মাওতার ত্রিরত্ন সমাধী

লিখেছেন লিখেছেন মোঃজুলফিকার আলী ১২ জুন, ২০১৩, ১০:০৩:৫৩ রাত

এই সেই মাওতার মরুভূমি যার মধ্যে ত্রিরত্ন সমাধী

যার গ্রিলগুলো এখন মেশক আম্বর ঘ্রাণ ধরে রাখে

এখনো পবিত্র বালুকাময় খুশবু ছড়ায় দিগ্বিদিক

এখনো যুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন গোটা মুসলিমকে কাঁদায়।

রোমান সম্রাট হেরাক্লিয়ারস বজরায় লক্ষাধিক সৈন্য পাঠালেন

কেল্লা স্থাপন নিমিত্তে মদীনার ইসলামকে সমুলে ধ্বংসের পরিকল্পনা ছিল

রাসুল (সঃ) তা কর্ণপাত না তুলে রোম সম্রাট নিকট

ইসলামের শান্তি সৌম্য ভ্রাতৃত্ব স্থাপনে দূত কর্তৃক পত্র পাঠিয়েছেন

উপরন্তু রোম সম্রাট পত্রবাহক দূতকে হত্যা করল।

আর্ন্তজাতিক রীতিনীতির বিরুদ্ধ ছিল তা

তাই মদীনাবাসির বুকে অগ্নিজ্বালা বেড়ে গেল....

রাসুল (সঃ) তিন হাজার সৈনিকের জন্য তিন জন সেনাপতি নির্বাচিত করলেন

যায়েদ বিন হারেস, জাফর ইবনে আবু তালেব ও আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা

তিন জনকে পরিবার থেকে বিদায় নেওয়ার জন্যে পাঠালেন

যা ছিল শাহদাত বরণে ইঙ্গিতবহ রাসুল (সঃ) প্রতি প্রদত্ত মোজেজা।

তিন হাজার সৈনিক যখন এক মাসের পথ অতিক্রম করে মাওতায়

শিবির গড়লেন এবং রাত্রি যাপনে মনস্থির করলেন...

আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা হাঁকলেন...

‘এটাই আমার চির নিদ্রার পছন্দসই নিবাস’।

রাত্রি প্রহরের পূর্বেই রোমান লক্ষাধিক সৈন্য

যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে মাওতার মুসলিম শিবির আক্রমনে যাত্রা

প্রভাতের লাল আভা মুছে যেতে না যেতে রোমান সৈনিক ঘিরে ফেলল

মুসলিম সৈনিক তিনটি কমান্ডে ভাগে বিভক্ত হলো

আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা বললেন- ‘হে সৈনিকগণ

যেই শাহাদাতের শরাব পাণ করার আশায় নবীজীর কাছে

ওয়াদাবদ্ধ হয়েই এত দূরে এসেছি তা যেন আমরা কেহই অপছন্দ না করি।’

যুদ্ধ শুরু। ইসলামের পাতাকা হাতে জায়েদ বিন হারেস নের্তৃত্ব দিচ্ছে

কিছুক্ষণ যুদ্ধ করে তিনি শাহাদাতের শরাব পাণ করেছেন

পতাকা তুললেন জাফর ইবনে আবি তালেব(রাসুল (সঃ) চাচাতো ভাই)

অল্পক্ষণে তার ডান হাত ঝরে পড়ল তিনি বাম হাত দিয়ে

রসুলের পতাকা ধরেই যুদ্ধ চালালেন ওরা বাম হাত কেটে দিল

পতাকাটি তখন দাঁতের সাহায্যে কামড়ে উচু করে ধরলেন

তার দেহ থেকে মাথাও বিচ্ছিন্ন হলো....

তখন আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহ থমকে গেল

সাহস সঞ্চারে দৃঢ়কল্পে কবিতা আবৃত্তি করলেন-

‘হে নফস, তুমি তো শহীদ হবে

আর এটাই মৃত্যূর পায়রা যার আশা তুমিই করেছ

এবং তুমি যে আশা করছ তা তুমি পেয়েছ

হে বন্ধু সকল তোমরা যদি ওই দু’জনের ন্যায় কর

তোমরা হেদায়াদ পেয়েছো’

তিনিও পতাকা তুলে যুদ্ধ শুরু করে শহীদ হলেন।

সাহাবীগণ এক এক করে শহীদ হচ্ছেন আর

রাসুল (সঃ) ভেজা চোখে মদীনাবাসীকে শাহাদাতের খরব দিচ্ছেন

এটাই আল্লাহ প্রদত্ত মোজেজা ছিল...রাসুলের প্রতি আল্লাহর প্রেম।

অতঃপর যিনি পতাকা ধরলেন মহাবীর খালেদ বিন ওয়ালিদ

রাসুল (সঃ) ঘোষণা দিলেন তিনি ‘আল্লাহর তরবারি’

তিনি সেনা বাহিনীকে তিনটি দলে বিভক্তে এবং তিন দিক থেকে আক্রমন

অবশেষে নয়টি তলোয়ার ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হলো

দশমটি দিয়েই করলেন যুদ্ধজয়।

রাসুল আরও খুশিতে অশ্রুসজল হয়েই বললেন-

‘জাফর ইবনে তৈয়ার ঝরে পরা দুটি হস্তদ্বয়ের জন্যই

আল্লাহ তায়ালা জান্নাতে দুইটি সবুজ পাখা দিয়েছেন

যা দিয়ে বেহেস্তে আন্ন্দ করেই

যেখানে ইচ্ছে সেখানে তিনি উড়ে বেড়াচ্ছেন।’

মানুষের শান্তি কল্যাণের জন্য যারা শাহাদাতের মতোন

চিরবিদায়কে মেনে নিলেন....ক্ষত বিক্ষত দেহে শহীদ হলেন

তারা আজও মাওতার শুয়ে....যাদের স্মৃতি শোভা পচ্ছে

‘বিবেকের কাছে প্রশ্ন... আমরা তাদেরই রক্তের বদলায়

ইসলামের মূল্যায়ন ও সম্মান কতটাই বা করতে পেরেছি’(?)

হে মহান! ক্ষমা কর। আমাকে সুস্থানে রেখো তুমি

ঐ শাহাদাতের সুধা পাণকারি মোমিনদের সাথে।

বিষয়: বিবিধ

১৬৩৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File