আওয়ামী লীগ দলটি ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে যাচ্ছে
লিখেছেন লিখেছেন আবদুল্লাহ রাসেল ০৯ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১০:০২:০০ রাত
হাসিনার পলিটিক্স হিংস্র পলিটিক্স, নোংরা পলিটিক্স। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে ১৮ দলীয় জোটকে তার অধীনে নির্বাচন মেনে নেয়ার জন্যই আবদুল কাদের মোল্লার ‘ফাঁসী কার্যকর’-কে তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করছেন। চাপে পড়ে জামায়াত বিএনপিকে চাপ দিবে এটাই হাসিনার চাওয়া। ‘আমার অধীনে নির্বাচন মেনে নাও এবং বিএনপিকে রাজী করাও নইলে ফাঁসী দিয়ে দিবো’-এরকম একটি চাপ জামায়াতকে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু জামায়াতের ৭২ বছরের রাজনৈতিক ইতিহাসে চাপে পড়ে কোন অবৈধ সমঝোতা বা আপসরফার একটি ঘটনাও নেই। জামায়াত যদি অবৈধ সমঝোতায় বিশ্বাসী হতো তাহলে আজকের যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে এইসব প্রহসনের রায়ের কথা মাথায় রেখে এরশাদের মতো পল্টি মেরে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের সাথে গাঁটছড়া বাঁধতে পারতো। আর আওয়ামী লীগও বিনা বাক্য ব্যয়ে জামায়াতকে লুফে নিত। আর তখন মিডিয়া, বাম-রাম, নাস্তিক, ভারত সবাই জামায়াতকে ‘সহীহ ইসলামী’ দল খেতাব দিয়ে সযত্নে কোলের উপর তুলে রাখতো। কিন্তু জামায়াত শেখ হাসিনার নোংরা পলিটিক্সের কারণে আওয়ামী লীগের সাথে জোট বাঁধার কথা মাথায়ই আনেনি। ২০০৮ সালের কথা বাদ দিলাম, এই মুহূর্তে জামায়াত যদি আওয়ামী লীগের সাথে এতোটুকু আপস করে তাহলে আল্লাহ্র কসম ঘণ্টা খানেকের মধ্যে আবদুল কাদের মোল্লার মৃত্যু পরোয়ানা বাতিল করা হবে, একই সাথে সুপ্রিম কোর্টের মাধ্যমে এই বিচারের পুনঃতদন্তের অনুমতি দিবে।
আওয়ামী লীগ এর আগে পিরোজপুরের ওলামা লীগের এক নেতাকে দিয়ে সাঈদী সাহেবের কাছে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছিল, সেই চিঠি মুহূর্তের মধ্যে সাঈদী সাহেব ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলেন এবং ঐ ওলামা লীগের নেতাকে সাফ জানিয়ে দেন যাতে কোনদিন সাঈদী সাহেবের সামনে আর না আসে। এই হচ্ছে জামায়াত। আদর্শিক কারনেই জামায়াত আওয়ামী লীগের সাথে কোনরকম আপসে যাবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসীর রায় কার্যকরের সম্ভাবনা বেশী। কিন্তু এতে কোন সন্দেহ নেই যে, রায় কার্যকরের পর দেশে ভয়াবহ অরাজকতা সৃষ্টি হবে এবং হাসিনার হিংস্র পলিটিক্সের কারণে দেশের প্রতিটি এলাকায় এলাকায় আওয়ামী-যুব-ছাত্রলীগের বহু নেতা-কর্মী নিহত হতে পারে, সরকার যেমন এটা কন্ট্রোল করতে পারবে না জামায়াতের হাই কমান্ডও এটা কন্ট্রোল করতে পারবে না। আর আবদুল কাদের মোল্লার শাহাদাতকে বুকে ধারণ করে সারা দেশের একটিভ-ইনএকটিভ জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের সাংগঠনিক মান কোন্ উচ্চতায় গিয়ে পৌঁছে তা আল্লাহই ভালো বলতে পারবেন। আল্লাহ্ চাইলে অবস্থা এমন হতে পারে, সারা দেশে নিজেকে আওয়ামী লীগ পরিচয় দেয়ার মতো একজনকেও খুঁজে পাওয়া যাবে না। আর আল্লাহ্র সাহায্য যদি এসে যায়, হঠাৎ এমন কোন মিরাকল ঘটনা যদি দেশে ঘটে যায় (যেমনঃ আরেকটি ১৫ই আগস্ট বা ট্রাইব্যুনালের কোন জারিজুরি ফাঁস বা হাসিনার শুভবুদ্ধির উদয়) তাহলে আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসী হবে না বলে আমার বিশ্বাস। উপরন্তু এমনও হতে পারে, যদি আল্লাহ্ চান যেই দড়িতে আবদুল কাদের মোল্লাকে ফাঁসী দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে সেই দড়িতে হাসিনা নিজেই ঝুলে পড়তে পারেন।
আর সব কথার শেষ কথা বলি, আবদুল কাদের মোল্লাকে ফাঁসী দেয়া হোক বা না হোক, এই ট্রাইব্যুনালের প্রহসনের বিচার নিয়ে যে অচিরেই আওয়ামী লীগকে তার রাজনৈতিক ইতিহাসের ভয়াবহ গ্যাঁড়াকলে পড়তে হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। তাই আওয়ামী লীগ এইসব রায় কার্যকর, অবৈধ নির্বাচন মাথা থেকে ফেলে দিয়ে যত তাড়াতাড়ি সেইফ এক্সিটে চলে যাবে ততই দলটির জন্য মঙ্গলজনক।
বিষয়: রাজনীতি
১১৯৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন