চাকুরীর বয়সসীমা
লিখেছেন লিখেছেন হতভাগা ২৬ মে, ২০১৭, ০৯:৩২:২১ সকাল
আমাদের দেশে চাকুরী হতে অবসরের বয়সসীমা এখন ৬০ বছর পর্যন্ত । কোন কোন প্রফেশনের জন্য সেটা ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত করানো আছে।
দেশের ম্যাক্সিমাম মানুষকেই চাকরীর মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতে হয় এবং সেই লক্ষ্যেই ছোটকাল থেকে লেখাপড়া করে আসে।
আমাদের সময় আমরা যখন ক্লাস নাইনে রেজিস্ট্রেশন করি তখন বয়স কমিয়ে লেখা হয় ( যেটা বাংলাদেশের প্রায় সবারই আছে) যাতে চাকরী বেশী বছর করতে পারে । সে সময়ে চাকুরী হতে অবসরের বয়সসীমা ছিল ৫৮ বছর বয়স পর্যন্ত । ছেলে পেলেরা যাতে ২/৩ বছর বেশী চাকরী করতে পারে সেটার কথা মাথাই রেখেই বাবা মা ও শিক্ষকেরা এই সিস্টেম চালু করেছিলেন এবং সেটা এখনও বজায় আছে।
একজন ছেলের স্নাতক পাশ করে চাকুরীতে প্রবেশ করতে করতে নুন্যতম ২৫/২৬ বছর বয়স হয়ে যায় । তবে সেটা আরও বেশী হতে পারে কারণ মাস্টার্স বা অভিজ্ঞতার জন্য মিনিমাম আরও ২/৩ বছর মানে ২৭/২৮ বছর বয়স হয়ে যায়।
চাকুরীতে প্রবেশ করা মাত্রই বিয়ে করা তার জন্য টাফ কারণ বউ পোষবার জন্য সেরকম সেটেলড সে তখনও হয় নাই । আর যেহেতু যে চাকুরীতে ঢুকেছে সেহেতু তার জন্য তার বাবা আগে যে টাকা খরচ করত সেটা এখন চাইতেই লজ্জা লাগবার কথা।
তাই আগে নিজে সেটেল্ড হবে , তারপর বিয়ে করার মত নুন্যতম টাকা জমাতে জমাতে ৩০/৩২ বছর বয়স পার হয়ে যায়।
বিয়ের পর সন্তান আসে যখন তখন তার বয়স ৩৩/৩৪ বছর । সন্তানকে লালন পালন করে তাকে নুন্যতম অনার্স পর্যন্ত পার করে দিতে দিতে তার বয়স ৫৮/৫৯ বছর এ গিয়ে পৌছে । মানে , সন্তান যখন চাকুরীতে ঢুকছে বাবা তখন রিটায়ারমেন্টে যাচ্ছে । এমনও হওয়া অস্বাভাবিক না যে একটা নির্দিষ্ট সময়ে বাবা ও তার সন্তান উভয়েই কর্মহীন !
সন্তান যদি চাকুরিতে প্রবেশ করেও তবুও তার কাছ থেকে খরচাপাতি নিতে বাবা হিসেবে উনার কাছে সন্মানজনক লাগতে নাও পারে , কারণ এতদিন তো উনিই তার পরিবার ও সন্তানদের দেখভাল করেছেন ।
যে মানুষ এতটা বছর সংসারের ঘানি টানলো চাকুরির শেষ দিনের পরের দিন থেকে সেই এখন ডিপেনডেন্ট ! সাথে সন্তানও যদি বেকার হয় সে সময়ে তাহলে তো কথাই নেই ।
চাকুরি শেষে পেনশনের যে টাকা সেটা কি বেতনের পরিপূরক হতে পারে ? সেই পেনশনের টাকাও কি এত সহজে পাওয়া যায়?
ফলে এতদিনের সুন্দর সাজানো একটা সংসারে ছন্দ পতন আসে যেটার প্রভাব সুদূর প্রসারী হতে পারে ।
এই চাকুরীর বয়স সীমা যদি ৬৫ / ৭০ বছর বয়স পর্যন্ত করা হত তাহলে সন্তানের চাকরীতে প্রবেশের ৬-১০ বছর পর্যন্ত সেই বাবাকে তখন আর সন্তানের জন্য খরচাপাতি দেওয়া লাগতো না । নিজেদের দিকে এবার ভাল করে দেখভাল করতে পারতো । সন্তানেরও সামর্থ্য তৈরি হত বাবা মাকে দেখভাল করার।
আর শুরুতেও বয়স কমিয়ে দেখানোর একটা যে মিথ্যা চর্চা সেটাও করা লাগতো না । এরকম করতে বাধ্যহত কারণ সে সময়ে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু কম ছিল । এখন তা কিছুটা হলেও বেড়েছে।
তাই চাকুরি থেকে অবসরে যাবার বয়সসীমা নুন্যতম ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত থাকা উচিত এবং সরকারী চাকুরিতে প্রবেশের বয়স সীমাও ৩০ বছর বয়সের পরিবর্তে ৩৫/৪০ বছর বয়স করা উচিত।
বিষয়: বিবিধ
৯০১ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
আপনার সুচিন্তিত ও অনুপ্রেরনাদায়ী মন্তব্য আমার ব্লগার জীবনটাকে ধন্য করেছে
ধন্যবাদ
আপনাদের ফ্লাডিংয়ের কারণে ইসলামী সমাজ নিয়ে কেউ উৎসাহমূলক কোন মন্তব্য করছে না ।
কে ইসলামী সমাজে আসবে, না আসবে আমাদের ব্যাপার না। আমাদের কাজ দাওয়াত দেওয়া ,এটা আল্লাহের ব্যাপার। ইসলাম যে ভাবে আসছে , সে ভাবে তুলে ধরা।
দাওয়াতের কাজ এমনভাবে করেন না যাতে সেটা বিরক্তির কারণ হয়ে আসে ।
আপনার কথাগুলো যৌক্তিক, সমসাময়ীক, নীরব যন্ত্রণার বহিঃপ্রকাশ, খুবই বাস্তবিক। কিন্তু সমাধানের আশা খুবই ক্ষীণ।
আলহামদুলিল্লাহ্, আমি ২৭ শে পা দিয়েই বিয়ে করেছি। স্ট্রাগল করতে হয় কিন্তু আমি হেরে যাবার পাত্র নই
যে বিষয়ে পোস্ট হোক না কেন উনারা উনাদের এই রেডি কমেন্ট পোস্ট করবেনই ।
আমার মনে হয় উনারা ইসলামকে পঁচানোর জন্য এই রকম কাজ করে যাচ্ছেন।
স্ট্রাগল করতে হবে না , এডজাস্ট করে চলতে হবে । মানে চাহিদা মোতাবেক যোগান দিতে পারলেই (সেটা যেভাবেই হোক)।
মন্তব্য করতে লগইন করুন