জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্রশিবির, মহিলা জামায়াত এবং ছাত্রীসংস্থার সকল স্তরের সদস্য, কর্মী এবং সমর্থকদের অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে দোয়া এবং অভিনন্দন জানাচ্ছি

লিখেছেন লিখেছেন আবদুল্লাহ রাসেল ১৬ নভেম্বর, ২০১৩, ১০:৩৮:৩৯ সকাল

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জামায়াতে ইসলামীকে চিরতরে নির্মূল করে দেয়ার মিশন হাতে নেয়। তাদের পরিকল্পনা ছিল সর্বোচ্চ ৩ বছরের মধ্যে তারা জামায়াতে ইসলামীকে চিরতরে নির্মূল করে দিবে। কয়েকটি মেজর অভিযোগ দাঁড় করানো হয় জামায়াতের বিরুদ্ধে।

১) যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ।

২) জামায়াতে ইসলামী কোনো গণতান্ত্রিক দল নয়, এটি হচ্ছে একটি সহিংস এবং সশস্ত্র দল।

৩) জামায়াতের সাথে জঙ্গি কানেকশান।

এই তিনটি অভিযোগের মধ্যে তিন নম্বর অভিযোগটি কোন অবস্থায় প্রমান করা যায় নি, কারন জঙ্গিবাদের মাধ্যমে যারা ইসলাম প্রতিষ্টা করতে চায় তাদের সাথে যে জামায়াতের আকাশ-পাতাল পার্থক্য তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে আওয়ামী লীগ, তাই এই পয়েন্টটি নিয়ে তারা আর বেশী মাথা ঘামায়নি। দুই নম্বর অভিযোগটি প্রমানে আওয়ামী লীগ অনেক চেষ্টা করেছে, কিন্তু কিছুতেই জামায়াতের ভেতর থেকে অস্ত্র বের করা যায় নি। গত ৫ বছরে দেশের কোনো অঞ্চলে জামায়াতে ইসলামীর কোনো মিছিলে লাঠি আর লোহার পাইপ ছাড়া কোনো ধরণের আগ্নেয়াস্ত্রের ছবি আওয়ামী লীগ মিডিয়ার মাধ্যমে জাতিকে দেখাতে পারেনি। প্রথম যে অভিযোগটি আওয়ামী লীগ জামায়াতের বিরুদ্ধে প্রতিষ্টা করার চেষ্টা করেছে তা অনেকাংশেই ভণ্ডুল হয়ে গেছে আলহামদুলিল্লাহ্‌। ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতাদের পক্ষে যেসব আইনজীবী লড়েছেন মাশাল্লাহ, গায়ের জোরে বিচারকরা প্রহসনের রায় দিলেও আইনজীবীদের অকাট্য যুক্তি যেভাবে আওয়ামী আইনজীবী আর বিচারকদের নাস্তানাবুদ করেছে তাতে জনগণের কাছে এই ধারণা বদ্ধমূল হয়েছে যে জামায়াতে ইসলামীর অভিযুক্ত নেতারা ১৯৭১ সালে কোনো মানবতাবিরোধী অপরাধ করেননি।

এর পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার বিচক্ষণতার সাথে নেয়া পদক্ষেপ, রাজপথে নেতা-কর্মীদের ত্যাগ ও কুরবানি, বিশেষ করে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাহসী ভূমিকা সরকারের সমস্ত পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিয়েছে। মজলিশে শুরার ভূমিকা, নেতা-কর্মীদের ত্যাগ ও কুরবানি যদি যথাযথ না হত, তাহলে আল্লাহ্‌র সাহায্য পাওয়া যেত না। আর তখন জামায়াতকে নিষিদ্ধ বা নির্মূল করা আওয়ামী লীগের জন্য সহজ হয়ে যেত। কিন্তু আওয়ামী সরকারের ৫ বছর শেষে অনেক নেতা-কর্মীর শাহাদাত এবং কিছু আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি স্বত্বেও জামায়াত জামায়াতের জায়গায় ঠিকই আছে, উপরন্তু আগের তুলনায় জামায়াতের সাংগঠনিক শক্তি অনেক গুন বৃদ্ধি পেয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ্‌। এই জন্য জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা, কর্মপরিষদ, রুকন এবং সকল স্তরের কর্মী, ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দ, সদস্য, কর্মী, মহিলা জামায়াত ও ছাত্রীসংস্থার বোনদের জানাই প্রাণঢালা অভিনন্দন।

গত ৫ বছর রাজপথ এবং নিজ নিজ অবস্থানে আপনাদের ত্যাগ এবং কুরবানিই আওয়ামী লীগের সমস্ত পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিয়েছে। তারা জামায়াতকে নির্মূল করে দিতে চেয়েছিল, কিন্তু মানুষ যেভাবে জামায়াতকে গ্রহণ করেছে, তাতে আওয়ামী লীগ আর সেই দুঃসাহস দেখাচ্ছে না। আল্লাহ্‌র কি অশেষ রহমত, জামায়াতকে ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে ফেলে দিতে গিয়ে এখন আওয়ামী লীগ নিজেই ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। আওয়ামী লীগের পতন হয়ে যাচ্ছে এটা ভেবে আমাদের কর্মকাণ্ড কোন প্রকার শিথিল না করে আর কয়েকটা দিন এবং সপ্তাহ আমাদের পরিশ্রম করতে হবে। গত ৫ বছর শারীরিক এবং আর্থিক ভাবে আমরা যেভাবে সংগঠনকে শক্তিশালী করেছি, আর কিছুদিন আমাদের এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে, এরপর দেখেন আওয়ামী লীগ কোথায় গিয়ে পালায়।

‘’অতএব আল্লাহর প্রতি ধারণা করো না যে, তিনি রসূলগণের সাথে কৃত ওয়াদা ভঙ্গ করবেন নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রতিশোধ গ্রহণকারী’’

-সুরা ইবরাহীমঃ ৪৭

বিষয়: বিবিধ

১৯২৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File