ইয়াকুব মেমন
লিখেছেন লিখেছেন আবদুল্লাহ রাসেল ৩০ জুলাই, ২০১৫, ০১:৩৪:৩৭ দুপুর
চট্টগ্রামে ৭নম্বর বিপদ সংকেত চলছে। 'কোমেন' নামে একটা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে এখানে যেকোনো মুহূর্তেই। আকাশের অবস্থা ভালো না। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছে। কিন্তু এই ঘূর্ণিঝড় বা দুর্যোগ পরিস্থিতি আমাকে এতোটুকু বিচলিত করতে পারছে না। প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়ার গতিতে আমার মন-মস্তিস্কে এখন আলোড়িত হচ্ছে শুধুই একটি নাম। ইয়াকুব মেমন।
মানুষটার নাম গতকালও আমি শুনিনি, চিনতামও না তাকে। আজ সকালে ঘুম থেকে উঠেই জীবনে প্রথমবারের মতো তার নাম শুনেছি। শুনেই তার ব্যাপারে যেখানে যা খবর ছাপা হয়েছে তা পড়ে ফেলেছি। ভীষণ আফসোস হচ্ছে, কেন এতো দেরীতে চিনলাম, আরো আগে চিনলে হয়তো বা.....
কী-ই বা করতে পারতাম! ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে মানুষটার পক্ষে দু'চার শব্দ লিখতাম হয়তো। ক্লিয়ার করে বলি, মানুষটা অপরাধী কিনা আমি জানি না। কিন্তু ১৯৯৩ সালে সংঘটিত মুম্বাই হামলায় জড়িত থাকার অপরাধে তাকে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়েছিল। আজ সকালে তা কার্যকর করা হয়েছে। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মেনে নিতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। শহীদ আবদুল কাদের মোল্লা এবং শহীদ কামারুজ্জামানের মতোই তার উপর ইতিহাসের নিকৃষ্টতম জুলুম করা হয়েছে বলে ঘটনার আগাগোড়া পড়ে মনে হচ্ছে। ভারতের একটি অংশ কোনো অবস্থায় এই রায় মেনে নিচ্ছে না। সেখানকার সংসদ সদস্য আসাদউদ্দিন ওয়াইসি গতকাল এই রায়ের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে পার্লামেন্ট কাঁপিয়েছেন, আমি শুনেছি সেই বক্তব্য। তিনি বলেছেন, ''কেবল মুসলিম বলেই ইয়াকুব মেমনকে অন্যায়ভাবে ফাঁসি দিয়েছে ইন্ডিয়ান সরকার। সরকার ধর্মের ভিত্তিতে তাকে ফাঁসি দিতে চাচ্ছে। ইয়াকুব মেমন মুসলিম হওয়ার জন্যই তাকে ফাঁসি দেয়া হচ্ছে। যদি ফাঁসি দিতে হয় তাহলে সমস্ত অপরাধীদের দেয়া উচিত, শুধু এক জনকেই কেন?'' অভিনেতা সালমান তার টুইটারে লিখেন, 'টাইগারকে ধরে শাস্তি দাও, ইয়াকুবকে নয়। একজন নিরীহ মানুষকে মেরে ফেলা মানে মানবতাকেই কুলুষিত করা।' (টাইগার মেমন হচ্ছে ইয়াকুবের ভাই, সে এই হামলার একজন অভিযুক্ত, তাকে না পেয়ে ইয়াকুবকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে বলে অনেকেই মনে করে)
প্রহসনের বিচারের মাধ্যমে নিরীহ মানুষকে ফাঁসিতে ঝোলানোর জন্য ভারত অনেক আগে থেকে পটু। এর আগে তারা কাশ্মীরের প্রখ্যাত আলেম ও ইসলামী ব্যক্তিত্ব আফজাল গুরুকে অভিযোগ প্রমান করতে না পেরেও এক প্রহসনের বিচার মঞ্চস্থ করে ফাঁসি দেয়। একই কায়দায় মকবুল বাটকেও তারা হত্যা করে। আফসোস, বাংলাদেশও এভাবে একের পর এক এভাবে নিরীহ মানুষদেরকে হত্যা করছে। পৃথিবীর যেই প্রান্তেই জুলুম হোক না কেন, বরদাশত করতে পারি না।
বন্ধ হোক জুলুম, বন্ধ হোক প্রহসন।
বিষয়: বিবিধ
১৪৯৪ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন