একদম কাছে আসার সুযোগ, সম্পর্ক নিবিড় করার কিছু টিপস

লিখেছেন লিখেছেন আবদুল্লাহ রাসেল ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ১১:৫২:৪৭ রাত

না, শিরোনাম দেখে আঁতকে ওঠার দরকার নেই। কেউ যদি ভেবে থাকেন প্রিয়জনের কাছে আসার এবং সম্পর্ক নিবিড় করার জন্য আমি এখন কিছু টিপস শেখাবো তাহলে আপনি ভুল পোস্টে চলে এসেছেন। তবে ভুল পোস্টে যেহেতু চলেই এসেছেন, তাই ঝটপট পোস্টটা পড়ে ফেলুন, কাজে লাগবে।

আমি মনে করি, আমার এই পোস্ট যারা পড়বেন তাদের ৯৯%-ই জিলহজ্ব বা যুলহিজ্জ্বা মাসের গুরুত্ব সম্বন্ধে কম-বেশী জানেন, আলহামদুলিল্লাহ্‌। এটি চাট্টিখানি কথা নয়। বিশেষ করে এই মাসের প্রথম ১০দিন যে অত্যন্ত বরকতপূর্ণ এবং সাওয়াবে ঠাসা এই বিষয়ের জ্ঞান যে আমাদের আছে তার জন্য আল্লাহ্‌র শুকরিয়া আদায় করি। কিন্তু জ্ঞান থাকা স্বত্বেও আমাদের মধ্যে খুব কম লোকই আমলের ব্যাপারে কম মনোযোগী। এই যে যুলহিজ্জ্বা মাস শুরু হবে এই ব্যাপারে আমরা অনেকেই হয়তো বেখেয়াল। মাস শুরু হয়ে যাওয়ার পর তারপর হঠাৎ মনে পড়বে এবং আফসোস হবে ‘ইশ, আমার তো মনেই ছিল না’। তাই সবাইকে একটু রিমাইন্ডার দেয়ার জন্যই আমার ছোট্ট এই পোস্ট।

দেখুন, আল্লাহ্‌ পবিত্র ক্বুরআনে এই ১০ দিনের ব্যাপারে কসম করে বলেছেন, ‘কসম ভোরবেলার। কসম দশ রাতের।’ {সূরা আল-ফাজর, আয়াত : ১-২} সকল মুফাসসিরগণের মতে, আয়াতে ‘কসম দশ রাতের’ বলে এই মাসের প্রথম ১০ দিনের দিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। আর আল্লাহ্‌ যখন কোনো কিছুর কসম করেন তখন তার মর্যাদা কত উপরে তা ঠাণ্ডা মাথায় ভেবে দেখবেন।

এই তো গেল আল্লাহ্‌র কথা, এইবার আসুন তাঁর রাসূল সাঃ কী বলেন। এই দিনগুলোকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ দিন বলে আখ্যায়িত করেছেন। যেমন জাবির রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, ‘পৃথিবীর দিনগুলোর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিনগুলো হলো দশকের দিনসমূহ। অর্থাৎ যিলহজ্বের (প্রথম) দশদিন। জিজ্ঞেস করা হলো, আল্লাহর পথে জিহাদেও কি এর চেয়ে উত্তম দিন নেই? তিনি বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদেও এর চেয়ে উত্তম দিন নেই। হ্যাঁ, কেবল সে-ই যে (জিহাদে) তার চেহারাকে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে।’ [মুসনাদ বাযযার : ১১২৮; মুসনাদ আবী ই‘আলা : ২০৯০]

সুবাহানাল্লাহ্‌।

এতোক্ষণ এই ১০ দিনের মর্যাদার কথা পড়লেন। এখন আসুন, এই ১০ দিনে আমরা কী কী ইবাদাত করতে পারি তা একটু জেনে নিই।

১) এই ১০ দিনে যতটুকু সম্ভব নফল রোযা রাখার চেষ্টা করুন। বিশেষ করে আরাফার দিন রোযা রাখার মর্যাদা সম্বন্ধে হাদীসে এসেছে।

২) বেশী বেশী তাহলীল (লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ), তাকবীর (আল্লাহু আকবার) ও তাহমীদ (আল-হামদুলিল্লাহ) পড়ুন। আর হাঁটতে বসতে আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ পাঠ করুন।

৩) জামায়াতের সাথে সালাত আদায় তো করবেনই, এই ১০ দিন তাহাজ্জুদও কন্টিনিউ করুন। আল্লাহ্‌র একদম কাছাকাছি চলে যাওয়ার জন্য, আল্লাহ্‌র সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধির জন্য তাহাজ্জুদে আল্লাহ্‌র কাছে বেশী বেশী কান্নাকাটি করুন, সিজদায় লম্বা সময় পড়ে থাকুন।

৪) বেশী বেশী দান সদকাহ করুন। রাসূল সাঃ তো এইসব দিনগুলোতে দান করতে করতে পকেট খালি করে ফেলতেন।

৫) যাদের তাওফীক আছে হজ্ব করুন, পশু কুরবানী করুন।

৬) তাওবাহ করুন, একদম একনিষ্ঠ মনে আল্লাহ্‌র কাছে নিজের গুনাহর জন্য অনুশোচনা করুন, আল্লাহ্‌র কাছে ফিরে আসুন।

৭) অন্যান্য যতো ভালো কাজ আছে করুন। বিশেষ করে বেশী বেশী দ্বীনি কাজ (দাওয়াত, প্রশিক্ষণ, সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজ হতে নিষেধ) করুন।

একটু সচেতনতা এবং আন্তরিকতা থাকলেই আগামী ১০ দিন আমরা ইবাদাতের মাধ্যমে আল্লাহ্‌র আরো কাছে আসার এবং সম্পর্ক নিবিড় করার সুযোগ পাব ইনশা আল্লাহ্‌। আল্লাহ্‌ আমাদেরকে ভালো কাজ করার তাওফীক দিন।

বিষয়: বিবিধ

১১০৬ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

268472
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১২:০৭
শিশির ভেজা ভোর লিখেছেন : অত্যন্ত ভালো পরামর্শ। আল্লাহ আমাকে এবং সকল মুমিনকে যথাযথভাবে পালন করার তৌফিক দান করুন। আমিন
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১২:২৯
212163
আবদুল্লাহ রাসেল লিখেছেন : ধন্যবাদ। Happy
268475
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১২:১০
আফরা লিখেছেন : শিশির ভেজা ভোর লিখেছেন : অত্যন্ত ভালো পরামর্শ। আল্লাহ আমাকে এবং সকল মুমিনকে যথাযথভাবে পালন করার তৌফিক দান করুন। আমিন ।

আমি ও বললাম আমীন
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১২:৩০
212164
আবদুল্লাহ রাসেল লিখেছেন : ধন্যবাদ। Happy

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File