মদীনা সনদের অনুবাদ (পর্ব-১)

লিখেছেন লিখেছেন যাররিনের বাবা ১৪ এপ্রিল, ২০১৩, ০২:৩৩:৫০ দুপুর

১. এটি নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) হতে (জারীকৃত) একটি দলিল, যার ভিত্তিতে মুমিন, কুরাইশ ও ইয়াসরিব (মদীনার) গোত্রভূক্ত মুসলিম, এবং যারা তাদের অনুসারী কিংবা তাদের সাথে কর্মের বন্ধনে (বা লেনদেনে) আবদ্ধ, তাদের সকলের পারষ্পরিক সম্পর্ক নির্ধারিত হবে। তারা সকলে মিলে এক জাতিগোষ্ঠী- একটি উম্মাহ হিসেবে পরিগণিত হবে।

২. কুরাইশ মুহাজিরগণ তাদের প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী রক্তপণ আদায় করতে থাকবে।

৩. যে কোন যুদ্ধে যুদ্ধবন্দীদেরকে দয়া এবং ইনসাফপূর্ণ রীতিতে ব্যবহার করা হবে, যা মুমীনদের স্বভাবসুলভ। (জাহেলীযুগের প্রচলিত সহিংসতা এবং শ্রেণীভেদ বর্জনীয়)

৪. বনি আউফ (মদীনার একটি মূল গোত্র) তাদের মধ্যকার রক্তপণ নির্ধারণ করবে, তাদের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী।

৫. যে কোন যুদ্ধে, যদিও তা মুসলিম বাদে অপর গোত্রগুলোর মধ্যেও সংঘটিত হয়, সে ক্ষেত্রেও যুদ্ধবন্দীদের প্রতি দয়াদ্র এবং ইনসাফপূর্ণ আচরণ করতে হবে, ইসলামপূর্ব রীতিতে নয়।

৬. বনি সা'য়েদা, বনি হারিছ, বনি জুশাম এবং বনি নাজ্জারও উপরোক্ত মূলনীতি অনুযায়ী পরিচালিত হবে।

৭. বনি আমর, বনি আউফ, বানি আন-নাবিত এবং বনি আল আউসও একই মূলনীতি অনুসরণ করবে।

৮. বিশ্বাসী মুসলিমগণ তাদের যুদ্ধবন্দীদের মুক্ত করার জন্য মুক্তিপণের ব্যবস্হা করবে, এবং এ দায়িত্ব সামগ্রিকভাবে উম্মাহ (জাতিগোষ্ঠী)-এর সকলের উপরেই বর্তাবে, শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট পরিবারের উপরে নয়।

৯. কোন মু'মিন অপর মু'মিনের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার আজাদকৃত দাসের সাথে মিত্রতা গড়ে তুলবে না।

১০. আল্লাহকে ভয় করে এমন সকল মু'মিন, যেকোন ধরণের বিশ্বাসঘাতকদের প্রতিরোধ করবে। সেই সাথে যারাই (জুলম) বেইনসাফি, পাপাচার, দূর্নীতি কিংবা শত্রুতার ইন্ধনদাতা তাদেরকে প্রতিরোধ করবে।

১১. এ ধরণের কার্যক্রমে জড়িত যে কেউ, এমনকি সে যদি আপন পুত্র বা স্বজনদের মধ্য হতেও হয়, তাকেও ছাড় দেয়া হবেনা।

১২. কোন মু'মিন অপর কোন মু'মিন ভাইকে হত্যা করবে না, কোন কাফিরের স্বার্থে (এমনকি সে কাফির যদি তার নিকটাত্নীয়ও হয়)।

১৩. কোন বিশ্বাসী মু'মিন কোন কাফিরকে অপর বিশ্বাসী মু'মিনের বিরুদ্ধে সহায়তা করবে না।

১৪. আল্লাহর নামে দেয়া সুরক্ষা সকলের জন্যই মান্য এবং প্রযোজ্য হবে। মু'মিনদের মধ্যে দূর্বলতম কেউ যদি কাউকে সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দেয়, তা সকল মু'মিনের জন্য অবশ্যপালনীয় হবে।

১৫. সকল বিশ্বাসী মু'মিন (গোত্র নির্বিশেষে) পরষ্পর বন্ধু হিসেবে পরিগণিত হবে।

১৬. যে সকল ইহুদী মু'মিনদের মিত্র হবে, তাদেরকে সকল প্রকার সহায়তা করা হবে, এবং তাদের সমানাধিকার স্বীকৃত হবে। (রাষ্ট্রের আনুগত্য স্বীকার সাপেক্ষে তারা অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং আইনগত সকল অধিকার ভোগ করবে)

১৭. কোন ইহুদীকেই ইহুদী হওয়ার জন্য কোন প্রকার বৈষম্য করা হবেনা।

১৮. ইহুদীদের শত্রুদের (এমনকি সে যদি বিশ্বাসীদের মিত্রও হয়) সহায়তা করা হবে না।

১৯. মদীনার অধিবাসীদের সাথে আংশিক শান্তিচুক্তি অগ্রহনযোগ্য। (অর্থ্যাৎ মদীনার অধিবাসী সকলে একই শত্রুতা বা মিত্রতার অধীন, আলাদা আলাদা ভাবে নয়)

২০. মু'মিনগণ যখন আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে লিপ্ত থাকবে, সে যুদ্ধাবস্হায় মদীনার কারো সাথে আলাদাভাবে মিত্রতা চুক্তি করা যাবেনা।

২১. যুদ্ধাবস্হা বা শান্তির সময়কার সকল শর্তাবলী, এবং অবস্হাসমূহ মদীনার সকলের উপরেই সমভাবে প্রযোজ্য হবে।

২২. যে কোন যুদ্ধযাত্রায়, একজন ঘোড়সওয়ার একজন সহযোদ্ধার সাথে তার বাহন ভাগাভাগি করবে।

২৩. একজন মু'মিন আল্লাহর পথে লড়াই রত অপর বিশ্বাসী মু'মিনের রক্তের প্রতিশোধ নেবে।

২৪. বিশ্বাসী মু'মিনগণ ঈমানের বলে বলীয়ান এবং কুফরের বিরুদ্ধে দৃঢ়পদ, এবং ফলশ্রুতিতে আল্লাহর প্রদত্ত হিদায়েতের সম্মানে ভুষিত। অপরাপর গোত্রসমূহও এ মর্যাদা অর্জনে অভিলাষী হওয়া উচিৎ।

(চলবে...)

(অনুবাদটি এ লিংক ) থেকে নেয়া এবং ইংরেজীর খানিকটা দূর্বল ভাবানুবাদ। কোন ধরণের ভুল কিংবা মূল আরবী'র সাথে কোন অসংগতি থাকলে তা মন্তব্যের মাধ্যমে জানালে সংশোধন করে নেয়া হবে।)

বিষয়: বিবিধ

২৩৯৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File