নির্বাচন, ভোট, ফলাফল এবং জামায়াতে ইসলাম
লিখেছেন লিখেছেন আবু নিশাত ০১ আগস্ট, ২০১৮, ০২:৩০:১৬ রাত
সিলেটে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন শেষ হলো, যথারীতি জামায়াত-শিবিরে নেমে আসল হতাশা । প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মধ্যে বিরাট পার্থক্য । নেতারা বুঝালেন, এই ত আর সামান্য, কর্মীরা খাটল গায়ের ঘাম ঝরিয়ে, কিন্তু ফলাফল সেই ১৯৭০ সালের মত । অনেকে ভাববেন ২০১৮ সালে কেন ১৯৭০ সালের কথা বলছি । আসছি সে কথায় । লেখাটি এজন্য লিখলাম, জামায়াত নেতারা যাতে একটু চিন্তা করে দেখতে পারেন, ভোটের ময়দানে, তাদের অবস্থানটা কোথায় ? সেই সাথে নতুন প্রজন্ম, তারা জানবে ভোটের ইতিহাস ।
১৯৭০ সালের নির্বাচন । পূর্ব পাকিস্তানে ভোট কাস্ট হয়েছিল, ৫৮% । আওয়ামিলীগ পেয়েছিল কাস্ট ভোটের ৭৪.৯% ভোট । আর জামায়াত পেয়েছিল ৬ % ভোট । জামায়াত পান্জাব প্রদেশে ৪.৭%, সিন্ধু প্রদেশে ১০.৩%, সীমান্ত প্রদেশে ৭.২% বেলুচিস্তান প্রদেশে ১.১% ভোট পেয়েছিল ।
১৬ বছর পর ১৯৮৬ সালের নির্বাচন । জামায়াত ভোট পেয়েছিল ১৩ লক্ষ ১৪ হাজার ৫৭টি, যা কাস্টিং ভোট ২ কোটি ৮৯ লক্ষ ৩ হাজার ৮ শত ৫৯ ভোটের ৪.৫৪% । অবশ্য এই নির্বাচনে বি.এন.পি অংশগ্রহণ করেনি । আবার জামায়াতও ৩০০ আসনে তাদের প্রার্থী দেয়নি । যদি দিত, তবে জামায়াতের আরও কিছু ভোট যোগ হত এবং তা প্রায় ৬% এ চলে যেত, অর্থাৎ ফলাফল হত ১৯৭০ সাল এর মত ।
১৯৯১ সালের নির্বাচন । বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভাল নির্বাচন । এই নির্বাচনে ভোট কাস্ট হয়েছিল ৩ কোটি ৪১ লক্ষ ৩ হাজার ৭ শত ৭৭ । জামায়াত পেয়েছিল ৪১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৬ শত ৬১ টি ভোট, যা মোট কাস্টিং ভোটের ১২.১৩% । তবে এই নির্বাচনে বি.এন.পি এর সাথে জামায়াতের অলিখিত চুক্তি হয়েছিল । সেই চুক্তি অনুযায়ী, জামায়াত বি.এন.পি এর জন্য ৭৮টি আসনে প্রার্থী দেয়নি । অন্যদিকে বি.এন.পি ৩০০ আসনে প্রার্থী দিলেও যে সব আসনে জামায়াত প্রার্থী ছিল, সেখানের সম্ভাবনাযুক্ত আসনে একটি অলিখিত ছাড় ছিল । ফলে জামায়াতের প্রাপ্ত ৪১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪ শত ৪১ টি ভোটের মধ্যে বি.এন.পি এর ভোটও আছে । আবার প্রায় ৭৮ টি আসনে সম্পূর্ণ ছাড় দেয়ার পরও অন্যান্য সম্ভাবনাযুক্ত আসনে জামায়াত বি.এন.পির জন্য শক্ত ভাবে নির্বাচন করেনি । যেমন ১৯৯১ সালে কক্সবাজার ৪ আসনে জামায়াত প্রার্থী শাহজালাল চেীধূরী বি.এন.পিকে ছাড় দেন বলেই তার পক্ষে মাত্র ৩৯৫টি ভোট কাস্ট হয়েছিল, সেখানে ১৯৯৬ সালে ছাড় না দেয়ার কারণে শাহজালাল চৌধূরী পেয়েছিলেন ১৭,৬০৭টি ভোট । ফলে অলিখিতভাবে ঐ সমস্ত আসনে জামায়াতের ভোট বি.এন.পি এর সাথে যোগ হয়েছে, যা জামায়াতের ভোটের সাথে যোগ হয়নি । এ সমস্ত বিষয় বিবেচনা করে বলা যায়, ১৯৯১ সালে জামায়াতের প্রকৃত ভোট পেতে হলে ৪১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৬ শত ৬১ টি ভোট হতে বি.এন.পি এর ভোট বাদ দিতে হবে এবং যোগ করতে হবে, যে আসনগুলো জামায়াত প্রার্থী দেয়নি, সে সব আসনে জামায়াতের ভোটগুলো । এজন্য ১৯৯১ সালের ভোট এর হিসাব হতে জামায়াতের ভোট ১২.১৩%, এটি বলা যাবে না । এজন্য আমাদের দেখতে হবে ১৯৯৬ সাল এর নির্বাচন ।
১৯৯৬ সাল এর নির্বাচন । জামায়াত ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেয় । মোট ভোট কাস্ট হয়েছিল ৪ কোটি ২৪ লক্ষ ১৮ হাজার ২ শত ৭৪ টি । জামায়াত পেয়েছিল ৩৬ লক্ষ ৫৩ হাজার ১৩টি, যা কাস্টিং ভোটের ৮.৬১% । ১৯৯১ সালের সাথে তুলনা করে দেখা যায় যে, জামায়াতের ভোট প্রায় ৫ লক্ষ কমে গিয়েছে । এই কমে যাওয়া ৫ লক্ষ ভোট স্পষ্টই বলে দেয় যে, বি.এন.পি এর সাথে অলিখিত চুক্তি করায় জামায়াতের ভোট বেড়েছিল । কারণ ১৯৯১ সালে যে আসনে জামায়াত প্রার্থী দেয় নাই, সে আসনে ১৯৯৬ সালে প্রার্থী দেয়ায় যে ভোট যোগ হয়েছিল, আবার বি.এন.পি না থাকায় ভোট কমে যাওয়ার পরিমাণ তুলনামূলক বেশি হওয়ায় জামায়াতের নীট ৫ লক্ষ ভোট কমে যায় । আরও একটি বিষয় বিবেচনায় আনতে হবে যে, ১৯৯১ সালের তুলনায় ১৯৯৬ সালে প্রায় ৮৩ লক্ষ ভোট বেশি কাস্ট হয়েছিল, কিন্তু এরপরও জামায়াতের ভোট কমে গিয়েছিল । ১৯৯১ সালে সাথে তুলনা করলে দেখা যায় যে, ১৯৯৬ সালে জামায়াতের ভোট (১২.১৩% - ৮.৬১%) = ৩.৫২% কমে গিয়েছিল অন্যদিকে বি.এন.পি এর ভোট (৩৩.৬% - ৩০.৮%) = ২.৮% বৃদ্ধি পেয়েছিল । এখানে অনেকের মনে প্রশ্ন দেখা দিতে পারে ১৯৯৬ সালে বি.এন.পি এর ভোট ২.৮% বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও বি.এন.পি আসন কম পেল কেন ? এর উত্তর হলো, ১৯৯১ সালে জামায়াতের জন্য কিছু আসনে ভোট অলিখিত ভাবে ছেড়ে দেয়ায় বি.এন.পির ভোটের গড় শতকরা হার ছিল ৩০.৮%, কিন্তু যেখানে বি.এন.পি প্রার্থী দিয়েছে, সেখানে জামায়াত প্রার্থী না দেয়ায় অথবা প্রার্থী দেয়ার পরও ছাড় দেয়ায় ঔ সমস্ত আসনে জামায়াতের ভোট যোগ হয়ে বি.এন.পি এর শতকরা ভোট ১৯৯৬ সালের ৩৩.৬% হতে বেশি ছিল বলেই ১৯৯১ সালে বি.এন.পি বেশি আসন পেয়েছিল এবং ১৯৯৬ সালে কম পেয়েছিল ।
২০০১ সালের নির্বাচন । এই নির্বাচনে বি.এন.পি ও জামায়াত সরাসরি জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করে । মোট ভোট কাস্ট হয়েছিল, ৫ কোটি ৬১ লক্ষ ৬৯ হাজার ২ শত ২৩টি, যার মধ্যে জামায়াত পেয়েছিল ২৩ লক্ষ ৮৫ হাজার ৩ শত ৬১টি ভোট, যা কাস্টিং ভোটের ৪.২৫%। এখানে জামায়াতের ভোট ৪.২৫% কে জামায়াতের প্রকৃত ভোট বলা যাবে না । কারণ জামায়াত ঐ সময় জোটের কারণে খুবই কম আসনে প্রার্থী দেয়, কিন্তু শতকরা বের করতে ৩০০ আসনের মোট কাস্টিং ভোট দিয়ে ভাগ করতে হয় বলে, জামায়াতের ভোটের শতকরা হিসাব কম এসেছিল ।
২০০৮ সালের নির্বাচন । এই নির্বাচনেও বি.এন.পি ও জামায়াত সরাসরি জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করে । মোট ভোট কাস্ট হয়েছিল, ৬ কোটি ৯১ লক্ষ ৭২ হাজার ৬ শত ৪৯টি, যার মধ্যে জামায়াত পেয়েছিল ৩১ লক্ষ ৮৬ হাজার ৩ শত ৮৪ টি ভোট, যা কাস্টিং ভোটের ৪.৬০%।
২০০১ ও ২০০৮ সালে তুলানা করে দেখা যায় যে, ২০০৮ সালে জামায়াতের শতকরা ভোট (৪.৬০- ৪.২৫%) = .৩৫% বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও জামায়াতসহ বি.এন.পি এর ভরাডুবি হলো কেন ? এর উত্তর হলো ২০০১ সালে বি.এন.পি নিজ ভোটের সাথে জোটের ভোট যোগ করে যেখানে ৫১.৪০% ভোট পেয়েছিল, সেখানে ২০০৮ সালে বি.এন.পি জোটের ভোটসহ পেয়েছিল ৩৩.৩% । সম্ভবত দুর্নীতির অভিযোগ মিডিয়াতে একপক্ষীয়ভাবে প্রচারিত হওয়ায় বি.এন.পি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ।
উপরোক্ত বিশ্লেষণ হতে, স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন আসে, জামায়াতের প্রকৃত ভোট কত ? এক্ষত্রে ১৯৯১, ২০০১ এবং ২০০৮ সালের নির্বাচনের ফলাফলকে বিবেচনায় আনা যায় না । কারণ এই সমস্ত নির্বাচনের মাধ্যমে জামায়াতের ভোটের সাথে বি.এন.পি এর ভোট যেমন যুক্ত হয়েছে, তেমনি যে সমস্ত আসনে জামায়াত প্রার্থী দেয়নি, সেই সমস্ত আসনের ভোট যুক্ত হয়নি । এজন্য জামায়াতের ভোট এর জন্য আমাদেরকে ১৯৯৬ সালের হিসাবটা মেনে নিতে হবে,, অর্থাৎ ৮.৫২% । সময় সময়ে এটি একটু বাড়তে পারে, আবার কমতেও পারে । আবার বাংলাদেশের সব স্থানেও জামায়াতের ভোট ৮.৫২% নয়, কোথাও এর চেয়ে বেশি হতে পারে, আবার কোথাও এর চেয়ে কম হতে পারে । কিন্তু দুর্ভাগ্য যে, আবেগী জামায়াত নেতারা ভোটের এই হিসাবটা নিজেদের মাথার মধ্যে রাখেন না। রসায়নের শাস্ত্রের ভাষায় বলা য়ায়, যদি হিসাবটা রাখতেন,তবে এতটুকু বুঝতে পারতেন, উনারা এককভাবে রাসায়নিক বিক্রিয়া সংঘটন করতে পারবেন না, তবে বিক্রিয়াকে সহায়তা করতে পারবেন । আর এই বুঝটা থাকলে চাওয়া-পাওয়ার হিসাবটা মিলে যেত ।
ক্যাডার ভিত্তিক সংগঠন জামায়াতের নেতাদের ওঠা-বসা নিজ দলের লোকদের সাথেই বেশি হয় । সাধারণ জনগণের মনের খবর ওনারা খুবই কম জানেন । দলে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হলে কর্মীরা কোন কথা না বলে আনুগত্য করে, তেমনি উনারা মনে করেন, ভোটের কথা জনগণকে বললে জনগণ তাদের কর্মীদের মত কোন কথা না বলেই তাদের ভোট জামায়াতের বাক্সে দিয়ে দেবে । এ সমস্ত নেতারা ভোটের আগে থাকেন বিজয়ের নেশায়, আর ভোটের পর বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়ে কর্মীদের আনুগত্যকে পূর্বের স্তরে রাখার চেষ্টা করেন । এরপর কোন ধরনের তথ্য প্রমাণ ছাড়া ভোট কম পাওয়ার মনগড়া কাহিনী রচনা করেন, আর কর্মীরা সেই কাহিনী শুনে শুনে একসময় ঘুমিয়া যায় । কিন্তু ঘুম পাড়ানো নেতারা একবারও ভাবেন না,তাদের আসল ভোট কত ? তারা উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান পদ জিতে মনে করেন যে, লোকজন জামায়াতকে ভোট দেয়া শুরু করেছে, আর যায় কোথায়, সামনে আমরা সরকার গঠন করব ! কিন্তু উনারা একবারও কারণ অনুসন্ধান করার চেষ্টা করেন না, উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান পাওয়ার পিছনে কোন কোন উপাদানগুলো বেশি কাজ করেছে ? উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামিলীগ, বি.এন.পি এর একাধিক প্রার্থী থাকে, সেই সুযোগটা জামায়াত প্রার্থীরা কাজে লাগায় । আবার জামায়াত প্রার্থীর সৎ ইমেজে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যাক্তিগত ও পারিবারিক ইমেজ, এলাকাভিত্তিক ভোট ইত্যাদি জয়ের পিছনে কাজ করে । যেমন সিটি নির্বাচনে জামায়াতের একজন কাউন্সিলার ওয়ার্ডে যে ভোট পায়, জামায়াতের মেয়র প্রার্থীরা ঐ ওয়ার্ডে সেই ভোট পান না।
এবার আসি সিলেট সিটি নির্বাচনে । উচ্চবিলাসী জামায়াত নেতারা কর্মীদের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন ৬০ হাজার ভোট পাওয়ার, যেখানে জামায়াতের ভোট প্রায় ৮.৫২% এবং সিলেট সিটিতে তা আরও কম হবে । জামায়াত নেতারা কোন ক্লিনিকে বা হসপিটালে বা বিপনী বিতানের সামনে দাড়িয়ে সিলেট সিটিতে লম্বা মিছিল দেখে মনে করেন, আহা আমাদের কত ভোট ! আত্মতৃপ্তি নিয়ে কেউ চলে গেলেন দৈনন্দিন ক্লিনিক ব্যবসায়, কেউ হসপিটাল আর কেউ বিপনী বিতানে । কিন্তু এই নেতারা একবারও হিসাব করলেন না, এই লম্বা মিছিলের কতজন সিলেট সিটির ভোটার ? আর কতজন সিলেট সিটির বাইরে এমনকি অন্য উপজেলার ভোটার, কিন্তু বাসস্থান সিলেট শহরে ।
জনাব এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। অত্যন্ত ভাল মনের ও ক্লিন চরিত্রের একজন মানুষ । কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক যে, ১ম নির্বাচনেই জামায়াত উনার জামানত বাজেয়াপ্ত করার ব্যবস্থা করল । সিলেটের মানুষ দীর্ঘদিন উন্নয়ন দেখেনি । সেখানে আরিফ সাহেব মেয়র হয়ে ৩ বছর জেলে এবং ২ বছর বাইরে থেকে যে উন্নতি করেছেন,তা ছিল সিলেটের মানুষের মুখে মুখে । সিলেটের জামায়াত নেতারা কি একবার চিন্তা করলেন না, আমাদের ভোট যেখানে ৮%, আর বাংলাদেশে এন্ট্রি নৌকা ভোট ধানে পড়ে, সেখানে আরিফের মত হেভিওয়েট প্রার্থীর সামনে জনাব জুবায়েরকে না দাড় করানোটাই ভাল ?
নিঃসন্দেহে জামায়াতে ইসলামী ভাল মানুষের সংগঠন । তাদের আদর্শ ভাল । কিন্তু ভাল লোকদের দল হওয়ার পরও ১৯৭০ সালে ৬%, আর এখনও ৬% বা ৮% বা ১০% এর মধ্যে ঘূর্ণায়মান, কারণটা কী ? আমি কিছুদিন আগে হয়ে যাওয়া পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল দেখলাম । সেখানে জামায়াত, জমিয়তে উলামা ও আরও কিছু ইসলামী দল একসাথে নির্বাচন করে ভোট পেয়েছে ২৫ লক্ষ ৬৮ হাজার ৪২১, যেখানে ভোট কাস্ট হয়েছে ৫ কোটি ২৯ লক্ষ ৮২ হাজার ১ শত একটি ভোট । ইসলামী দলগুলো পেয়েছে মোট কাস্টিং ভোটের ৪.৮৫% । তাদের অবস্থাও, আমাদের মত । স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন আসে মূলধারার ইসলামী দলগুলো কেন ভোট পায় না ? এক্ষেত্রে আমার ধারণা হলো, আমরা নাচ-গান দেখা পছন্দ করি, কিন্তু নিজ মেয়েকে নাচ-গান বা সিনেমায় দিতে রাজী না । তেমনি আমরা যারা মুসলিম, তারা ইসলামকে ভাল পাই, কিন্তু সিনেমা, নাচ-গান, জুয়া খেলা সবই পছন্দ করি, কিন্তু ধর্মহীনদের পছন্দ করি না। তাই মুসলমানরা যতদিন প্রকৃত মুসলিম হতে পারবে না, ততদিন জামায়াত বা অন্য কোন ইসলামী দল ভোটের রাজনীতিতে তেমন কোন ভোট পাবে না, পাবে কখনও ৮%, কখনও ১০ঁ%, সময় ভাল না হলে ৫% । কেউ যদি বলেন,তুরস্কে এরদোগান কিভাবে পারল ? এর উত্তর হলো, এরদোগানের দল মূলধারার ইসলামী দল নয় । এরদোগানের দল, ইমরান খানের দল এবং পাকিস্তান মুসলিম লীগ এরা একই ধরনের । জামায়াত-শিবিরের ভাইয়েরা যদি নাচ-গান পছন্দ করা শুরু করে, সিনেমা দেখা শুর করে দেয়, পর্দা যদি নিয়মিত লংঘন করে,তবে হয়ত এক সময় তুরস্কের মত জামায়াত ক্ষমতায় আসতে পারবে । তবে এর চেয়ে ৮.৫২% ভোট ভাল, যা নিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া যাবে না, কিন্তু জান্নাতের পথে যাওয়া যাবে ।
বিষয়: বিবিধ
১৮৩১ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তবে "সিলেটের জামায়াত নেতারা কি একবার চিন্তা করলেন না, আমাদের ভোট যেখানে ৮%, আর বাংলাদেশে এন্ট্রি নৌকা ভোট ধানে পড়ে, সেখানে আরিফের মত হেভিওয়েট প্রার্থীর সামনে জনাব জুবায়েরকে না দাড় করানোটাই ভাল ?"- এই যায়গায় একমত হতে পারলাম না এজন্য যে, জামায়াত সব যায়গাতে ছাড় দিয়ে সিলেট বিএনপি'র নিকট প্রত্যাশা করেছিল। বিএনপির কি উচিৎ ছিল না এখানে জামায়াতকে সহযোগীতা করে জিতিয়ে আনা? এটাতো সিম্পল একটি সৌজন্যবোধেরও দাবি। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন