#Me Too
লিখেছেন লিখেছেন হতভাগা ১১ অক্টোবর, ২০১৮, ১১:৩৫:১০ সকাল
গত কয়েক মাস জুড়ে চলচিত্র জগতে একটা বিষয় খুব মনযোগ কেড়ে নিচ্ছে - সেটা হল নায়িকাদের বা মহিলা শিল্পীদের উপর পুরুষ সহকর্মীদের দ্বারা যৌন হেনস্তার ঘটনা।
এটা প্রথমে হলিউড থেকে শুরু হয়েছিল Me Too নাম নিয়ে, অধুনা সেটা এখন বলিউডের সাবেক অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্তের মাধ্যমে বলিউডেও ঝড় তুলেছে।
খবরগুলো পড়ে মনে হল , যারা অভিযোগ করছে তারা একসময়ে নামী অভিনেত্রীই ছিলেন, তবে এখন আর অভিনয় করে না অথবা তারা নামকরা কোন নায়িকা নন । আর অভিযোগগুলোর চাক্ষুষ ও সলিড কোন প্রমাণও নেই এবং ঘটনাগুলো ঘটার বেশ কয়েক বছর পার হয়ে গেছে। ম্যাক্সিমাম ক্ষেত্রেই দেখা গেছে যে প্রায় সবারই ক্যারিয়ারের একেবারে শুরুর দিকের ঘটনা এগুলো ।
কিন্তু সে সময়ে এসব ঘটনা তারা প্রকাশ করে নি বা করলেও এখনকার মত এত শক্ত/জোরালোভাবে করে নি।
স্বাভাবিকভাবেই কথা উঠবে - কেন এতদিন তারা এসব কথা সামনে আনে নি , তাহলে অন্য মেয়েরাও সতর্ক হয়ে যেত? তখন কি বলিউডে অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছিল? ভারতে কি কোন থাকা পুলিশ বা আইন আদালত ছিল না ?
সবচেয়ে বড় ইন্টারেস্টিং বিষয় হল - যারা হালের দাপুটে অভিনেত্রী যেমন কারিনা, ক্যাটরিনা, দীপিকা কিংবা আনুশকা - এদের কাউকেই এরকম দাবী করতে দেখা যায় নি । তাহলে তারা কি এরকম কোন হ্যারাসমেন্টের শিকার কখনও হন নি ?
নাকি হয়েছেন এবং এখনও হচ্ছেন - তবে ক্যারিয়ারের খাতিরে সেটা সয়ে যাচ্ছেন, ক্যারিয়ারকে এগিয়ে নিতে তারা এসবকে তাদের বড় পূঁজি হিসেবে বিনিয়োগ করেছেন, সেজন্য এখন প্রচার করছেন না । যখন দাম পড়ে যাবে তখন বলবেন , এখন যেমন ঐশ্বরিয়া অভিযোগ করেছে।
এসব বিষয় যখন আদালতে উঠবে তখন উভয়পক্ষের আইনজীবীর একে অপরকে ক্রস চেক করবে । আদালত সলিড প্রমাণ চাইবে অভিযোগকারীর কাছে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে । যদি সেটা উত্থাপন না করতে পারে তাহলে নানা পাটেকার নিশ্চিতভাবে তনুশ্রীর বিরুদ্ধ মানহানির মামলা করে দেবে।
অভিযোগকারিনী ও তাদের সঙ্গ দেওয়া মিডিয়াও ব্যাপারটা জানে । শুধুমাত্র পত্রিকার কাটতি বাড়ানোর জন্য এসব দাম পড়ে যাওয়া নায়িকাদের দিয়ে চটকদার খবর পরিবেশন করে । তারা জানে যে পাবলিক এসব খবরই শুনতে চায় এবংআমাদের সমাজে হুজুগে আমজনতা কোন চিন্তাভাবনা বা বাচ বিবেচনা না করেই মহিলাদের কথা বিশ্বাস করে । আদালতে যখন বিষয়টির সওয়াল জবাব শুরু হবে তখন মিডিয়া আর সেগুলোকে কভার করবে না এখন যেমন করছে।
আর ঘটনা যদি সত্যিই হয়ে থাকে এবং তা আদালতের রায়ের নিচে আসে তাহলে হলিউড বলিউড তথা চলচিত্র জগতের সামনের দিনগুলোর দিকই পরিবর্তন করে দেবে এসব ঘটনাগুলো।
সিনেমা তথা চলচিত্র জগত এসব যৌনহেনস্তার মাধ্যমেই তো বিকাশ লাভ করে ।এরকম যদি ঘটতে থাকে তাহলে সামনের দিকে কোন নায়ক কি কোন নায়িকা বা কোন সহঅভিনেত্রীর সাথে সিনেমার দৃশ্যেও ইনটিমেট হতে চাইবে ?
প্রতিযোগিতার এই ইঁদূর দৌড়ে একজন নবাগত নায়িকাকে একজন পরিচালক বা প্রযোজক কিভাবে বড় ব্রেক থ্রু দেবে কিংবা একজন নবাগতা কিভাবে একটা বড় ব্রেক থ্রু পেতে পারে যেখানে এত এত প্রতিদ্বন্দ্বী তার?
কিছু কিছু পেশা আছে যেখানে পেশাজীবীকে এমন কিছু কাজ করতে হয় বা করতে বাধ্য হয় কিংবা স্বেচ্ছাতেই করে তার ক্যারিয়ারকে এগিয়ে নেবার জন্য , সাফল্যের শিখরে যাবার জন্য - সেটা যতই অনৈতিক হোক না কেন।
বিষয়: বিবিধ
১৪২১ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কিছু কিছু পেশা আছে যেখানে নারীরা নিজেদের শরীর ও রুপকে কাজে লাগায় সাফল্যের শিখরে পৌছাতে । এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়েও ভাল সিজিপিএ পেতে শিক্ষকদের দূর্বলতাকে বুঝতে পেরে তারা নিজেদের শরীরকে কাজে লাগায় এবং ভাল মার্কস্ আদায় করে নেয়।
নাকি নিজের ক্যারিয়ারের জন্য এসব কাজকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন, আর এখন যখন দাম পড়ে গেছে কিংবা সময় ফুরিয়ে গেছে তখন একটা win-win পজিশনকে হয়রানি বলছেন।
দেখতে চাই - আদালতে এসব বিষয় আসলেই উঠায় কি না অভিযোগকারিনীরা আর আমাদের মিডিয়াগুলো আদালতের সেই সওয়াল জবাব তাদের পাঠকদের আপটুডেট রাখে কি না ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন