কামরান ভাইয়ের চরিত্র, ফুলের মত পবিত্র ।
লিখেছেন লিখেছেন নষ্ট প্রজন্ম ০৭ জুন, ২০১৩, ০৪:৩১:৪৩ বিকাল
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সদ্য বিদায়ী মেয়র আওয়ামীলীগ নেতা বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের দ্বিতীয় স্ত্রী ডালিয়া সুলতানা হেপীকে নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশের পর এবার বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে অনেক অজানা তথ্য। তবে কামরান দ্বিতীয় স্ত্রীর বিষয়টি অস্বীকার করে আসলেও অনেকেই মনে করছেন, কামরান ‘দ্বিতীয় স্ত্রী’র বিষয়টি গোপন করায় আসন্ন সিটি নির্বাচনে তার ভোট ব্যাংকে ব্যাপক ধ্বস নামতে পারে।
বৃহস্পতিবার ওই প্রভাবশালী জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে ডালিয়া সুলতানা হেপী নামে এক মহিলা ঘটনা-প্রসঙ্গে নিজেকে কামরানের স্ত্রী বলে দাবি করেছেন। তবে কামরান ডালিয়াকে তার স্ত্রী বলে অস্বীকার করছেন। অপরদিকে, আসন্ন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী কামরানের স্ত্রী আসমা কামরান সিলেটে স্বামীর পৰে প্রতিদিন নির্বাচনী গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
ওই জাতীয় দৈনিকটির সংবাদ প্রকাশের পরই সিলেট-জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। শুর্ব হয় কানাঘুষা। তবে এর একদিন পরই শুক্রবার বেশ কয়েকটি জাতীয়সহ সিলেটের সবকটি স’ানীয় দৈনিকে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে।
একটি জাতীয় পত্রিকায় এ নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনও প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, ডালিয়া সুলতানা হেপী সদ্য বিদায়ী মেয়র কামরানের দ্বিতীয় স্ত্রী। প্রায় ১০ বছর আগে কামরান প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে এক সন্তানের জননী ডালিয়াকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে তিনি হেপীকে আদর করে ইতি বলে ডাকতেন।
ডালিয়া ঢাকার ওয়ারীর ৮ র্যাংকিং রোডের ফরচুন টাওয়ারের সাউথ ভবনের ৬ বি ফ্ল্যাটে মেয়েকে নিয়ে থাকেন। ফ্ল্যাটটি কামরান তাকে কিনে দিয়েছেন। ঢাকায় ডালিয়ার নামে দোকান, পৱট ছাড়াও বিপুল পরিমাণ অর্থ রয়েছে বলে জানা গেছে। কামরান যখনই ঢাকায় যান বেশিরভাগ সময় ওয়ারীতে ডালিয়ার বাসায় ওঠেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দলীয় কয়েকজন নেতা, কামরানের ঘনিষ্ঠ একাধিক ব্যবসায়ী এ বিষয়টি জানেন। তাদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথাও বলেন ডালিয়া। ওয়ান ইলেভেনের সময় কামরান গ্রেফতারের পর তার প্রথম স্ত্রী আসমা কামরান বিষয়টি জানতে পারেন। এ নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘদিন মনোমালিন্য চলে কামরানের।
কামরানের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, ডালিয়ার গ্রামের বাড়ি দোহার উপজেলায়। তার পিতাও একজন আওয়ামী লীগ নেতা ছিলেন। এর আগে ডালিয়ার একটি বিয়ে হয়েছিল। ১৫ বছর বয়সের তার একটি মেয়ে রয়েছে। প্রথম স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর ‘ঘটনাচক্রে’ কামরানের সঙ্গে পরিচয় হয় ডালিয়ার। এরপর তাদের ঘনিষ্ঠতা বাড়লে একপর্যায়ে ডালিয়াকে বিয়ে করতে বাধ্য হন কামরান।
সূত্রমতে, ডালিয়া একাধিকার সিলেট এসেছেন। একবার সিটি কর্পোরেশনেও যান ডালিয়া। সে সময় আসমা কামরান লন্ডনে ছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্পোরেশনের একজন কর্মকর্তা বিষয়টির সত্যতাও স্বীকার করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নগর আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ঢাকায় কামরানের একজন স্ত্রী আছেন এটা তো ‘ওপেন সিক্রেট’ ব্যাপার। বিষয়টি কামরানের পরিবারের সদস্যরাও জানেন। কিন্তু লোকলজ্জার ভয়ে এবং রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের কথা ভেবে কেউ কিছু বলেন না।
অপর একটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পায়, ‘কামরানের তার দ্বিতীয় স্ত্রী ডালিয়াকে স্ত্রীর সুযোগ সুবিধা ও মর্যাদা দিলেও সিলেটে প্রকাশ্যে আনতে পারছিলেন না তিনি।’
এদিকে বৃহস্পতিবার প্রভাবশালী ওই জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, গত বুধবার রাজধানীর মহাখালী পুলিশ বক্সের কাছে একটি গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-গ-৩৫-০১৫৮) অপর একটি গাড়িকে চাপা দিলে তা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এক পর্যায়ে বনানী থানার এসআই জাকির বিষয়টি জেনে ঢাকা মেট্রো-গ-৩৫-০১৫৮ গাড়িটি থানায় নিয়ে যেতে চাইলে চালক জানান, এই গাড়িটির মালিক সিলেট সিটি মেয়রের স্ত্রী ডালিয়া সুলতানা হ্যাপি।
এরপর চালক মোবাইলে কল দিয়ে এসআই জাকিরকে কথা বলতে অনুরোধ করলে অপর প্রান্ত থেকে এক মহিলা নিজেকে বিদায়ী মেয়র কামরানের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে গাড়িটি ছেড়ে দিতে বলেন। এতে পুলিশ কাগজ জব্দ করে গাড়িটি ছেড়ে দেয়।
এসআই জাকির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। গাড়ির চালক বলে, ‘গাড়ির মালিক ডালিয়া সুলতানা হ্যাপি কামরানের স্ত্রী এটা সত্য তবে আমি যেহেতু তার চাকরি করি তাই এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারব না।’
এ দিকে মেয়র কামরানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এই নামে কোনো মহিলাকে তিনি চেনেন না। ওই গাড়ির মালিকও তিনি নন।
ঘটনা জানাজানি হলে সিলেট-জুড়ে ব্যাপক কানাঘুষো শুরু হয়। তবে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন না হওয়া পর্যন্ত কে এই ডালিয়া তা বলা যাচ্ছে না। অনেকেই বলছেন ডালিয়াকে বিয়ে করার বিষয়টি কামরান গোপন করার কারণে নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব পড়বে।
বিষয়: বিবিধ
১৫১০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন