অবশেষে ওকে কি ......... নাহ আর ভাবতে পারছি না !!!
লিখেছেন লিখেছেন বীর বাংলাদেশী ০৪ এপ্রিল, ২০১৩, ০৭:৩০:২৪ সন্ধ্যা
কথোপ কথোন চলছিল । দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে । দেশের এই দূরাবস্হার কথা ভাবতেই গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠে । চোখে আঁধার দেখি ভবিষ্যতের ভাবনায় । কোথাও একটু নিরাপত্তা নেই । যত দোষ এই ধর্ম ভীরু মুসলিম সমাজের । সেচ্ছাচারিদের জ্বয় জয়াকার । একই সাথে একটি ফোন ফ্যাক্সের দোকান এবং বসার ঘর বা বৈঠক খানা । কথা চলছে
সমবয়সি চার বন্ধুর মাঝে । সবার মাঝে সঙ্কা । কখনও টক শো বিষয়ক, কখনও বিভিন্ন কলামিষ্ট, কখনও সরকারের ইসলাম বিদ্যেশী মনভাব, কখনও হলুদ সাংবাদিকদের হলুদ সাংবাদিকতা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল । হঠাৎ ই ...
( এখানে গোপনিয়তার সার্থে ছদ্দ নাম ব্যাবহার করা হল )
আব্দুল্লাহ : উমার কোথায় যাচ্ছ ? এখানে আসো একটু ,
উমার: কি বলছেন ?
আব্দুল্লাহ : বসো একটু , কিছু কথা বলি তোমার সাথে ।
বসতে বসতে...........
উমার : জী বলেন ।
আব্দুল্লাহ :গত কালকের তোমার ঘটে যাওয়া দূর্ঘটনা সম্পর্কে একটু বলো ।
উমার : কি আর শুনবেন !! যা ঘটার তাতো ঘটেয় গেছে
আব্দুল্লাহ :তবুও অন্তত আমরা সচেতন হতে পারবো
উমার : সবুজ কে নিয়ে রাজশাহী গিয়াছিলাম । ও ওখানেই সিফ্ট তাই । তখন প্রায়
বেলা দু'টা । আমি ফিরছিলাম , কিন্তু সবুজ কিছুতেই আমাকে ছাড়লোনা । বললো চল
কিছু খেয়ে নেয় । বাধ্য হয়ে খেতে গেলাম ।
সবে মাত্র হোটেল জোনাকি থেকে খেয়ে বেরিয়েছি । তখনও টিসু পেপার দিয়ে হাত মুছতে মুছতে রাস্তার এক পাশদিয়ে হাঁটছি । পেছন থেকে কে যেন বলে উঠলো ' এই ব্যাটা দাঁড়া ' । হকচকিয়ে পিছু ফিরে দেখি পুলিশ । দাড়িয়ে গেলাম ।
পুলিশ : এই বেটা কোথায় যাস ? আর কোথ্থেকে আইসোস ?
উমার : গ্রাম থেকে সার , আর এই সামনের হোস্টেলে যাবো ।
পুলিশ : যা ভাগ
উমার : চলছিলাম সাভাবিক ভাবেই , দশ গজ এগুতেই এক বন্ধুর সাথে দেখা হলে ওর সাথে দু চারটে কথা বলে এগুচ্ছিলাম , এমন সময় অন্য একজন সিনিয়ার পুলিশ প্রায় চেচিয়ে উঠে
পুলিশ২ : ঐ দুই ব্যাটাকেই ধর
ছুটে এলো তিনজন পুলিশ । পাশে এসে আমাদের দুজনের প্যান্টের বেল্ট ধরে ফেলল । আমরা তো থ বনে গেলাম । বললাম কি অপরাধ আমাদের ? কেনইবা আমাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে ?
পুলিশ : এই ব্যাটা চোপ , কথা বলবিনা চল গাড়িতে উঠ । কথা বললে সালবাগানের অস্ত্র ছিন্তায় মামলায় চালান দেব । বলে প্যান্ট ধরে টানতে লাগলে আমি বললাম স্যার প্যান্ট খসে যাবে তো ছাড়েন , কে শোনে কার কথা টানতে টানতে নিয়ে গাড়িতে উঠালো । ততক্ষনে কাঁপতে আরম্ভ করেছি । আমরা ছাত্র , সামনে পরিক্ষা না জানি কোন ঝামেলায় পড়ে লাইফটা নষ্ট হয়ে যাবে । না আমরা দুজন নয় এখারে আরও আছে । আসলে আমাদের দিয়ে বিশের কোঠা পূর্ণ করা হয়েছে । গাড়িতে উঠিয়ে গেট লাগিয়ে দেয়া হলো । নিয়ে চলল থানায় । রাখাহলো পুলিশ কাষ্টডিতে ।অনেক্ষন কেউ কোন কথা বলছিলনা । একজন পুলিশ এসে আমাদের
সবার মোবাইল গুলো জব্দ করলো আর আমাদের সবার কাছে সবার বাড়ির নাম্বার চাইলো । কি আর করার । সবাই দিতে চাইলোনা । কিন্তু ততক্ষনে পুলিশটি রেগে গিয়ে বলল-
যদি নাম্বার না দাও তবে সালবাগানের অস্ত্র ছিন্তায় মামলায় চালান দিয়ে দিব ।ভয়ে আমরা সবাই দিয়ে দিলাম , শুধু একজন বাদে । সে কিছুতেই রাজি হলোনা , তার এক কথা আমি কোন অপরাধ করিনি কেন আমাকে ধরে আনা হলো ?? ধমকে উঠলো পুলিশটি ।
তারপর বেশ কিছুক্ষন নিরবোতা । আমি চেয়ে চেয়ে দেখছিলাম সেই ভাইটির দিকে , প্রথম দেখাতে অবশ্যই চমকে উঠেছিলাম আমার এক বন্ধুকে মনে করে কিন্তু সামনা সামনি তাকে দেখার পরে আরও মমতা বেড়ে উঠতে লাগলো । আমি তাকে বললাম কেন খামোখা ওদের সাথে ঝামেলা করতে চাচ্ছেন ? ও কিছু বলছিলোনা । আবার বললাম
আপনাকে কোথা থেকে ধরে এনেছে ওরা ? বললেন মেস থেকে । বললাম কেন ? বললেন তাতো জানিনা ,আমি ১০টার দিকে গোসল সেরে শুয়ে শুয়ে পড়ছিলাম , দরজা লাগানো ছিল । বাহির থেকে শব্দ এলো ভেতরে কে ? দরজা খোল , আমি কিছু বুঝে উঠার আগেয় আমাকে
দরজা খোলার সময় না দিয়ে দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করলো চারজন পুলিশ । আমাকে দু জন ঘিরে ধরে বাকি দুজন ঘরটা সার্চ করতে লাগলো । সার্চকরে কিছু বই খাতা কলম আর একটি কোরআন শরিফ পেল । ঐটাই হলো আমার অপরাধ , প্রশ্ন করলো , এই তোর মুখে দাড়ি ক্যান ? তুই কি করিস ? আমি বললাম আমি একজন ছাত্র এখানে লেখাপড়া
করার জন্য এসেছি আর আমি মুসলিম তাই আমার মুখে দাড়ি এতে অপরাধ কি ? আবার প্রশ্ন করলো এই ব্যাটা আমি মুসলিম না ? আমার মুখে তো দাড়ি নেই তবে ? আর তোর ঘরে কোরআন কেন ? লেখাপড়া করতে এসে ছিস ভালো , কোরআন কেন ?? আমি কিছু বলার আগেই আমাকে হেচড়াতে হেচড়াতে নিয়ে উঠালো গাড়িতে । এর পর তো দেখছেন ই । আমি বললাম - তাতো বুঝলাম কিন্তু বাড়ির নাম্বার দিলেন না কেন ? ও বললেন - আমার বাবা বিছানায় অসুস্হ পড়ে আছে আর মা হার্টের রুগী এখন ওরা যদি আমার এই অবস্হার কথা জানে তাহলে নির্ঘাত তারা মারা জাবে , তাছাড়া ওরা বাড়ির নাম্বার চাওয়ার আর্থ হলো বাড়িতে ফোন করে টাকা চাইবে , মুক্তি পোন হিসেবে । এর আগেও এক ব্যাচ ছেড়েছে জন প্রতি ৩০ হাজারের বিনিময়ে । আমার বাবা মার দ্বারা এই
টাকা যোগান দেয়া সম্ভব নয় ।চার পাঁচ ঘন্টা পর থেকে এক এক করে বেরুতে লাগলো ,রাত প্রায় ১১টা তখন আমাদের দুজনের ডাক এলো । বেরিয়ে এলাম কিন্তু রয়ে গেল সেই হতভাগ্য ভাইটি । জানিনা ওর সাথে কি ব্যাবহার করা হয়েছে !! অবশেষে ওকে
কি ......... নাহ আর ভাবতে পারছি না !!!
বিষয়: বিবিধ
১৬৮১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন