জায়নবাদী ইহুদিদের আরেকজন আমৃত্যু শত্রু
লিখেছেন লিখেছেন যাররিনের বাবা ২৪ জুলাই, ২০১৪, ০৫:৩২:০৩ বিকাল
০১
আমার সর্বশেষ কন্যাটির বয়স, প্রায় দশ মাস ছুঁই ছুঁই করছে।
যে কোন বাবা মা'ই জানেন, এ বয়সের শিশুদের আশ্চর্য সব পরিবর্তনের কথা। মাত্র কয়েকমাস আগেও সে নির্বিচারে সকলের কোলে যেতো, আর খুব বাহবা কুড়াতো। তার মায়ের অবশ্য এ ব্যাপারে ক্ষীণ অভিযোগ ছিলো, কোথাও হয়তো একটা অহমে মৃদু আঘাত লাগতো। আজকাল সে মানুষ চিনতে শিখেছে, সুতরাং যার তার কোল আর পছন্দ হয়না। তার মায়ের মুখেও একধরণের মুচকি হাসি স্হায়ী হয়েছে।
অফিস থেকে যখন বাসায় ফিরি, ছোট্ট এ সত্ত্বাটি তখন তার নিজস্ব প্রকাশভঙ্গী দিয়ে খুশীর জানান দিতে থাকে। দুহাত উর্ধমুখী করে রাখা থেকে শুরু করে ভ্রু কপালে তুলে রাখা চোখে অপলক চেয়ে থাকা- কোলে তুলে নেয়া পর্যন্ত। কোলের ভেতরে কখনো কাঁধে পরম নির্ভরতার মাথা রাখা, কিংবা সামনে পেছনে দুলতে দুলতে হঠাৎ করে পাঞ্জাবীর বোতামের দিকে তাকিয়ে নিবিষ্ট হয়ে ধ্যান মগ্ন হয়ে যাওয়া -সে এক স্বর্গীয় অভিজ্ঞতা।
জগতের সকল বাবা মাত্রেই জানেন, শিশুদের কান গলা কাঁধের মাঝে থাকে এক অলৌকিক ঘ্রাণ, যে ঘ্রাণে প্রাণমণ জুড়ায়। সে সুঘ্রাণের অভিজ্ঞতা বর্ণমালায় প্রকাশ করার ক্ষমতা আমার নেই!
কোন কোন দিন, রাত খানিকটা গভীর হয়ে যায়। বাসায় এসে দেখতে হয় গভীর ঘুমে থাকা মায়াবী অবয়ব। মায়ায় আবিষ্ট হতে হতে মশারীখানা উল্টে গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করে নেই ছোট্ট মুখখানি। মাঝে মাঝে চোখে পড়ে কোন এক বেখেয়াল মুহুর্তে ঢুকে পড়েছে একটি কিংবা দু'টি মশা, আর রক্ত পান করে টস টসে হয়ে বসে আছে এদিক সেদিক।
মুহুর্তের মধ্যে মনের মধ্যে ভর করে এক খুনে জিঘাংসা- সেগুলোকে মেরে হাত রক্তাক্ত করার আগ পর্যন্ত যার নিবৃত্তি নেই!
ক্বচিৎ কদাচিত দু' একটা উড়ে লাফিয়ে গড়িয়ে খাটের কোণ বেয়ে চলে যায় আওতার বাইরে, আর রন্ধ্রে রন্ধ্রে রেখে যায় এক বিষাক্ত প্রতিক্রিয়া...
০২
গাজার হত্যাকান্ডের ব্যাপারে আমার মনের গভীরে একটা অপরাধবোধ আছে। ঈমানের দূর্বলতম স্তরে থাকায়, আমার খাওয়া দাওয়া চলা ফেরা কিংবা নিত্যকার কর্মকান্ডের মাঝে এর কোন ছাপ নেই। ফেসবুকের ওয়ালে শেয়ার করা টুকরো টুকরো ঘটনার আবহে মাঝে মধ্যে কিছু সময়ের জন্য মনে পড়ে, একটি ভয়ংকর পাশব ঘটনা ঘটে চলেছে দুর কোন এক দেশে! মনের স্বাভাবিক রিফ্লেক্সে আবার সে অনুভূতি দীর্ঘ হয়ে ওঠেনা, জাগরুকও থাকে না!
শুধু একবার একটা ছোট ভিডিও কণিকায় দেখি একজন বাবাকে, যে তার সোণামণির সেই অলৌকিক ঘ্রাণদেশে প্রাণপণে আঘ্রাণ নিচ্ছে, শেষবারের মত- কেননা সফেদ শুভ্র কাফনে জড়ানো দেহটি তার অন্তিম যাত্রায় রওনা হয়েছে। এক মুহুর্তের জন্য আমার মনে পড়ে আমার কন্যার কথা, আল্লাহর শপথ তার চেয়ে বহু বহুগুণে সুন্দর সে শিশুটির নিষ্পাপ কিন্তু নিষ্প্রাণ মুখশ্রী আমার মনে দাগ কেটে যায়...
একজন বাবার অনুভূতি থেকে ভাবার সাহস হয়না শোকাতুর পিতার অন্তর্দাহ।
শোকের ধুম্রজাল কেটে জেগে থাকে খুনে জিঘাংসা, জেগে থাকে প্রতিশোধের অক্ষম মর্মযন্ত্রণা !
০৩
পৃথিবীতে জায়নবাদী ইহুদিদের আরেকজন আমৃত্যু শত্রুর সংখ্যা বেড়ে যায়!
বিষয়: বিবিধ
১৩৩৪ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : অনেক দিন পর আপনার এই সুন্দর পোষ্টটি হৃদয় উদ্বেল করে দিল।
আপনার সুন্দর লিখাটির জন্য আন্তরিক অভিনন্দন রইলো।
মন্তব্য করতে লগইন করুন