‘’তোমরা যারা আওয়ামী লীগকে সমর্থন কর’’ (পর্ব-২)

লিখেছেন লিখেছেন আবদুল্লাহ রাসেল ০১ নভেম্বর, ২০১৩, ০২:৪৯:১৯ দুপুর

‘৭২ সালের শুরুতে মুক্তিযুদ্ধের ভাইরাস সব মেরে হাত সাফ করে আওয়ামী লীগ নেমেছিল নতুন নৃশংসতায়। ইসলামী রাজনীতি নিষিদ্ধ করে দিয়ে সকল ইসলামী সংগঠনগুলোর এই বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার কেড়ে নেয়া হয়। ইসলামী সংগঠনগুলো যে পরিমাণ নির্মমতার শিকার হয়েছিল, তা একটি সভ্য দেশে সম্পূর্ণ বেমানান। যত্র-তত্র তাদেরকে গ্রেফতার-হত্যা যেন ডাল-ভাত হয়ে গিয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশে। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কথা বলার কোন মানুষ নেই যেন, কিন্তু আল্লাহ্‌র কি রহমত, যে বামপন্থীদের প্ররোচনায় শেখ মুজিব সংবিধানে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ এবং ‘সমাজতন্ত্র’ সংযোজন করেছিলেন, সেই বামপন্থিদের মধ্য থেকে একটি দলকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আল্লাহ্‌ দাঁড় করিয়ে দেন, আওয়ামী লীগের হত্যা, ধর্ষণ, দুর্নীতি, লুটপাটের বিরুদ্ধে তারা যখন কথা বলা শুরু করল, তখন তাদের বিরুদ্ধেও হার্ডলাইনে চলে যায় আওয়ামী লীগ। ‘৭২-’৭৫ এর মধ্যে রক্ষীবাহিনী নামক একটি আজরাইল বাহিনী তৈরি করে ইসলামিস্টদের পাশাপাশি হাজার হাজার বাম নেতা-কর্মীদের হত্যা করা হল, বাংলাদেশের এমন কোন রাস্তা নাই, এমন কোন অলি-গলি নাই, যেখানে যখন তখন কারো না কারো লাশ পড়ে থাকত। প্রতিদিন বাতাশে লাশের গন্ধ। এই নির্মমতা ’৭১ এর নির্মমতাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিল, ’৭১-এ পাকিস্থানিরা হত্যা করেছে এটা ভেবে মনকে বুঝ দেয়া যায়, কিন্তু দেশ স্বাধীনের পর দেশের জনগণের উপর এ কেমন নির্মমতা?

আল্লাহ্‌র অসীম রহমতে ’৭৫ যেন এক পশলা রহমতের বৃষ্টি হয়ে এই দেশের মানুষের উপর এসেছিল। আওয়ামী নির্মমতা থেকে জাতি রক্ষা পেল। সেনাবাহিনী দেশ পরিচালনা করেছে, পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান দল গঠন করে ক্ষমতায় এসেছিল, তাদের দলের অনেক নেতার বিরুদ্ধেও যে অবৈধ সুবিধা গ্রহণের অভিযোগ ছিল না তা নয়, কিন্তু জিয়াউর রহমান বা তার দল ঐ সময় কোনো রাজনৈতিক নেতা-কর্মীর উপর অত্যাচার করেছে এই কথা জিয়ার কোনো শত্রুও বলতে পারবে না। সারা দেশে এক নির্মল সুবাতাস বইছিল, কোথাও কোন অনাচার নেই, সবাই যার যার মতো করে পরিশ্রম করছে, দেশ গড়ার কাজে সবাই নেমে পড়েছে, কি ইসলামিস্ট, কি সমাজতন্ত্রী, কি জাতীয়তাবাদী সবাই রাজনীতি করার সমান সুযোগ পেয়ে যার যার রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাচ্ছে, আর এতেই আওয়ামী লীগের যা বারোটা বাজার বেজে গিয়েছিল, দেশে সুন্দর রাজনৈতিক পরিবেশে একমাত্র তারাই জনগণের মধ্যে কোনো জায়গা করে নিতে পারল না, কারন আওয়ামী লীগের মতো একটি ফ্যাসিস্ট দল কিভাবে সুন্দর রাজনৈতিক পরিবেশে রাজনীতি করবে?

রাজনীতি করার জন্য তাদের তো দরকার ক্ষমতা, টাকা এবং বিশাল গুন্ডা বাহিনী, যারা নেতার নির্দেশ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে হত্যাযজ্ঞ এবং তাণ্ডবলীলা চালাতে পারে। এরপর আওয়ামী লীগ ক্ষমতা এবং টাকার লোভে ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দেয়(২০০৭-’০৮ এ তত্বাবধায়ক সরকারের সময় গ্রেফতার হয়ে ওবাইদুল কাদেরের জবানবন্দীতে এই তথ্য জানা যায়), অথচ তারাই বলেছিল ‘নির্বাচনে যারা যাবে তারা জাতীয় বেঈমান’- ছলচাতুরী করেও তারা সেই সময় ক্ষমতায় যেতে পারেনি, ’৯১-তেও তারা অনেক দাঙ্গা-হাঙ্গামা করেছিল কিন্তু তাদের কোন চেষ্টাই সফল হয়নি।

(চলবে)

বিষয়: রাজনীতি

১০৯৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File