মধ্যযুগ বনাম মুসলমানের মধ্যযুগ

লিখেছেন লিখেছেন সত্য সমাগত ১৩ এপ্রিল, ২০১৩, ০৮:১৩:২৮ রাত

“আমার কিছু বন্ধুকে ও কিছু ভাইয়ের উদ্দেশ্য করে লেখা”

"হে ঈমানদারগণ! তোমরা যথাযথভাবে আল্লাহকে ভয় করো৷ মুসলিম থাকা অবস্থায় ছাড়া যেন তোমাদের মৃত্যু না হয়"(সূরা আলে ইমরানঃ ১০২) এই আয়াতের নিগূড় তাৎপর্য বলবেন কি ভাইয়েরা যারা অনেক কমেন্ট করেছেন এখন পর্যন্ত? প্লীজ নিজেকে বায়াস না করে একটু পরাশুনা করবেন। হেফাজতে ইসলাম তাদের ১৩ দফা কর্মসূচীর মধ্যে একটি রেখেছে যে ছেলে-মেয়েদের অবাধ মেলামেশা বন্ধ করা। আচ্ছা, বলেন তো এই শর্তে আপনাদের একমত হতে প্রব্লেম কোথায়? আপনি কি আপনার স্ত্রীকে আমার সাথে ঢলাঢলি করার জন্য ছেড়ে দিবেন? আপনি কি আপনার বোন কে কারো ভোগ্য পণ্যে পরিণত করতে দিবেন? আমার বিশ্বাস, আপ্নারা আমার ইমোশন বোঝার কথা। এখন প্রশ্ন হল, হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামীর ব্যাকাপ আছে কি না? এটাই তো আপনাদের জানার ইচ্ছা? তাহলে আমার প্রশ্ন, ইসলাম রক্ষা করা আল্লাহ্‌র নিজের দায়িত্ব এই কথা আপনাকে কে বলেছে? অথচ মহান আল্লাহ বলেনঃ "আল্লাহ কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যে পর্যন্ত না তারা তাদের নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে।"(সূরা রাদঃ ১১) দেখুন, আমি রেফারেন্স দিয়ে কথা বলছি। আমার মন গড়া কথা নয়। ইসলামের হেফাজত তো আপনার আমার সবার দায়িত্ব। মহান আল্লাহ যদি বলেন, তোমরা কতটুকু আল্লাহর জন্য কাজ করেছো- আছে কি আমাদের কোন উত্তর?

এখন প্রশ্ন করতে পারেন, আমি শাহবাগ আন্দোলন সমর্থন করি কি না অথবা সমর্থন করেছিলাম কি না। আমি জানি আমরা এতটাই বায়াসড হয়ে গেছি যে, যদি বলি আমার সমর্থন ছিল রাজাকার রাজাকার খেলার অবসান হোক, অনেকেই বিশ্বাস করবেন না। কিন্তু আমি ব্যাক্তিগতভাবে এই রাজনিতীর অবসান চেয়েছিলাম। এখন প্রশ্ন হল, ৪২ বছর ধরে এই রাজনীতি করার মানে কি? আমরা কেন সামনের দিকে তাকাতে পারছি না? একটু ভেবে দেখেছেন কি? আপনি আমি কেন এই অসুস্থ রাজনীতির বলি হচ্ছি? দেখুন সমাধান একমাত্র পবিত্র কুরআন ও আল্লাহর হাদিসে আছে। একবার কি আমাদের পড়ার সময় হয়? ব্লগার রাজিব হায়দারকে ২য় মুক্তিযুদ্ধের ১ম শহীদ বলা হল। পরে বোঝা গেল এই কুলাঙ্গার আর কেউ না ইসলামের শত্রু। এর ফলেই তো নতুন আন্দোলন দরকার হয়ে গেল আলেমদের জন্য। আপনারা নিজেরাই তো বাড়াবাড়ি করে রাজিব রাজিব করে মাদ্রাসার ছাত্রদের ক্ষেপীয়ে দিলেন।

আমরা এখন শুনতে পাচ্ছি, ১৩ দফা মানলে আমরা নাকি মধ্যযুগে ফিরে যাব। আসলে মধ্যযুগ বলতে কি বোঝেন আপনারা? আমাদের কিন্তু কনটেক্সট টা বুঝতে হবে কোন প্রসঙ্গে এই টার্ম টা আসে। ৭০০-১৫০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কে বলা হয় মধ্যযুগ। এ সময় ইউরোপে কোন জ্ঞান-বিজ্ঞানের কোন উৎকর্ষ ঘটে নি। খ্রিস্টান পাদ্রিরা তাদের ক্ষমতার মসনদ ঠিক রাখার জন্য নিজেদের মন গড়া কথা স্রষ্টার নামে চালিয়ে দিত। কেউ সামনে বাধা হয়ে দাড়ালে তাকে নানারকম ফতোয়া দিয়ে শাস্তি দেয়া হত। এই সময় অনেক বৃদ্ধাকে ডাইনী বলে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়। এই প্রেক্ষাপটে মধ্যযুগ টার্ম টা ঠিক আছে। অপরপক্ষে একই সময় মুসলিম স্পেন ছিল সমৃদ্ধ রাষ্ট্র(Ref: introduction to the History of Science by George Sarton) মুসলিম কন্টেক্সট এ আসলে আমরা ছিলাম আলোকিত যুগে। আমি রেফারেন্স দিলাম, বাকিটা আপনাদের ইচ্ছা-বুঝতে চাইলে আল্লাহ আপনাকে সাহায্য করবে ইনশাআল্লাহ।

আরও অনেক কথা বলা যায়, আছেও অনেক। কিন্তু এখানেই আমি শেষ করছি। শেষ কথা মহান আল্লাহর কালাম দিয়ে শেষ করব। আল্লাহ বলেনঃ “এ কাফেররা বলে, “আমরা কখনও এ কুরআন মানবো না এবং এর পূর্বে আগত কোন কিতাবকেও স্বীকার করবো না”৷ হায়! যদি তোমরা দেখ এদের তখনকার অবস্থা যখন এ জালেমরা নিজেদের রবের সামনে দাড়িয়ে থাকবে৷ সে সময় এরা একে অন্যকে দোষারোপ করবে৷ যাদেরকে দুনিয়ায় দাবিয়ে রাখা হয়েছিল তারা ক্ষমতাগর্বীদেরকে বলবে, “যদি তোমরা না থাকতে তাহলে আমরা মুমিন হতাম”৷ ক্ষমতাগর্বীরা সেই দমিত লোকদেরকে জবাবে বলবে, “তোমাদের কাছে যে সপথের দিশা এসেছিল তা থেকে কি আমরা তোমাদেরকে রুখে দিয়েছিলাম? বরং তোমরা নিজেরাই তো অপরাধী ছিলে”(সূরা সাবাঃ ৩১-৩২)

আমরা আসলে কোন দলেরঅন্তর্ভুক্ত এই আয়াতে বোঝা যায়। আল্লাহ আমাদের বোঝার শক্তি দিন। আমিন।

বিষয়: বিবিধ

১২৭৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File