ী...we deserve it. মানব ইতিহাসের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত এমনটা কখনোই ঘটেনি যে এই দাবী নিয়ে কেউ বাতিলের সাথে সংগ্রামে অবর্তীন হয়েছে আর খোদাদ্রোহী শক্তি তাদের সমস্ত প্রচেষ্টা দিয়ে তাদের ওই দাবীকে স্তদ্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করেনি।
বিষয়: বিবিধ
১১১২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন