বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্র; পার্ট-২
লিখেছেন লিখেছেন মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ০৫ আগস্ট, ২০১৩, ০২:৫৭:১৯ দুপুর
৩। আল্লাহ ব্যতীত আর কাহারও নিকট দোয়া বা প্রার্থনা করিবে না,
কাহারও নিকট আশ্রয় খুঁজিবে না, কাহাকেও সাহায্যের জন্য ডাকিবে
না এবং আল্লাহর ব্যবস্থাপনায় কাহাকেও এতখানি প্রভাবশালী বা
শক্তিমান মনে করিবে না যে, তাহার সু পারিশে আল াহর ফায়সালা
পরিবর্তিত হইতে পারে। কেননা তাঁহার রাজ্যে সকলেই ক্ষমতাহীন
প্রজা মাত্র।
৪। আল্লাহ ব্যতীত আর কাহারও সম্মুখে মাথা নত করিবে না এবং কাহারও
উদ্দেশ্যে মানত মানিবে না। কেননা এক আল্লাহ ব্যতীত ইবাদত
(দাসত্ব, আনুগত্য ও উপাসনা) পাইবার অধিকারী আর কেহই নাই।
৫। আল্লাহ ব্যতীত অপর কাহাকেও বাদশাহ, রাজাধিরাজ ও সার্বভৌম
ক্ষমতার মালিক মানিয়া লইবে না, কাহাকেও নিজস্বভাবে আদেশও
নিষেধ করিবার অধিকারী মনে করিবে না, কাহাকেও স্বয়ংসম্পূর্ণ
বিধানদাতা ও আইন প্রণেতা মানিয়া লইবে না এবং আল্লাহর আনুগত্য
ও তাঁহার দেওয়া আইন পালনের ভিত্তিতে প্র তিষ্ঠিত নয় এমন সকল
আনুগত্য মানিয়া লইতে অস্বীকার করিবে। কেননা স্বীয়সমগ্র রাজ্যের
নিরঙ্কুশ মালিকানা ও সৃষ্টিলোকের সার্বভৌমত্বের অধিকার আল্লাহ
ব্যতীত অপর কাহারও আসলেই নাই।
উপরিউক্ত আক্বীদা অনুযায়ী নিম্নি লখিত বিষয়গুলিও মানিয়া লওয়া
আবশ্যকঃ
১। মানুষ স্বীয় স্বাধীন ইচ্ছা ও আযাদী কুরবানী করিবে, নফসের ইচ্ছা
বাসনার দাসত্ব পরিত্যাগ করিবে এবং যে আল্লাহকে ইলাহ মানিয়া
লইয়াছে একনিষ্ঠভাবে একমাত্র তাঁহারই বান্দাহ ও দাস হইয়া জীবন
যাপন করিবে।
২। নিজেকে কোন কিছুরই স্বাধীন ইচ্ছাসম্পন্ন মালিক মনে করিবে না বরং
স্বীয় জীবন, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, মানসিক ও দৈহিক শক্তি তথা সবকিছুকে
আল্লাহর মালিকানাধীন ও তাঁহার নিকট হইতে প্রাপ্ত আমানত মনে
করিবে।
৩। নিজেকে আল্লাহর নিকট দায়ী ও জবাবদিহি করিতে বাধ্য মনে করিবে,
শক্তি-সামর্থ্যরে প্রতি লক্ষ্য রাখিবে যে, পরকালে আল্ল াহ তা’আলার
সম্মুখে এই সব বিষয়ের হিসাব অবশ্যই দিতে হইবে।
৪। আল্লাহর যাহা পছন্দ তাহাকেই নিজের পছন্দ এবং যাহা তাঁহার
অপছন্দ তাহাকেই নিজের অপছন্দ রূপে গ্র হণ করিবে।
৫। আল্লাহর সন্তুষ্টি ও তাঁহার নৈকট্য লাভকেই নিজের যাবতীয় চেষ্টা
সাধনার চূড়ান্ত লক্ষ্যএবং নিজের সমগ্র তৎপরতার কেন্দ্র বিন্দু হিসাবে
গ্রহণ করিবে।
৬। স্বীয় নৈতিক চরিত্র, আচার-ব্যবহার এবং সামাজিক, সাংস্কৃতিক,
অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ড, এক কথায় জীবনের সর্ববিষয়ে
কেবল আল্লাহর বিধানকেই একমাত্র হিদায়াত হিসাবে মানিয়া লইবে
এবং আল্লাহর দেওয়া শরীয়তের বিপরীত যাবতীয় নিয়ম-নীতিও
পন্থা-পদ্ধতিকে প্রত্যাখ্যান করিবে।
ব্যাখ্যা: (খ) এই আক্বীদার দ্বিতীয় অংশ- হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহ
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূল হওয়ার অর্থ এই যে, বিশ্বের একমাত্র
বাদশাহর (আল্লাহর) পক্ষ হইতে বিশ্বের সকল মানুষের প্রতি সর্বশেষ নবী
মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মাধ্যমে একমাত্র নির্ভুল
হিদায়াত ও আইন-বিধান প্রেরিত হইয়াছে এবং এই হিদায়াত ও আইন
বিধান অনুযায়ী কাজ করিয়া পূর্ণাঙ্গ বাস্তব নমুনা কায়েম করিবার জন্যই
মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিযুক্ত করা হইয়াছে।
যাঁহারা এই পরম সত্য ও প্রকৃত বিষয়কে জানিয়া ও মানিয়া লইবেন
তাঁহাদের কর্তব্য হইবে:
১। হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হইতে
যেই হিদায়াত ও আইন-বিধান প্রামাণ্য সূত্রে পাওয়া যাইবে তাহা
দ্বিধাহীন ও অকুণ্ঠচিত্তে গ্রহণ করা;
২। কোন কাজে উদ্যোগী হওয়া বা কোন নিয়ম পদ্ধতি অনু সরণ হইতে
বিরত থাকিবার জন্য আল্লাহর রাসূলের নিকট হইতে প্রাপ্ত আদেশও
নিষেধকেই যথেষ্ট মনে করা;
৩। আল্লাহর রাসূল ব্যতীত অপর কাহারও স্বয়ংসম্পূর্ণ নেতৃত্ব মানিয়া না
লওয়া, কেননা অন্য কাহারও আনুগত্য হইতে হইবে আল্লাহর কিতাব
ও রাসূলের সুন্নাতের অধীন;
৪। জীবনের সকল ব্যাপারেই আল্লাহর কিতাব ও রাসূলের সু ন্নাতকে
অকাট্য প্রামাণ্য, বিশ্বস্তসূত্র ও নির্ভুল জ্ঞানের একমাত্র উৎসরূপে গণ্য
করা। যেইসব ধারণা, খেয়াল, বিশ্বাস কিংবা নিয়ম-নীতি ও পন্থা উহার (কুরআন ও সুন্নাহ) বিপরীত তাহা পরিত্যাগ করা এবং কোন সমস্যার সমাধান প্রয়োজন হইলে তাহার জন্য হিদায়াত লাভের উদ্দেশ্যে ও এই উৎসের দিকেই ধাবিত হওয়া;
বিষয়: রাজনীতি
১৯১৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন