মন্তব্য প্রতিবেদন : প্রকৃত গণজাগরণ এরকমই--মাহমুদুর রহমান
লিখেছেন লিখেছেন আজাদ আব্দুল্লাহ ১০ এপ্রিল, ২০১৩, ১১:২৮:৪০ সকাল
এপ্রিলের ৫ তারিখ থেকে সরকার, ক্ষমতাসীন মহাজোট ও তাদের নানা বর্ণের ছায়াসংগঠন মিলে রাজধানী ঢাকাকে দেশের অন্যান্য অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল। শাহবাগি, ঘাদানিক, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম এবং সরকারপন্থী বামরা শুক্রবার, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সন্ধ্যা থেকে ২৪ ঘণ্টার নজিরবিহীন হরতাল, অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করলেও সরকারি নীতিনির্ধারকরা তার কার্যকারিতা নিয়ে সঙ্গত কারণেই নিশ্চিত হতে পারেননি। অতএব, পুরো প্রশাসনকে নির্লজ্জভাবে মাঠে নামানো হয়েছিল হেফাজতে ইসলামের ঢাকাগামী কাফেলা ঠেকাতে।
আরিচা ও মাওয়ায় ফেরি পারাপার বন্ধ রাখা হলো, ডিসি-এসপি-ইউএনওরা বাস মালিকদের রুট পারমিট বাতিলের ভয় দেখিয়ে বাস চলাচলে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা জারি করলেন, দক্ষিণের সব জেলার লঞ্চ আটকে দেয়া হলো, সর্বশেষ নিরাপত্তাহীনতার বায়বীয় অজুহাতে নজিরবিহীনভাবে আন্তঃজেলা ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হলো। উদ্দেশ্য একটাই, ঢাকায় হেফাজতের কাফেলা যেন কোনো অবস্থাতেই পৌঁছাতে না পারে। মহাসমাবেশের অনুমতি দিয়েও লংমার্চে নানা পন্থায় বাধা সৃষ্টির মাধ্যমে ক্ষমতাসীন মহল তাদের মোনাফেকি চরিত্রের প্রমাণ দিতে কোনোরকম দ্বিধাবোধ করেনি।
গত দশ বছরে দুই ক্ষমতাসীন সরকারের এ ধরনের হঠকারি কাজ-কারবারের আরও দুটি উদাহরণ প্রসঙ্গক্রমে এ মুহূর্তে মনে পড়ছে। ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের তত্কালীন সাধারণ সম্পাদকের কৌতুককর ট্রাম্প কার্ডের হুমকিতে বিচলিত হয়ে চারদলীয় জোট সরকার বাইরের জেলাগুলো থেকে লোকজনের ঢাকা আগমন বাধাগ্রস্ত করতে চেয়েছিল। তবে সেবার ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করার চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঢাকায় পা রাখলেই গণগ্রেফতারের অস্ত্রটা অধিক ব্যবহার করেছিল। ট্রাম্প কার্ডটাই ভুয়া হওয়ার কারণে রাজধানীতে অস্বাভাবিক হারে যাত্রী আগমন না ঘটলেও সরকারের তুঘলকি আচরণে বেশকিছু নিরপরাধ মানুষকে খামোকা হয়রানির শিকার হতে হয়েছিল। দ্বিতীয় উদাহরণটি বর্তমান সরকারের আমলেই। ২০১২ সালের ১২ মার্চ বিএনপির ঢাকায় মহাসমাবেশকে ঘিরেও শেখ হাসিনার প্রশাসন একইভাবে ঢাকা অবরোধ করেছিল। তবে সেবার সরকার অন্তত হরতাল ডাকা পর্যন্ত যায়নি। সরকারের ইন্ধনে এবার ছাত্রলীগ, যুবলীগের ক্যাডারদের জনবল ও অস্ত্রের ভরসায় ভারতের চিহ্নিত দালাল ব্যক্তিবর্গ হেফাজতে ইসলামের লংমার্চ প্রতিহত করা এবং মঞ্চ দখলের ঘোষণা দেয়ার ধৃষ্টতাও দেখিয়েছে। কিন্তু উলঙ্গ সরকারের লাজলজ্জাহীন কাজকর্মের ফল হয়েছে উল্টো।
বাধার পাহাড় ডিঙিয়ে এপ্রিলের ৬ তারিখে স্মরণকালের সর্ববৃহত্ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হতে দেখে ঢাকাবাসী আবেগ ও বিস্ময়ে যথাক্রমে আপ্লুত ও বিমূঢ় হয়েছে। সকাল থেকেই বঙ্গোপসাগরের অন্তহীন ঢেউয়ের মতো তৌহিদি জনতার মিছিলের পর মিছিল আছড়ে পড়েছে রাজধানীর সমতটে। অযুত কণ্ঠের আল্লাহু আকবর ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়েছে এই বিশাল নগরী। অভাবনীয় ইসলামি জাগরণদৃষ্টে আমরা, বিশ্বাসীরা উদ্বেলিত হয়েছি। দীর্ঘকালের ফেলে রাখা রুক্ষ, শুষ্ক ঈমানি জমিতে বর্ষার অবিরাম ধারার মতো আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশের ৪২ বছরের ইতিহাসে কেবল দু’টি জনসমাবেশের সঙ্গে হেফাজতের এই লংমার্চের তুলনা করা চলে। প্রথমটিতে আমি নিজেই উপস্থিত ছিলাম। শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে ফিরে এসেছিলেন। প্রিয় নেতাকে অভ্যর্থনা জানাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সেই মহাসমাবেশে সারা দেশ থেকে অসংখ্য মানুষ ভেঙে পড়েছিল চোখে পানি এবং অন্তরে গভীর ভালোবাসা নিয়ে। আঠারো বছর বয়সের আবেগ নিয়ে ঝাপসা চোখে আমিও সেখানে উপস্থিত হয়েছিলাম। বাংলাদেশের মানুষের চোখে সেদিনের শেখ মুজিব এবং স্বৈরাচারী একদলীয় বাকশালের জন্মদাতা যে এক ব্যক্তি ছিলেন না, সেটি ভিন্ন আলোচনা।
দ্বিতীয় ঘটনার সময় আমি চট্টগ্রামে কর্মরত থাকায় উপস্থিত থাকার সুযোগ পাইনি। ১৯৮১ সালের জুন মাসের ২ তারিখে বাংলাদেশের জনগণ আবারও দু’চোখ ভরা অশ্রু এবং হৃদয়ে হাহাকার নিয়ে মানিক মিঞা এভিনিউ সংলগ্ন এলাকা একাকার করে ফেলেছিল। ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত প্রেসিডেন্ট জিয়ার জানাজায় লোকসমাগমের নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছিল। বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো ক্ষমতাসীন নেতার এ ধরনের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা নিয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রত্যাবর্তনের সুযোগ আজ পর্যন্ত নসিবে ঘটেনি। ভবিষ্যতে কখনও ঘটবে কি-না সেটা একমাত্র আল্লাহই জানেন। তবে এখন পর্যন্ত সেরকম কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। কারণ জেনারেল জিয়া শহীদ হওয়ার পর কোনো নেতার পক্ষেই জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতে তার কাছাকাছি উচ্চতায় পৌঁছানোও সম্ভব হয়নি।
গত শনিবার ঢাকাবাসী তৃতীয়বারের জন্য জনমহাসমুদ্রের প্লাবন দেখেছে। প্রথম দু’বারের মতো এবারও আবেগ কাজ করেছে এই অসংখ্য মানুষকে একত্রিত করতে। আমাদের মহানবী (সা.) সম্পর্কে কতগুলো চরম ইসলামবিদ্বেষী, ইঁচড়ে পাকা শাহবাগি ব্লগারের কুত্সা রটনায় এদেশের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান যে বেদনা অনুভব করেছে, তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে ঢাকামুখী কাফেলার জোয়ার এবং মেহমানদারির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষমাণ ঢাকাবাসীর আবেগের মধ্য দিয়ে। তবে তিন জনসমুদ্রে এক আবেগ ছাড়া আর কোনো মিল নেই। অমিলের দিকগুলো খানিক দেখে নেয়া যাক। প্রথম দুই ঘটনায় অংশগ্রহণকারীদের কোনোরকম বাধা প্রদান করা হয়নি। এবার যত প্রকারে সম্ভব ঢাকামুখী জনস্রোতকে আটকানোর অপচেষ্টা করা হয়েছে।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়েছে, সরকার যেন কোনো আক্রমণকারী সেনাবাহিনীকে প্রতিহত করার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। কিন্তু প্রতিবাদী ধর্মপ্রাণ মানুষকে রুখে দেয়া সম্ভব হয়নি। কুমিল্লা, কালিয়াকৈর, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, টঙ্গী থেকে মিছিলের পর মিছিল পায়ে হেঁটে হাজির হয়েছে শাপলা চত্বরে। রসুলভক্ত মুসাফিরদের একটুখানি সেবা প্রদানের জন্য ঢাকার প্রতিটি প্রবেশপথের দু’ধারে সাধারণ নাগরিক আকুল হয়ে দাঁড়িয়ে থেকেছে। কারও হাতে পানির বোতল, সামর্থ্য অনুযায়ী কেউবা ফল-মুল, বিস্কুট, চিঁড়া, মুড়ি, রুটি নিয়ে হাজির হয়েছেন আল্লাহর পথে আগুয়ান মেহমানদের সেবায়। এদের মধ্যে অবশ্য কোনো শহুরে তথাকথিত এলিটকে দেখা যায়নি।
বিশাল সব অট্টালিকার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে সেসব এলিট উদ্বেগে অস্থির হয়ে উঠেছেন। এই সাংস্কৃতিক বিপ্লবের জন্য তারা একেবারেই প্রস্তুত ছিলেন না। তারা তো জেনে এসেছেন রাজধানী কেবল তাদের আরাম-আয়েশের জন্য নির্মিত এক সাংঘাতিক সুরক্ষিত এলাকা। পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী রয়েছে কেবল এসব বিত্তবানের নিরাপত্তা বিধানের জন্য। সেই রাজধানীতে মফস্বল থেকে দশ লক্ষাধিক কৃষক-শ্রমিকের সন্তানসহ মেহনতি মানুষের কাফেলা এলিটদের ঘুম হারাম করে দিয়েছে। তাদের জন্য আরও দুশ্চিন্তার কারণ হয়েছে কাফেলার মুসাফিরদের প্রতি রাজধানীর মেহনতি মানুষের ভালোবাসা আর আবেগের অভাবনীয় বহিঃপ্রকাশ। টেলিভিশনের পর্দায় দেখেছি এদেরই একজন, যিনি কি-না পানি বিক্রি করে সংসার চালান, সেই দরিদ্র মানুষটি বিনা পয়সায় মুসাফিরদের পানি খাওয়াচ্ছেন। বিস্মিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, কারবালার প্রান্তরে আমার নবীর বংশধররা পানি পাননি, আজ আলেমদের পানি দিয়ে সেই কষ্ট লাঘবের চেষ্টা করছি। আল্লাহর কাছে গিয়ে বলতে তো পারব, হে পরওয়ারদেগার আমার এটুকুই ক্ষমতা ছিল।
সংবাদপত্রে এসব কাহিনী পড়ে গায়ের লোম খাড়া হয়ে ওঠে, চোখের পানি আটকানো যায় না। ফরিদপুর থেকে লংমার্চে আসা একজন আলেম সন্ধ্যায় ফিরে যাওয়ার পথে অনেক কষ্ট করে আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। সঙ্গে থাকা বস্তাভর্তি বিভিন্ন ধরনের খাদ্য দেখিয়ে আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বললেন, সোবহানআল্লাহ, কোথা থেকে যে এত খাবার এসেছে, যেন মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআন শরীফে বর্ণিত ‘মান্না ও সালওয়া’ দান করেছেন তাঁর অকৃপণ, দয়ালু হাতে। মধ্যবয়সী সেই আলেম খাবারের বস্তা থেকে আমাকে তবারকস্বরূপ প্লাস্টিকের এক বাক্সভর্তি তেহারি দিয়ে গেলেন। সে সময় অফিসঘরে আমার এক বাল্যবন্ধু, কয়েকজন সহকর্মী এবং অন্যান্য পেশাজীবী উপস্থিত ছিলেন। আমাকে বিরিয়ানির বাক্স উপহার দেয়ার দৃশ্যে নিজেকে সামলাতে না পেরে এদেরই একজন চশমা খুলে চোখ মুছলেন।
প্রকৃত গণজাগরণের চিত্র বিশ্বের সর্বত্র এরকমই হয়ে থাকে। অথচ শাহবাগিদের সমর্থনকারী মিডিয়া এখন হন্যে হয়ে এই অফুরান খাবার সরবরাহকারীদের পরিচয় খুঁজে বেড়াচ্ছেন।
একটি জাতীয় দৈনিকে কোন শহর থেকে কত বাস আসবে, সেই সব বাসের ভাড়া কত লাগবে এবং সেই অর্থের জোগানদাতা কারা, ইত্যাদি সম্পর্কে আগাম রিপোর্ট করেছে। ভাবখানা এমন আমাদের আলেম-ওলামারা এতই দরিদ্র যে তাদের ঢাকা-চট্টগ্রাম বাস ভাড়া দেয়ারও সামর্থ্য নেই! এইসব রিপোর্ট থেকে পত্রিকাগুলোর শ্রেণী-চরিত্র বুঝতে আর কোনো সমস্যা থাকে না। সরকার শত শত মানুষ হত্যা করলে এরা কোনো অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করার প্রয়োজন বোধ না করলেও গাছের প্রাণের জন্য আহজারি শুরু করে দেয়। অপর এক শাহবাগ সমর্থক পত্রিকায় মহাসমাবেশের আগের দিন পর্যন্ত হেফাজতে ইসলামকে বিএনপি-জামায়াতের বি-টিম আখ্যা দিয়ে গালমন্দ করেছে। একই পত্রিকায় এখন বলা হচ্ছে, বিএনপি-জামায়াতের চাপ উপেক্ষা করে সরকারের সঙ্গে সমঝোতা সাপেক্ষে হেফাজত নেতারা নাকি তাদের লংমার্চ একদিনেই শেষ করেছেন। এই স্ববিরোধী সাংবাদিকতার হোতাদের চেহারা চিনে রাখা দরকার।
এরা তো সেই শ্রেণীর ব্যক্তি, যাদের সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআন শরীফের সূরা আল-ইমরানের ১২০ নম্বর আয়াতে বলেছেন, “তোমাদের যদি কোনো মঙ্গল হয়, তাহলে তাদের খারাপ লাগে। আর তোমাদের যদি অমঙ্গল হয়, তাহলে তাতে তারা আনন্দিত হয়। আর যদি তোমরা ধৈর্যধারণ কর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর, তবে তাদের প্রতারণায় তোমাদের কোনোই ক্ষতি হবে না। নিশ্চয়ই তারা যা কিছু করে, সে সমস্তই আল্লাহর আয়ত্তে রয়েছে।” এসব মিডিয়ার মালিকরাই শাহবাগে নবী (সা.)-এর কুত্সা রটনাকারীদের ভোগের জন্য দিনের পর দিন অর্থ এবং খাদ্য পাঠিয়ে ধন্য হয়েছে। তাদের প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত কোনো সাংবাদিক তখন এসব বিষয়ে কোনো প্রশ্ন তোলেননি অথবা সম্পাদক সাহেবও অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করার জন্য কাউকে এসাইনমেন্ট দেননি। এদের কাছ থেকে এই আচরণই যেহেতু প্রত্যাশিত ছিল, কাজেই বিশ্বাসীদের হতাশ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সূরা আল-ইমরানেরই ১৩৯ নং আয়াতে আল্লাহ বলছেন, ‘আর তোমরা নিরাশ হয়ো না এবং দুঃখ করো না। যদি তোমরা মুমিন হও, তবে তোমরাই জয়ী হবে।’ শেষ কথা হলো, ভাড়াটে রাজনৈতিক কর্মী এবং আল্লাহর রাহে জানমাল ত্যাগ করতে উন্মুখ মুমিনের পার্থক্য নিরূপণ করা সেক্যুলারিজমের ধ্বজাধারীদের পক্ষে সম্ভব নয়।
বাংলাদেশের গণমানুষ কোনো রাজনৈতিক নেতৃত্ব অথবা দিকনির্দেশনা ছাড়া যে অভাবনীয় বিপ্লবের সূচনা করেছে, তার ব্যাপ্তি ও স্বতঃস্ফূর্ততার উদাহরণ ছিল ৬ তারিখের হেফাজতে ইসলামের অবিস্মরণীয় লংমার্চ। ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকার এবং এদেশে বিদেশি সংস্কৃতির দালালগোষ্ঠী এই গণবিস্ফোরণে দৃশ্যতই বিচলিত ও আতঙ্কিত হয়েছে। হাজার বছরের চেতনার যে মহাজাগরণ আমরা অবাক হয়ে প্রত্যক্ষ করছি, তার মাধ্যমে এদেশের ৯০ শতাংশ মানুষের ঈমান রক্ষার পাশাপাশি আমাদের মাতৃভূমির স্বাধীনতাও নতুন করে সংহত হয়েছে। ইসলামি চেতনা ছাড়া বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না, ইসলাম ত্যাগ করলে এদেশ স্বাধীনও থাকবে না। বাংলাদেশের অধিকাংশ নাগরিক ইসলাম ধর্মাবলম্বী না হলে এই রাষ্ট্রটির স্বাধীন অস্তিত্বের ভিত্তিই যে তৈরি হতো না, এই চরম সত্য যারা ৪২ বছর ধরে অস্বীকারের চেষ্টা করে চলেছেন, তারা শুধু চরম ইসলামবিদ্বেষীই নন, একইসঙ্গে বাংলাদেশের স্বাধীনতারও শত্রু।
১৯৪৬ সালে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের নিয়ন্ত্রণাধীন ভারতের সর্বশেষ প্রাদেশিক নির্বাচনে মুসলমান অধ্যুষিত পূর্ববঙ্গ বিপুলভাবে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পক্ষে ভোট প্রদান করেছিল। সেই নির্বাচনে আইনসভার সবক’টি আসনে এবং প্রাদেশিক আইনসভার ১১৯টি আসনের মধ্যে ১১৩টিতে মুসলিম লীগ জয়লাভ করে। মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ অন্য কোনো প্রদেশেই মুসলমানদের পৃথক আবাসভূমি প্রতিষ্ঠার পক্ষে এমন নিরঙ্কুশ ম্যান্ডেট প্রদান করা হয়নি। পূর্ববঙ্গের বাঙালি মুসলমান জনগোষ্ঠীর সেদিনকার এই সিদ্ধান্তের পেছনে শুধু ধর্মই নয়, তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থাও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে কাজ করেছিল।
১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শঠতাপূর্ণ বিজয়কে এ অঞ্চলের হিন্দু জনগণের উল্লেখযোগ্য অংশ মুসলমান শাসকদের কাছ থেকে নিষ্কৃতি বিবেচনা করে স্বাগত জানিয়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই পরবর্তী একশ’ বছর ধরে মুসলমানরা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে একের পর এক বিদ্রোহ করে গেলেও হিন্দু জনগোষ্ঠী ইংরেজদের সহযোগীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। শতকব্যাপী সেই বিদ্রোহে এই অঞ্চলের আলেম-ওলামারা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সাহস, দেশপ্রেম ও ঈমানি শক্তির এক অনন্যসাধারণ আদর্শ স্থাপন করে গেছেন। উইলিয়াম হান্টার তার বিখ্যাত ‘দি ইন্ডিয়ান মুসলমান’ বইতে সেই মুসলিম বিদ্রোহের পটভূমি চমত্কারভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। বইটি লেখার আগে তিনি এসব বিদ্রোহ, বিশেষ করে উত্তর পশ্চিম সীমান্তের যুদ্ধে দু’হাজার মাইল দূরবর্তী অঞ্চলের বাঙালি মুসলমানের অংশগ্রহণ নিয়ে বিশদভাবে অনুসন্ধান করেছিলেন। হান্টার বিষয়টি এভাবে বর্ণনা করেছেন, ব্রিটিশরা এদেশে আসার আগে দীর্ঘকাল মুসলমানরা বাংলা শাসন করেছে। মুসলিমশাসিত সমৃদ্ধিশালী বাংলা ব্রিটিশ দখলের পর চরম দারিদ্র্যে পতিত হয়। ব্রিটিশরা মুসলমানদের জমিজমা হিন্দুদের প্রদান করে। মুসলমানদের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করার ফলে বিশাল জনগোষ্ঠী অশিক্ষার অন্ধকারে নিপতিত হয়। সিভিল সার্ভিস এবং সেনাবাহিনীর দরজা তাদের জন্য একেবারেই বন্ধ করে দেয়া হয়। সুতরাং ব্রিটিশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়।
হান্টারের তদন্তের ফলে ব্রিটিশরা তাদের উপনিবেশের দীর্ঘদিনের সমস্যা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বোঝার চেষ্টা করে। তারা অনেকটা হঠাত্ করেই যেন উপলব্ধি করে যে হিন্দুরা নয়, মুসলমানরাই বাংলায় সংখ্যাগরিষ্ঠ। এই বাস্তবতা আমলে নিয়েই লর্ড কার্জন ১৯০৫ সালের ৫ জুলাই ঢাকাকে রাজধানী করে ‘পূর্ব বাঙলা ও আসাম’ প্রদেশ গঠন করেন। প্রায় পৌনে দু’শ বছর পর ঢাকা আবার রাজধানীর মর্যাদা ফিরে পায়। কলকাতার বর্ণহিন্দুরা লর্ড কার্জনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুললে ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ হয় এবং মুসলমানরা ন্যায্য কারণেই ইংরেজ ও হিন্দু উভয় গোষ্ঠীর ওপর বিক্ষুব্ধ হয়। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবেও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরসহ পশ্চিমবঙ্গের অভিজাত হিন্দু শ্রেণী একইভাবে বিরোধিতা করলে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে মানসিক বিচ্ছেদ চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে।
দুর্ভাগ্যবশত ঢাকার একশ্রেণীর হিন্দু নেতৃবৃন্দ তথাকথিত ওপার বাংলার একই সম্প্রদায়ভুক্তদের কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে বলতে থাকেন, পূর্ববাংলার মুসলমানরা অধিকাংশই কৃষক হওয়ায় তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো উচ্চ শিক্ষাকেন্দ্রের কোনো প্রয়োজন নেই। প্রকৃতপক্ষে এই স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী পূর্ববাংলাকে কেবল কাঁচামাল তৈরির লক্ষ্যে Hinter land হিসেবে রেখে দিয়ে চিরস্থায়ীভাবে শোষণের আকাঙ্ক্ষা মনে মনে পোষণ করতেন। সে সময় পূর্ববাংলার জমিদারদের অধিকাংশই হিন্দু সম্প্রদায়ভুক্ত ছিলেন এবং তারা প্রধানত কলকাতায় বসবাস করতেন। এ অঞ্চলের দরিদ্র মুসলমান কৃষকদের দায়িত্ব ছিল ফসল ফলিয়ে ওইসব অনাবাসী জমিদারদের জন্য সম্পদ তৈরি করা। এই অমানবিক শোষণ থেকে মুক্তিলাভের লক্ষ্যেই ১৯৪৬ সালে পূর্ববাংলার মুসলমানরা মুসলিম লীগকে এভাবে সমর্থন করেছিল। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর তারা যখন দেখলো, ভাগ্যের পরিবর্তন না হয়ে কেবল শোষক পরিবর্তন হয়েছে, তখন আবারও বিদ্রোহের ঝাণ্ডা তুলে ধরতে সংগ্রামী মানুষগুলো বিলম্ব করেনি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ তাই পশ্চিম পাকিস্তানি জালিম শাসকের বিরুদ্ধে মজলুমের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে পরিণত হয়েছিল।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে ৪২ বছর ধরে বাংলাদেশের একশ্রেণীর রাজনীতিক সেই মুক্তিসংগ্রামকে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রূপ দেয়ার অব্যাহত অপচেষ্টা করে চলেছে। অভিন্ন বাঙালি সংস্কৃতির নামে পশ্চিমবঙ্গের ব্রাহ্মণ্যবাদী সংস্কৃতি আমদানি করে তারা আমাদের নিজস্ব জাতিসত্তার বিকাশ বাধাগ্রস্ত করেছে। স্বাধীনতাপ্রাপ্তির দীর্ঘকাল বাদে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের মাধ্যমে যে অভূতপূর্ব গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে, তারই প্রকাশ ঘটেছিল এ মাসের ৬ তারিখে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে। তবে স্মরণে রাখা দরকার, সরকারের সব বাধা চুরমার করে সেই বিপ্লবের প্রাথমিক বিজয় কেবল আমরা অর্জন করতে পেরেছি। বিপ্লবকে চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে এখনও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে, অনেক ত্যাগ স্বীকারের প্রয়োজন পড়বে। প্রতিবিপ্লবী গোষ্ঠী এরই মধ্যে তত্পর হয়ে উঠেছে। মার্কিন-ভারতের চিহ্নিত দালাল, ইসলামবিদ্বেষী মিডিয়া ৬ তারিখের অর্জনকে খাটো করার জন্য নানারকম বিভ্রান্তিকর প্রচারণায় লিপ্ত হয়েছে। পলাশী যুদ্ধের পর যেমন করে ব্রিটিশ এবং হিন্দুরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, আজও একইভাবে ইসলাম ফোবিয়ায় আক্রান্ত পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো এবং ভারত এক হয়েছে। কাজেই সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদের মোর্চার বিরুদ্ধে এক দীর্ঘ সংগ্রামের জন্য আমাদের প্রস্তুত হতে হবে।
সরকারের ইন্ধনে শাহবাগিরা ইতোমধ্যে নববর্ষের দিনে পাল্টা মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে। শাহবাগিদের মহাসমাবেশ ডাকার দিনগুলো নির্বাচনের কৌশল বিশেষভাবে লক্ষণীয়। এর আগে ২১ ফেব্রুয়ারি এবং ২৬ মার্চ তারা একই কাণ্ড করেছে। অর্থাত্ শহীদ দিবস, স্বাধীনতা দিবস এবং নববর্ষের মতো জাতীয় দিবসগুলোকেও বিদেশিদের সমর্থনপুষ্ট এই প্রতিবিপ্লবী গোষ্ঠী ন্যক্কারজনকভাবে দলীয়করণের অপচেষ্টা করছে। নববর্ষের দিনে রমনা পার্ক এলাকায় সারাদিন ধরে এমনিতেই রাজধানীর কয়েক লাখ অধিবাসীর সমাগম ঘটে। এই সুযোগ গ্রহণ করেই শাহবাগিরা দেখাতে চাচ্ছে যে, তাদের পেছনেও লাখ লাখ মানুষের সমর্থন রয়েছে। তাদের এই ভুয়া মহাসমাবেশের মুখোশ এখনই উন্মোচিত করে দেয়া অত্যন্ত জরুরি। উল্লেখ্য, শাহবাগের তথাকথিত আন্দোলনের সূচনাই হয়েছিল একুশে বইমেলার জনসমাগমকে কেন্দ্র করে। পরবর্তীতে মিডিয়া সার্কাস, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশে ব্যবসায়ীদের বেশুমার অর্থ ও খাদ্যদ্রব্য প্রেরণ, জমায়েতগুলোতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সরাসরি অংশগ্রহণ, প্রশাসনের নিরাপত্তা প্রদান ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা গ্রহণ ইত্যাদির মাধ্যমে কথিত গণজাগরণের বেলুনকে যথাসাধ্য ফুলিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।
শাহবাগ পিকনিকের প্রথম দিকে শহুরে মধ্যবিত্তের বিনোদন তৃষ্ণার কারণে তাদের মধ্যে খানিকটা উত্সাহের সৃষ্টি হলেও এখন সব বিভ্রান্তির অবসান হয়েছে। ইসলামবিদ্বেষী ব্লগারদের পৃষ্ঠপোষক এবং সরকারি নীতিনির্ধারকরা এ বিষয়ে সম্যক অবহিত থাকার কারণেই জাতীয় দিবস ছাড়া অন্য দিনে মহাসমাবেশ ডাকার মতো মনোবল তাদের আর অবশিষ্ট নেই।
কিছুদিন আগে শাহবাগ চত্বরের একেবারে কাছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৪ দলের মহাসমাবেশে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দিয়ে এসেছেন। সেদিন জনসমাগম দৃষ্টিকটুভাবে কম হওয়ায় উপায়ান্তর না পেয়ে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বিরোধী দলের হরতালকে সেজন্য দায়ী করেছিলেন। অথচ সরকারি হরতাল এবং সর্বাত্মক প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ঢাকাকে দেশের অন্যান্য স্থান থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া সত্ত্বেও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম বৃহত্ সমাবেশ করতে সক্ষম হয়েছে। বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষেই এ ধরনের সমাবেশ আয়োজন করা অতীতেও সম্ভব হয়নি, ভবিষ্যতেও হওয়ার সম্ভাবনা দেখি না।
শাপলা চত্বরের সমাবেশে লক্ষ লক্ষ কাতারবন্দী অংশগ্রহণকারী যে সুশৃঙ্খলভাবে সভা শুরু, পরিচালনা এবং শেষ করেছেন সেটাও রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য শিক্ষণীয় হওয়া উচিত। মহাসমাবেশের বিশালত্ব সব বিদেশি মিডিয়াকেও বিস্মিত করেছে। আওয়ামী লীগের প্রতি সহানুভূতিশীল এবং কট্টর ইসলামবিদ্বেষী বিবিসি বাংলা’র সংবাদে বলা হয়েছে, “দুপুরের পর থেকে শাপলা চত্বর ঘিরে পুরো এলাকাটি এক বিশাল জনসমুদ্রে পরিণত হয়। শাপলা চত্বর থেকে শুরু করে বায়তুল মোকাররম পর্যন্ত রাস্তাটি ছিল মানুষের ভিড়ে ঠাসা। মতিঝিল ঘিরে আশপাশের রাস্তাগুলোতেও ছিল মানুষের স্রোত।” শাহবাগিদের প্রতি একটি ক্ষুদ্র প্রস্তাব রেখে আজকের লেখা শেষ করব।
শাহবাগি গোষ্ঠী, সরকার এবং বাংলাদেশের ইসলামবিদ্বেষী মিডিয়া সেই ৫ ফেব্রুয়ারি থেকেই কথিত প্রজন্ম চত্বরের জমায়েতকে গণজাগরণ বলে দাবি করে চলেছেন। হেফাজতে ইসলামের ডাকে ৬ তারিখে শাপলা চত্বরে ঢাকাবাসী ইসলামি চেতনায় গণবিস্ফোরণ প্রত্যক্ষ করেছে। এখন বাঙালি চেতনার ধ্বজাধারীরা সেই একই শাপলা চত্বরে অপর একটি মহাসমাবেশের আয়োজন করলে এবং সেদিন ঢাকাকে প্রশাসনিক নির্দেশে বিচ্ছিন্ন করা হলে এদেশে কোন চেতনার পক্ষে স্বতঃস্ফূর্ত জনসমর্থন বেশি, সেই বিতর্কের একটা মীমাংসা হয়তো হয়ে যেতে পারে। আশা করি, বাঙালি চেতনাধারীদের মধ্যে শেখ হাসিনার চেয়েও নিজেদের অধিক জনপ্রিয় বিবেচনাকারী শাহরিয়ার কবির, ব্লগার ইমরান গং এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করবেন।
পুনশ্চ : আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ গতকাল এক সমাবেশে আমার দেশ পত্রিকা অফিসে ৮৫ কোটি টাকা ভাগাভাগি এবং সেখান থেকে আমার ৪ কোটি টাকা নেয়ার নির্লজ্জ মিথ্যা দাবি করেছেন। এ রাজনীতিকের নাম শেখ হাসিনার এবারের মেয়াদের আগে আমি কোনোদিন শুনিনি। আমার সম্পর্কে কুষ্টিয়া থেকে আমদানি হওয়া লোকটির কোনো ধারণা আছে কিনা, তাও বলতে পারব না। আপাদমস্তক দুর্নীতিবাজ সরকারের এই মুখপাত্রের মিথ্যাচারে আমি অবশ্য একেবারেই অবাক হইনি। একজন চোর যে সচরাচর সাধুসন্তকেও চোরই ভাবে—সেই গল্প স্কুলজীবনেই পড়েছি। পাঠককে কেবল জানিয়ে রাখছি, এই মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত সন্ধ্যায় আমার আইনজীবীর সঙ্গে শলা-পরামর্শ করেছি। আশা করি, আগামীকালের মধ্যেই প্রাথমিক পদক্ষেপ নেয়া হবে।
ইমেইল :
লিংক
বিষয়: বিবিধ
১৫৮২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন