হেফাজত নিয়ে কথকতা
লিখেছেন লিখেছেন আবদুল্লাহ রাসেল ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১২:০৪:৫৯ রাত
হেফাজতে ইসলামের কালকের সমাবেশ হচ্ছে না বলে যারা হতাশ হয়ে পড়েছেন এবং হতাশ হয়ে একের পর হতাশাজনক স্ট্যাটাস প্রসব করে যাচ্ছেন তাদেরকে বলছি,
কাল হেফাজতের সমাবেশ হচ্ছে না তো কী হয়েছে? আগামী ২৭শে ডিসেম্বর মুক্তাঙ্গনে হিজবুত তাহরীরের সমাবেশ আছে না! ঐটাতে অংশ নিয়ে দেখেন কিছু করতে পারেন কিনা, সরকার পতন বা লীগ নিধন যার যা খুশি তা করার পরিকল্পনা নিয়ে মুক্তাঙ্গনে চলে যান।
একটি কথা মনে রাখবেন, ২০১৩-তে আওয়ামী লীগ যে স্ট্যান্ড নিয়েছে তা ’৭২-’৭৫ এর আওয়ামী লীগকেও হার মানায়। তখন আওয়ামী লীগ দেশ ও জনতার সমস্ত কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করে দিয়ে পুরো দেশটাকে নিজেদের কব্জায় নিয়ে ফেলেছিল। দেশের কোটি কোটি জনতা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছিল, কিন্তু তারপরেও আওয়ামী লীগ সাধারণ জনতার চাওয়া-পাওয়াকে দুই পয়সার দাম দেয়নি, দেশকে নিজেদের হাতের মুঠোয় নিয়ে নিয়েছিল। আওয়ামী লীগ এতোটাই দাম্ভিক হয়ে গিয়েছিল যে তারা ভেবেছিল তারা বুঝি চিরকাল ক্ষমতায় থাকবে, কেউ কোনদিন তাদের বিরুদ্ধে কথা বলবে না, আন্দোলন করবে না। কিন্তু আল্লাহ্ সুবহানাহু তা’আলা ’৭৫ এর ১৫ই আগস্ট কী করেছিলেন? এক রাতের মধ্যে পুরো আওয়ামী লীগকে কী আল্লাহ্ আকাশ থেকে মাটিতে আছড়ে ফেলেননি?
এই ২০১৩-তেও আওয়ামী লীগ ভাবছে তাদের বিরুদ্ধে যে যতোই আন্দোলন করুক, কোন লাভ হবে না। তারা ক্ষমতায় থাকবেই। বিএনপি-জামায়াত লাগাতার হরতালের পর একনাগাড়ে ৫ সপ্তাহ অবরোধ করছে। হরতাল-অবরোধ যতই সফল হোক, আওয়ামী লীগ কি এইসবকে গায়ে মাখছে? হেফাজত ৪ই এপ্রিল লংমার্চ এবং ৫ই মে'র অবরোধে লক্ষ লক্ষ জনতা নিয়ে ঢাকায় হাজির হয়েছিল। তারা রাতে শাপলা চত্বরে অবস্থান করার পরিকল্পনা করেছিল আর এতে আওয়ামী লীগ বুঝে গিয়েছিল যে এক রাত যদি হেফাজত ঢাকায় অবস্থান করে তাহলে তো মহা কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে, তখন আবার গদি ছেড়ে পালাতে হতে পারে। তাহলে কী করা যায়? লক্ষ লক্ষ গুলি, বোমা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ল হেফাজতের উপর। ফায়ার করে ইচ্ছে মতো মানুষ মেরে তাড়িয়ে দিয়েছিল লক্ষ লক্ষ জনতাকে। এখন যদি বিএনপি-জামায়াত-হেফাজত সবাই একসাথেও নামে, তাহলে লক্ষ লক্ষ জনতাকে ঢাকার রাজপথে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করতে আওয়ামী লীগের এতোটুকুও হাত কাঁপবে না, যেরকম ৫ই মে হাত কাঁপেনি, এই বছর জামায়াত-শিবিরের শত শত নেতা-কর্মীকে হত্যা করতে যেমন হাত কাঁপেনি।
সুতরাং এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগ যে হিংস্র রুপ ধারণ করে ক্ষমতার মসনদে বসে আছে, তাদেরকে হেফাজত, অবরোধ এইসব দিয়ে আপনি ফেলতে পারবেন না। আমি বিশ্বাস করি, ’৭৫ এর ১৫ই আগস্ট যেমন মানুষের কল্পনার বাইরে আল্লাহ্র ইচ্ছায় একটি ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটে গিয়েছিল। তেমনি এবারো এই হিংস্র আওয়ামী লীগকে একমাত্র আল্লাহ্র গায়েবি আযাবই পারে ক্ষমতার মসনদ থেকে সোজা বঙ্গোপসাগরে নিয়ে ফেলতে। এই ছাড়া আপাতত আমি আর কোন পথ দেখছি না। বাকীটা আল্লাহ্ই ভালো জানেন। অতএব বেশী বেশী আল্লাহ্র ইবাদাত করুন, রাত জেগে তাহাজ্জুদ পড়ুন এবং যখন রাজপথে ডাক আসবে তখন রাজপথে হাজির হয়ে যাবেন। হেফাজত কী করল, বিএনপি কী করল, জামায়াত কী করল এইসব ভেবে বুকের মধ্যে কোন হতাশা-টতাশাকে স্থান দেয়া যাবে না, মাইন্ড ইট।
বিষয়: বিবিধ
১৮৯৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন