ফেরাউনের জবান বন্দি

লিখেছেন লিখেছেন মোঃজুলফিকার আলী ০৮ জুন, ২০১৩, ০৭:৩০:৩০ সন্ধ্যা

আমি ফেরাউন (রামসিস) সামান্য জনতা

ইয়েমেন থেকে ভাগ্য অন্যেষণে যাত্রা মিশরের পথ

সময় কতটা প্রসন্ন ছিল যা ভাষায় বিরল

অল্প ব্যবধানে হয়ে উঠি ধনাঢ্য বণিক....

দেশের কল্যাণে আত্মনিয়োগে নিযুক্ত ছিল মন প্রাণ

জনসাধারনের ব্যথায় ব্যথিত ছিলাম

সমাজ কল্যাণে নিয়োজিত ছিল বিশাল পরিষদ

সমগ্র মিশর সেবাদান থেকে বঞ্চিত থাকেনি।

জনগণ আমাকে চিনেছে....আমিও চিনেছি

সবার হৃদয়ে স্থান করেই নিয়েছি... পেয়েছি সুনাম

উন্নয়নকারীর নামিদামী কল্যাণকামী ফেরাউন।

মিশরের দিকে দিকে আওয়াজ উঠল

একসময় রাজ্যাভিষেক যোগ্য হয়ে নৃপতি হলাম।

যা চেয়েছি তা পেয়েছি হারাইনি তো কোনকিছু

পেতে পেতে ভুলে গেছি পূর্ব ইতিহাস

অহংকারের বোঁঝা বইতে থাকি

নিজেকে ভাবতে থাকি প্রভূর আসীনে

এখন যে আর সীমানার গন্ডিতে বসে থাকা যায় না।

মানুষের ধর্মকর্ম ভুলিয়েছি ঈমানকে করেছি নষ্ট

প্রতিভূ প্রভূর মূর্তি ঘরে ঘরে সাজালাম

গানা-বাজনা, নগ্ন নৃত্য, অশ্লিলতা, বেহায়াপনা, হত্যা

সুদ ঘুষ মদ-জুয়া, গাঁজা, আফিম, নারীপুরুষ অবাদ মেলামেশা জেনা

সবার জন্যই উন্মুক্ত করে দিলাম ওদের।

যারা আমাকে মেনেছে তাদের দিলাম প্রশান্তি...আনন্দ

যারা মানেনি তাদের দিলাম যন্ত্রনাদায়ক মৃত্যু কঠিন আযাব।

দুটি ভাগেই বিভক্ত হলো দেশ। আমার দাম্ভিক পক্ষ অন্য পক্ষ মুসলমান

আমি কঠোর হস্তেই নিয়ন্ত্রণ করেছি দেশটিকে

কঠিন বেষ্ঠনে রেখেছিল উজির নাজির সেনাপতি হাম্মান

আমি কৃতজ্ঞ ছিলাম...ওরা তেল দিয়ে রেখেছিল আমাকেই

আমিও বিরুদ্ধবাদীদের গরম তেলে জ্বালিয়েছি।

যেদিন ত্রিস্বপ্ন বাঁধ সাদলো ক্রিয়াকর্মে রাশিফলে

মৃত্যুর খড়গ হাতে উদ্যত জাতক সিংহ আগমন

হাজার হাজার গণক নিয়োজিত হল... তাদের ভাষ্য ফলনে

নারীদের নির্বিচারে হত্যা করে বিজীত ছিলাম।

যেদিন আছিয়া (নিফারতারি) প্রিয়তমার আশ্রিত পোষ্য মূসা

যিনি দুগ্ধ মাতা হিসেবে সত্যিকারের মাতৃ দুধ পাণ করেছিল।

আমিত্ব প্রভূর প্রতি যে চেলেঞ্চ ছুঁরেছিল

সত্যি পূভুর লাঠির কাছে হার মেনেছিল আমার গণক যাদুকর

তবু আমি দোদর্ন্ডপে মেতেছিলাম প্রভূত্ব টিকিয়ে রেখেছিলাম।

রাতের আঁধারে লোকান্তরে কুপের জলে দাঁড়িয়ে

আমিও কি সারারাত সত্যি প্রভূর নিকট প্রাথর্না করিনি.....

‘পৃথিবীর জন্য একটু ক্ষমতা সামর্থ শক্তি দাও না প্রভূ

আমি যেন বা ভূজদন্ড প্রতাপ চালাতে পারি’।

যা চেয়েছি তা পেয়েছি....আবু সিম্বল তারই স্মৃতি

রাজপ্রাসাদ, সূরিখানা, বালাখানা, প্রমদ কানন পুত্তলিক মূর্তিগুলো

আমার প্রতাপে মিশরের পাহাড় সাগর কেঁপে কেঁপে উঠতো

আমার নৃশংসতায় আকাশ পাতাল কেঁদে উঠতো

গণহত্যা দিন রাতে মুসলমান শুন্য করেছিলাম তা নয়

মুসাকে তাঁড়াতে পিছুপিছু ভুমধ্যসাগরে গিয়েছিলাম কিন্তু

হায়! আমাকেই সেই সাগরে ডুবিয়ে মরতে হলো....

দেখ পৃথিবীর অধিবাসী!দেখ মহাকাশ! আমাকে আমার স্বজাতিরা

কিংবেলিতে মমি করে রেখেছিল সেখানেও থাকতে পারিনি

নিয়েছে পিরামিডে তাতেও নয় বতর্মানে যাদুঘরের কাঁচের কফিনে স্থান

জড়াজীর্ণ হাড্ডিসার দেহ গুটানো হাত শুটকি শরীরে তোমাদের কাছে

যে জঘন্য মানুষটি ছিলাম

মহাপাপী ঘৃণিত নৃশংসতার প্রতীক হিসেবে ঠাঁয়

তোমরা যে আমাকে দেখ... দেখে দেখে শিক্ষা নাও

সত্যিকারে প্রভূ কে (?) যিনি সৃষ্টি করেছেন সব কিছু তিনি....

মানুষের কখনও দম্ভ থাকা ঠিক নয়...

যা বরং নিজের ধ্বংসকে সাদরেই আমন্ত্রণ করা।

বিষয়: সাহিত্য

১৩৩৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File