মহান আল্লাহর এক অপুরন্ত নেয়ামত হচ্ছে সন্তানদের জন্য তার মাতা-পিতা।

লিখেছেন লিখেছেন থাবা নানা ২৯ এপ্রিল, ২০১৩, ০৪:০০:৪৪ বিকাল

এই সুন্দর ধরায় আমরা এসেছি মহান আল্লাহর অনুগ্রহে আমাদের মাতা-পিতার মাধ্যমে। শৈশব কাল থেকে তারা আমাদেরকে তাদের স্নেহ,মায়া,মমতা,ভালবাসা দিয়ে অতিযত্নে লালন-পালন করে আসছে। তাদের একান্ত চেষ্টায় আমরা সর্বশক্তিমান আল্লাহ তায়া'লার একমাত্র মনোনীত জীবন ব্যবস্থা ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়েছি। তারা আমাদের তাদের সর্ব চেষ্টা প্রয়োগ করে শিক্ষার্জনের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। সর্বোচ্চ শিক্ষার্জন করার পর আমাদের অনেকে এখন বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত। এই আমাদের অনেকেই এখন তাদের জীবন সংগীনি হিসেবে একজন অপরিচিত নারীকে স্ত্রী হিসেবে বেচে নিয়েছি। সেই অপরিচিত নারীকে স্ত্রী হিসেবে পেয়ে আমাদের অনেকে হয়তো তাদের মাতা-পিতাকে ভূলে যাওয়ার উপদ্রবে পরিনত হচ্ছে।

এটা অত্যন্ত দুঃখের ব্যপার, যে মাতা তাকে গর্বধারন ও দুধ পান সহ ত্রিশটি মাস কত দুঃখ-কষ্ট সহ্য করেছে এবং যে পিতা তাকে তার মাথার ঘাম পায়ে ফেলার অর্থ দিয়ে এত বড় করেছে, সেই সন্তান এখন এক ফেতনা (যদি স্বামীকে বাধ্য করে মাতা-পিতাকে অবহেলা করতে) রমণী পেয়ে তার অপুরন্ত নেয়ামত মাতা-পিতার প্রতি উদাসিন হয়।

তাই ঐ সব ভাইদের প্রতি আমার অনুরোধ আপনারা মাতা-পিতার সাথে কি ধরনের আচরন করবেন তা নিন্মোক্ত আয়াত সমূহের মাধ্যমে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করলাম।

মহান আল্লাহ মহাগ্রন্থ আল-কোরআনের অনেক স্থানে মাতা-পিতার সাথে কি রকম আচরন করতে হবে তার বর্ণনা অনেক স্থানে দিয়েছেন। যেমন-

১) আমি মানুষ এই মর্মে নির্দেশনা দিয়েছি যে, তারা যেন পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করে৷ তার মা কষ্ট করে তাকে গর্ভে ধারণ করেছিলো এবং কষ্ট করেই তাকে প্রসব করেছিলো৷ তাকে গর্ভে ধারণ ও দুধপান করাতে ত্রিশ মাস লেগেছে। এমন কি যখন সে পূর্ণ যৌবনে পৌঁছেছে এবং তারপর চল্লিশ বছর বয়সে উপনীত হয়েছে তখন বলেছে : “হে আমার রব, তুমি আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে যেসব নিয়ামত দান করেছো আমাকে তার শুকরিয়া আদায় করার তাওফীক দাও৷ আর এমন সৎ কাজ করার তাওফীক দাও যা তুমি পছন্দ করো। আমার সন্তানদেরকে সৎ বানিয়ে আমাকে সুখ দাও৷ আমি তোমার কাছে তাওবা করছি৷ আমি নির্দেশের অনুগত (মুসলিম) বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত৷” (সূরা-আহকাফ,আয়াতঃ১৫)

২) আর প্রকৃতপক্ষে আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার হক চিনে নেবার জন্য নিজেই তাকিদ করেছি৷ তার মা দুর্বলতা সহ্য করে তাকে নিজের গর্ভে ধারণ করে এবং দু’বছর লাগে তার দুধ ছাড়তে। (এ জন্য আমি তাকে উপদেশ দিয়েছি) আমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো এবং নিজের পিতা-মাতার প্রতিও, আমার দিকেই তোমাকে ফিরে আসতে হবে।

কিন্তু যদি তারা তোমার প্রতি আমার সাথে এমন কাউকে শরীক করার জন্য চাপ দেয় যাকে তুমি জানো না,তাহলে তুমি তাদের কথা কখনোই মেনে নিয়ো না৷ দুনিয়ায় তাদের সাথে সদাচার করতে থাকো কিন্তু মেনে চলো সে ব্যক্তির পথ যে আমার দিকে ফিরে এসেছে৷ তারপর তোমাদের সবাইকে ফিরে আসতে হবে আমারই দিকে। সে সময় তোমরা কেমন কাজ করছিলে তা আমি তোমাদের জানিয়ে দেবো। (সূরা-লুকমান,আয়াতঃ ১৪-১৫)।

৩) তোমার রব ফায়সালা করে দিয়েছেনঃ তোমরা কারোর ইবাদাত করো না, একমাত্র তাঁরই ইবাদাত করো। পিতামাতার সাথে ভালো ব্যবহার করো৷ যদি তোমাদের কাছে তাদের কোনো একজন বা উভয় বৃদ্ধ অবস্থায় থাকে, তাহলে তাদেরকে “উহ্‌” পর্যন্তও বলো না এবং তাদেরকে ধমকের সুরে জবাব দিয়ো না বরং তাদের সাথে মর্যাদা সহকারে কথা বলো।

আর দয়া ও কোমলতা সহকারে তাদের সামনে বিনম্র থাকো এবং দোয়া করতে থাকো এই বলেঃ হে আমার প্রতিপালক! তাদের প্রতি দয়া করো, যেমন তারা দয়া, মায়া, মমতা সহকারে শৈশবে আমাকে প্রতিপালন করেছিলেন। (সূরা-বনী ঈসরাইল, আয়াত-২৩-২৪)।

প্রিয় পাঠক ভাইয়েরা, আপনারা এতক্ষনে নিশ্চয় উপলব্ধি করতে পেরেছেন যে মহান আল্লাহ কি ভাবে মাতা-পিতার সাথে আচরন করতে হবে তা আমাদের শিখিয়েছেন। তাই আমাদের মধ্যে যদি এমন কোন ভাইয়েরা থেকে থাকে যারা এক চলনাময়ী ললনা পেয়ে তাদের মাতা-পিতাকে ভূলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে, এবং ভালো কাপড়,ভালো খাওয়ার সেই ললনাকে দিচ্ছে নিজের জান্নাতের চাবি মাতা-পিতাকে বাদ দিয়ে তারা আশা করি এতক্ষনে মাতা-পিতার প্রতি আবার সেই ছোট কালের ভালোবাসার সেহ পুরোনো হাত বাড়িয়ে দিবেন। যার কারনে আপনারা নিশ্চত জান্নাতের অধিবাসী হবেন ইনশাআল্লাহ।

বিষয়: বিবিধ

২০১৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File