বেঁচে থাক মুগলি
লিখেছেন লিখেছেন আলাাপন ১৪ মে, ২০১৩, ০২:১৪:০৮ রাত
জিম করবেট তার শিকার কাহিনীতে যা কিছু লিখেছেন তার সবগুলো কি সত্যি? ঘটনার আবহ এবং সময়কাল দিয়ে বিবেচনা করলে সত্যি মনে হয়। হয়েতো সত্যি।
মুগলির কথা মনে আছে আপনাদের? চার হাতেপায়ে দ্রুত দৌড়াত, খুবই দ্রুত গাছে উঠতে পারতো আর খাবার খেতে গেলে মানুষের মতো হাত ব্যবহার করতে জানতো না, থাকতো বনে। আলু ক্ষেতে কাঁচা আলু খাওয়ার সময় লোকজন ধাওয়া করে ধরে ফেলে নাদুস নুদুস মেয়েটাকে। এরপর সভ্যজগতের ডাক্তাররা হাসপাতালে মেয়েটাকে সভ্য বানানোর মহোৎসবে ব্যস্ত হয়ে পড়ে আর সভ্যতার চাপ সইতে না পেরে মুগলি মারা যায়।
১৭ দিনের বন্দীদশা থেকে রেশমা উদ্ধার হলো স্বাভাবিক চেহারায়। জীবন মৃত্যুর মাঝখানে ফাইভস্টার হোটেলেও যে কেউ বিধস্ত হয়ে যেত। রেশমা হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই সে তার নখ, চুল এবং জামা কাপড়ের পরিচর্যা করেছে। সুস্থ থেকেছে। একেবারে ধরাপড়ার আগে মুগলির মতো।
সংবাদ সম্মেলনে দেখলাম রেশমা এখন অনেক নিয়ন্ত্রিত(!), তাকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় স্যালাইন বাদ দিয়ে তাকে এখন অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন দেয়া হচ্ছে।
মুগলি যদি ছাড়া পেত সে হয়ত কারো জন্য হুমকী হতো না, আপন প্রকৃতিতে ফিরে যেত। মানুষ তার দায়বদ্ধতা থেকেই তাকে সভ্য বানাতে গিয়ে মেরে ফেলেছে।
আমরা আমাদের দায়বদ্ধতা থেকেই রেশমাকে সভ্য করার চেষ্টা করছি। আমাদের এ চিকিৎসা থেকে ছাড়া পেয়ে, কারো জন্য হুমকী না হয়ে রেশমা কি তার আপন প্রকৃতিতে ফিরে যেতে পারবে? যদি কোন দিন তার নখ চুলের পরিচর্যার কথা বলতে বসে যায়? রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় স্যালাইন বাদ দিয়ে তাকে এখন অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন দেয়া হচ্ছে।
বেঁচে থাক মুগলি। কয়দিন পর আমরা সবাই তোমাকে ভুলে যাবো। কত মানুষই তো অ্যাকসিডেন্টে মরে! তাই জিম করবেটরা তোমাকে নিয়ে লেখার ফুরসত পাবেনা।
বিষয়: বিবিধ
১৪৩৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন