BNP কি তাহলে মুসলিম লীগ হতে যাচ্ছে?
লিখেছেন লিখেছেন শালিক ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৩:১০:২৪ দুপুর
আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পশ্চিম পাকিস্তানের হায়েনারা আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেল তখন কার্যত: আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম অভিভাবকহীন হয়ে পড়লো। ঠিক এমনই দোলাচল অবস্থা থেকে স্বাধীনতা ঘোষনা করে সমগ্র বাঙালী জাতিকে এক সূতায় গ্রথিত করে স্বাধীনতার সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে হানাদার মুক্ত করে জাতিকে স্বাধীনতার লাল সূর্য্য উপহার দিয়েছিলেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। এরপর জাতির কপালে নেমে এলো ৭২-৭৪ এর বাকশালী দু:শাসন, দুর্ভিক্ষ, রক্ষী বাহিনীর নির্মমতা ও সর্বত্র তৎকালীন শাসক দলের নৈরাজ্য এবং পরবর্তীতে কতিপয় সেনা অফিসার কর্তৃক শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা । একের পর এক ঘটনার মধ্য দিয়ে গোটা দেশ অস্থিতিশীল! আবারো অভিভাবকহীন বাংলাদেশ!! ঠিক ইতিহাসের এমনই আরেক বাঁক ঘোরানো মুহুর্তে সিপাহী জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলার ত্রাতা হিসাবে আবারো আভির্ভাব মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান এর, যিনি দূরদর্শী নেতৃত্ব দিয়ে দিকভ্রান্ত জাতিকে আবারো দিয়েছিলেন সঠিক পথের দিশা। সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশ গঠনের কাজে আত্মনিয়োগ করে জাতিকে এগিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টায় মগ্ন হয়েছিলেন। পাশাপাশি মুসলমি বিশ্বের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন ও সার্ক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আঞ্চলিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে নতুন করে পরচিত করেয়েছেন । দু:খজনকভাবে কতিপয় সেনা দুষ্কৃতকারীর হাতে বাংলার সর্বকালের জনপ্রিয় এ প্রেসিডেন্ট নিহত হন। এরপর জেনারেল এরশাদের হাতে গণতন্ত্রের কবর রচিত হয়ে আসে স্বৈরাচারী দু:শাসন। ঠিক তখনই জাতির নেতৃত্বে আসেন জেনারেল জিয়াউর রহমান এর সহধর্মীনি বেগম খালেদা জিয়া কোনরকম রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ছাড়া তখনকার নিতান্ত এ গৃহবধুটি অবিশ্বাস্য দক্ষতার সাথে নেতৃত্ব দিয়ে স্বৈরাচার এরশাদের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্রের নতুন পথচলা শুরু করেছিলেন।
কিন্তু আজ আবার যখন গণতন্ত্র বিপন্ন, মানবতা আজ ভূলুন্ঠিত, সর্বত্র হাহাকার, সর্বজনগ্রাহ্য তত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার হীন অপচেষ্টা, বি.ডি.আর. বিদ্রোহের নামে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের নির্মমভাবে হত্যা, মশয়ার বাজার ডাকাতি, হলমার্ক এর মাধ্যমে ব্যাংক লুট, ডেসটিনি কেলেঙ্কারী, বাবু সুরঞ্জিত কর্তৃক রেলওয়েগেট দূর্নীতি, তথাকথিত মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারের নামে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীদের হয়রানী এবং এ ইস্যুতে জনগনের সেন্টিমেন্টকে ব্যবহার করে আবার ক্ষমতায় যাওয়ার প্রচেষ্টা, সাগর-রুনী হত্যা, ইলিয়াস আলী ও চৌধুরী আলম গুম, ছাত্রলীগ কর্তৃক বিশ্বজিত হত্যা ও টেন্ডার-চাঁদাবজি-শিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতা এ সকল প্রতিরোধে দেশপ্রেমিক জনগন যখন BNPর দিক তাকিয়ে তখন দেখা যাচ্ছে BNP নামক দলটি যেন দিকভ্রান্ত এক নৌকা(সম্প্রতি শাহবাগ আন্দোলনের পর এ দিকভ্রান্ততা আরো বেড়েছে) কি করবে? কি করা উচিত? BNP যেন বুঝতেই পারছেনা। জনসম্পৃক্ত আন্দোলন বাদ দিয়ে BNP কূটনৈতিক নির্ভর রাজনীতি করছে । অনেকটা এমন যেন বিদেশী কূটিনীতিকরাই BNP কে আগামীকত ক্ষমতায় বসাবে। অথচ একটা অবুঝ শিশুও একথা ভালো বুঝে যে বিদেশীরা তাদের স্বার্থের জন্য BNP থেকে আওয়ামীলীগকেই প্রাধান্য দেয় এক্ষেত্রে আওয়ামীলীগ তাদের অটোমেটিক চয়েস, তার প্রমান আমরা ২০০৮ সালের নির্বাচনে পেয়েছি ।
বস্তুত BNP এখন সুবিধাবাদীদের দলে পরিণত হয়েছে- আজ কোথায় সেই ৯০ এর গণ আন্দোলন? অথচ আজকের দু:শাসন এরশাদের স্বৈন-শাসনকেও হার মানাচ্ছে । BNP সংখ্যাগরিষ্ট জনগনের আশা-আকাঙ্খা বুঝতে পারছেনা। অন্য সবকিছু না হয় বাদই দিলাম, এক তত্বাবধায়ক সরকার পূণর্বহালের দাবীতে আজ পর্যন্ত কার্যত কোন কর্মসূচীই BNP দিতে পারেনি। শুধু মাত্র রোজার পর, ঈদের পর, পরীক্ষার পর তীব্র আন্দোলনের হুংকার শুনতে শুনতে কান ঝাল-পালা হয়ে যাচ্ছে কিন্তু কাজের কাজ কিছু হচ্ছেনা। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে আৗয়ামীলীগ এক দলীয় নির্বাচনের তারিখ ঢ়ঘাষনা করলে BNP বলবে নির্বাচনের পর কঠোর আনোলনের মাধ্যমে নরকার পতন ঘটানো হবে।
BNP নেতৃত্বকে বলছি জনগনের ভাষা বুঝেন এবং নস অনুযায়ী দল পরিচালনা করুন, কতিপয় আস্তাবকের কথা শুনে দল পরিচালনা করলে জনবিচ্ছিন্নই হবেন আর রাজনৈতিক ভাবে দেউলিয়া হবেন। দেশের জনগন চায় বর্তমান শ্বাস রুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে পরিত্রান এবং সেটা BNP র হাত ধরেই। সে জন্য বেড রুমে বসে হুংকার না ছেড়ে রাঝপথে নামতে হবে দলটিকে। না হয় আমরা দিব্য দৃষ্টিতে দেখছি BNPর অবস্থা হবে মুসলীম লীগ এর মত আর বর্তমান BNPর জায়গায় তরাই আসবে যারা সরকারের শত নির্যাতন, নিপীরনের পরও জনগনকে নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
বিষয়: বিবিধ
১২৮৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন