মুক্তিযুদ্ধ ও তার চেতনা
লিখেছেন লিখেছেন হতভাগা ২৬ মার্চ, ২০১৯, ১২:৫৫:৩৩ দুপুর
বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চ বলেছিলেন -
'' এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম'' ।
আর ২৬ শে মার্চ যুদ্ধ শুরু হল।
৮ ই মার্চ থেকে ২৪/২৫ মার্চ পর্যন্ত তাহলে কি নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সাথে ইয়াহিয়া ও ভুট্টোর আলাপ আলোচনা হয়েছিল? পাকিস্তানী হানাদারেরা তো ঐ ২৫ তারিখেই সব অস্ত্র, কামান ও গোলাবারুদ একদিনে নিয়ে আসে নি এবং এগুলো তো বিমান পথেও আনা সম্ভব নয়!
যদি ৭ই মার্চ স্বাধীনতার ডাকই দিয়ে থাকেন তাহলে ৮ তারিখ থেকেই তো যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করা উচিত ছিল এবং যাতে শত্রুর কোন লোক যাতে অস্ত্র, কামান নিয়ে ঠুকতে না পারে সেই প্রবেশ পথেও তো কড়া নজড়দারি বসানো উচিত ছিল!
সেগুলোর যে কিছুই হয় নি তা ২৫ তারিখে পাকিস্তানী হানাদারদের ম্যাসাকার থেকেই বোঝা যায়।
আর বঙ্গবন্ধু এও বলেছিলেন যে -
যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে।
জিয়া, অলি , শওকত, জলিল .. এমন কি বীর শ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানও - এরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে থেকেও দেশের হয়ে যুদ্ধে নেমেছিল । হারলে তাদের কোর্ট মার্শাল হয়ে যেত। এই খড়গ নিয়েও উনারা পাকিস্তানের বিপক্ষে গিয়ে দেশের জন্য যুদ্ধে নেমেছিলেন।
কিন্তু সে সময়ে যারা সরকারী কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন (পূর্ব পাকিস্তানের সরকারী অফিসার ও স্টাফেরা) তারা তো ঠিকই সরকারের আদেশ পালন করে যাচ্ছিলেন - মানে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর জন্য ব্যবস্থা ঠিক ঠাক রাখছিলেন। মানে পাকিস্তান সরকারের অধীনে ছিলেন। সে সময়ে তো মনে হয় কোন বেসরকারী হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয় ও সংবাদপত্রও ছিল না। যুদ্ধে পাকিস্তান জিতে গেলে তারা কিন্তু বেনিফিশিয়ারিই হতেন , কারণ তারা পাকিস্তানের বিপক্ষে অস্ত্র হাতে নেন নি বরং শান্ত থেকে তাদের দৈনন্দিন কাজই করে গেছেন।
কিন্তু বাংলাদেশ জিতে যাবার পর এখনও তো উনারা বেশ টপ পজিশনেই আছেন এবং একেক জন স্বাধীনতার চেতনার বিশাল ধারক ও বাহক হয়ে গেছেন - সবাইকে গল্প শোনাচ্ছেন, সবকও মারতেছেন। কিন্তু সে সময়ে তারা রিস্ক নিয়ে নামেন নি অস্ত্র হাতে সময়, বয়স ও সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও।
এসব বিষয়গুলো খুবই Controversial মনে হয়।
আমরা যারা যুদ্ধের পর জন্মেছি তারা কি স্বাধীনতার চেতনা যুদ্ধে যারা যায় নি বরং পালিয়েছিল ( সবাই যেতে পারে না, সবার মনের সাহসও এক না) তাদের কাছ থেকেই শুনবো নাকি যারা সন্মুখ সমরে লড়াই করেছে তাদের কাছে শুনবো?
সময়, বয়স ও সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যারা সে সময়ে ঘরেই বসে থেকেছে, চাচার বাড়ি বেড়াতে গেছে , সারাটা সময় ঘরে বসেই মু্ক্তিযুদ্ধের বিশাল গবেষক হয়ে গেছে বা কলিকাতায় চলে গেছে - সেটা তারা করতেই পারে, যেতেই পারে পালিয়ে। কারণ তারা ভয় পায় বলেই যায় নি, সবার কাছেই তো তার নিজের জান সব কিছুর চেয়েই আগে । এরকমের সংখ্যা বরং বেশীই। সেটাও সমস্যা না । সমস্যা তখনই হয় - যখন এই পালিয়ে থাকা লোকজন যুদ্ধের পর বিশাল চেতনা বাজ হয়ে যায়।
তারা এই চেতনা আমাদেরকে দেয় যেই চেতনা তাদেরকে সে সময়ে যুদ্ধে যেতে উৎসাহিত করে নি । এই চেতনাবাজদের চেতনা কি আমাদেরকে , আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে?
বিষয়: বিবিধ
১০৩৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন