মাহমুদুর রহমানকে আর একটি খোলা চিঠি
লিখেছেন লিখেছেন ড তে ডন ২২ এপ্রিল, ২০১৩, ১২:৫০:২২ দুপুর
প্রিয় মাহমুদুর রহমান ভাই,
(স্যার বললে কেমন জানি পর পর লাগে, আপনার হৃদস্পন্দনতো আমি আমার হৃদয়ে শুনতে পাই)
আপনাকে চিঠি লেখার হিড়িক পড়েছে। বেশিরভাগই দেখছি আপনাকে অনশন ভেঙ্গে ফেলতে বলছে। সবাই বলাবলি করছে, আপনি চলে গেলে বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে। ক্ষতিতো অবশ্যই হবে। কিন্তু স্বাভাবিক নিয়মেই তা পূরণ হয়ে যাবে। কুলাঙ্গার, কাপুরুষ শাহবাগীদের মতো মাঝপথে রণেভঙ্গ দেয়া আপনার মতো মানুষের মানায় না। যুদ্ধে যখন নেমেছেন প্রতিবাদের, প্রতিরোধের শেষ অস্ত্রটুকু শেষ পর্যন্ত ব্যবহার করুন। মরতে তো একদিন হবে, আজকে যুদ্ধে শহীদ না হলে কালকে হার্ট এটাক, মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ.... ইত্যেকার কোন না কোন রোগে আর দশটা মানুষের মতো মারা যাবেন। আপনি মারা গেলে আপনার রক্তমাংসের শরীরটুকু এ দুনিয়া থেকে চলে যাবে, কিন্তু যে দ্বীপশিখা আমার মতো কোটি তরুনের অন্তরে জ্বালালেন, স্রোতের বিপরীতে দাড়ানোর যে শিক্ষা, সাহস দিয়ে গেলেন, যে চেতনা বুকের ভেতর লালন করতে শেখালেন, তা নেভানোর, দমানোর সাধ্য আছে কার।
"এক অমুক লোকান্তরে, লক্ষ অমুক ঘরে ঘরে"- স্লোগানটি এখন আর অবান্তর মনে হয় না। আমার মতো নির্ঝন্ঞাট, নিরীহ ছেলেরাও আজ কলম, কিবোর্ড তুলে নিয়েছে। ফ্যাসিবাদীর রক্তচক্ষু, জেল-জরিমানা, চাকরি হারানো, সর্বোপরি মুত্যের ভয়কে উপেক্ষা করে আজ প্রতিবাদ করতে শিখেছে। ভোগবাদে মত্ত নফসকে লাথি মেরে মহাসড়কে নেমে এসেছে। প্রতিবাদ করছি, করব ইনশাআল্লাহ। আমাদের আর কেউ দাবায়া রাখতে পারবে না। লক্ষ মাহমুদ আজ কথা বলতে শিখেছে, প্রতিবাদ করতে শিখেছে। বুদ্ধিবৃত্তিক জিহাদের (যে জায়গাটিতে আমরা এতোদিন মার খেয়েছি) যে প্রেরণা দিয়ে গেলেন, তার শিখা চিরন্তন জ্বলবেই ইনশাআল্লাহ।
শিল্পপতির ঘরে জন্মগ্রহণ করে আপনিও পারতেন আর দশজনের মতো ভোগবিলাসে মত্ত থাকতে। আপনিই চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন, এ যুগেও ইসলামের জন্য, আল্লাহর জন্য কণ্টকাকীর্ণ পথে হাটা যায়। ফোমের বিছানা ছেড়ে মরুভূমির তপ্ত বালুতে হাসতে হাসতে শোয়া যায়। আপনার ঈমানের সাথে তুলনা করলে নিজের প্রতি করুণা লাগে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে নিজেকে বিশাল বড় জান্নাতের পাওনাদার মনে করছি!!!
প্রাণ খুলে, হৃদয় উজাড় করে দোয়া করি মাহমুদ ভাই আপনার জন্য। বাংলাদেশের জন্য, বাংলাদেশের মানুষের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য, ইসলামের জন্য আপনি যে ত্যাগ স্বীকার করে গেলেন, ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশ আপনাকে মনে রাখবে। রবীন্দ্রনাথকে একশ বছর পর মানুষ মনে করবে কিনা তা নিয়ে তিনি চিন্তিত ছিলেন। মাহমুদ ভাই, আপনি নিশ্চিত থাকুন ৩০১৩ সালেও (যদি ততদিন দুনিয়া বা বর্তমান সভ্যতা থাকে) বাংলাদেশের কোন তরুণ যুবক আপনার জীবনী পড়ে তার নিউরনগুলোকে উদ্দীপ্ত করবে।
আল্লাহতায়ালা আপনার উপর শান্তি বর্ষণ করুন। আমিন।।
ইতি,
সদ্য প্রতিবাদ করতে শেখা আপনার এক ছোট ভাই
বিষয়: বিবিধ
১৪৫৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন