আমি একজন বাঙ্গালী মুসলমান
লিখেছেন লিখেছেন হাসান তারেক ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০১:২৬:৩৪ রাত
আপনার কাছে পরিচয় জানতে চাইলে আপনি হয়ত খুব সহজেই পরিচয় দিতে পারেন এই বলে যে, “আমার প্রথম পরিচয় আমি একজন বাঙ্গালী এরপর আমি একজন মুসলমান”। আর আমি বলব, “আমি একজন বাঙ্গালী মুসলমান”। আমার কাছে ধর্মের মর্যাদার অবস্থান থেকে আমার ধর্ম আমার কাছে সবচেয়ে উপরে একই ভাবে দেশের প্রতি মমত্ববোধের অবস্থান থেকে আমার দেশ আমার সবচেয়ে প্রিয়। কাজেই আমি আগে পরে করতে পারি না। দেশ, ধর্ম উভয়ের স্বার্থই আমার কাছে মুখ্য।
ধরুণ, ব্লগার রাজীব আস্তিক না নাস্তিক সে কথা বাদ দিলাম। সে একজন আন্দোলনকারী। এখন সে যদি আন্দোলন বহির্ভুত কোন কারণে মারা যায় তবে সে কি করে ২য় মুক্তিযুদ্ধের ১ম শহীদ হয়? অথচ সে মারা যাবার পূর্বে আমার মত একজন সাধারণ আন্দোলনকারী ছিল। তার মৃত্যুর পর তাকে শহীদ আখ্যা দেয়া, তার নামে মুড়াল বানানো, তার আস্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন ইত্যাদির জন্ম হয়েছে। যেগুলো যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে আমাদের গণ আন্দোলনকে সমালোচিত করেছে। আর যাকে আমরা মুক্তিযুদ্ধ বলছি আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরাপত্তা বলয়ে এ কেমন মুক্তিযুদ্ধ?
অপরদিকে বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় যখন দেখি আমাদের ধর্মীয় অনুভুতির পরিচয় বহনকারী, ধর্মীয় নীতি নির্ধারক, নবীর সুন্নতধারী হুজুরবর্গ ধ্বংসাত্মক বর্বর কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে মসজিদ, পতাকা, শহীদ মিনার অবমাননার দৃষ্টতা দেখায়। বোঝার কোন শেষ নেই আর তাই মহান সৃষ্টকর্তা যেন তাদের সঠিক বুঝ দেন এটাই কাম্য।
প্রথম প্রথম আন্দোলনে প্রাণ থাকলেও বর্তমানে উস্কানি, অপপ্রচার আর ঘৃণ্য কর্মকান্ডের মাধ্যমে নাটক করে এতে বিভ্রান্তি আর নোংরা রাজনীতির বিষ মেশানো হয়েছে। এক্ষেত্রে ভুমিকা রেখেছে পক্ষে-বিপক্ষের শক্তি এবং আমাদের মিডিয়া। এরপরও দেশ, মাতা, মাতৃভুমি, মাটির টানে ছুটে যাই। গত দুই দিন আগে শাহবাগ গিয়ে দেখি মাইকে কোরআন তেলওয়াত হচ্ছে যা বিগত দিনগুলোর আন্দোলনে একটি বারের জন্যও দেখা যায়নি। বুঝলাম পরিস্থিতি বেশ ভালই ঘোলাটে করা হয়েছে।
যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবীতে করা আন্দোলনকে কোন ব্যক্তি, গোষ্ঠি বা দল যদি স্বার্থান্বেষণের হাতিয়ার বলে মনে করে তবে আন্দোলনের সফলতা প্রশ্নবিদ্ধ। দুষ্কৃতিকারীরা কিন্তু সুচারুরূপেই বাঙ্গালী এবং মুসলমানের মধ্যে পার্থক্য তৈরি করতে পেরেছে অথচ দেশ এবং ধর্ম কখনই সাংঘর্ষিক নয়। এ পরিস্থিতে সতর্ক থাকাটা জরুরী। সতর্কতাই আপনার প্রাথমিক রক্ষা কবচ। কাজেই সতর্ক থাকতে ক্ষতি কি?
বর্তমানে আমরা যে ঘৃণ্য চক্রান্তে পড়েছি সেখান থেকে সৃষ্টিকর্তাই আমাদের উদ্ধার করতে পারেন। এবং নিঃসন্দেহে সৃষ্টিকর্তার ইশারা ছাড়া যুদ্ধাপরাধের যথার্থ বিচার অকল্পনীয়। স্বাধীনতা অর্জনের জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের সীমাহীন ত্যাগ আর জোড়ালো প্রচেষ্টার সাথে যুক্ত হয়েছিল স্রষ্টার কাছে আন্তরিক আকুতি। কাজেই এখনও অনুরূপভাবে মন থেকে স্রষ্টার প্রতি আকুতি নিয়ে আমাদের আন্দোলনকে আরও শাক্তিশালী জোড়ালো করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
শুধু এতটুকু বুঝি, আমি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই। অপপ্রচারে সারা দিয়ে কোন দলের ব্যানারে নয়, হুজুগে বাঙ্গালী হয়ে নয়, হুজুগে ধর্মান্ধ হয়ে নয়। ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত, নাস্তিকতা, স্বার্থন্বেষী, বেহায়াপনাকে যেমন ঘৃণা করি ঠিক তেমনি মানুষ হত্যা, মসজিদ, পতাকা, শহীদ মিনারের প্রতি অবমাননা, ধর্ম নিয়ে ব্যবসা, বিশৃংখলা/ফাসাদ সৃষ্টিকারী বর্বরদেরও ঘৃণা করি।
বিষয়: বিবিধ
১১৮১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন