হতভাগার হজ (২য় পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন হতভাগা ০৪ আগস্ট, ২০১৫, ০৯:৪৮:২৪ সকাল
হজের মূল কার্যক্রমে প্রবেশ করার আগে কিছু জিনিস মনে রাখা বান্চনীয় ।
সাধারণ দিন গুলোতে আপনি আপনার সময় ও সুযোগ মত তাওয়াফ করবেন । তাওয়াফ করা শেষে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়তে হয় , প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে সূরা কাফেরুন আর ২য় রাকাতে সূরা ইখলাস পড়া রীতি ।
এরপর জমজমের পানি খাবেন এবং শেষ অংশ মাথায় দিবেন , সাথে দোয়াও আছে । আশে পাশে শক্ত প্লাস্টিকের হাটু সমান ঘিয়া রংয়ের অনেক পানির ড্রাম আছে , ডিসপোজেবল পানির গ্লাস (প্লাস্টিকের) আছে । ম্যাক্সিমাম ড্রামেই ঠান্ডা পানি থাকে , নরমাল পানির ড্রাম একটু খুঁজে দেখতে হবে । তবে এটা ঐগুলোর সাথেই থাকে ।
তওয়াফের সময় ধাক্কা ধাক্কি হয় , তবে এটা খুব সামান্য । হাসি মুখে সহ্য করে যাবেন । ইচ্ছে করে এটা কেউ করে না । হুইল চেয়ার পিছনে থাকলে পায়ের পিছনের রগ সাবধান ।
হজরে আসওয়াদ থেকে তওয়াফ শুরু হয় । ইংরেজিতে লিখা আছে সাদা কালিতে সবুজ বোর্ডে Tawaf start. সবুজ রংয়ের টিউব লাইটও আছে বোঝানোর জন্য।
শুরু করে যখন চক্কর প্রায় শেষ হবে ঠিক সেই মুখে আপনার হাঁটার গতি কমে আসবে কারণ সেখানে কেউ কেউ নতুন ঢুকে তওয়াফ করতে আবার যাদের তওয়াফ শেষ তারা বের হয়ে যায় ।
একবার চক্কর দিতে আমার ৩.৫ থেকে ৪ মিনিট লাগতো । ৭ চক্কর দিতে ২৫-২৮ মিনিট।
ক্বাবা শরীফকে বাম দিতে রেখে হজরে আসওয়াদ থেকে তওয়াফ শুরু করতে হবে , দুই বা এক হাত তুলে '' বিসমিল্লাহে আল্লাহু আকবার '' বলে আরম্ভ করতে হয় প্রতি চক্করে।। তওয়াফের শেষ চতুর্থাংশ মানে রুকনে ইয়ামিনী থেকে হজরে আসওয়াদ পর্যন্ত যেতে যেতে '' রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনইয়া ....... '' এটা পড়া রীতি । বাকী প্রথম ৩ চতুর্থাংশে আপনার মন মত তসবীহ পড়ুন ।
হুইল চেয়ার লাগলে সেটা পাওয়া যায় ফ্রীতে যেখান থেকে হুইল চেয়ারে হাজিদের হারাম শরীফে নিতে রাস্তা করা আছে তার নিচে । এটা হাজিরা রেখে যায় (বাধ্য হয়) ।আরবীতে হুইল চেয়ারকে আরাবিয়া বলে । এটা নিয়ে সে সময়ে খুব ঝামেলা হয়েছিল।
হুইল চেয়ার কিনে নেওয়া ভাল কারণ হজের দিন গুলোতে এটা বয়ষ্কদের জন্য কাজে দেয় । Nahdi নামে আমাদের লাজ ফার্মার মত সেখানেও ফার্মেসী চেইন আছে , সেখান থেকে কিনেছিলাম । ২৯৫ রিয়াল করে ।
তাছাড়া হুইল চেয়ার ভাড়া পাওয়া যায় হারাম শরীফে ঐ পথেই, লোক আছে ঠেলার জন্য । ১০০ থেকে ৩০০ রিয়াল নেয় , সময় সাপেক্ষে।
অসুস্থ হলে বাংলাদেশ হজ মিশনের অফিসে চলে যাবেন মিসফালাহ রোডে । হিজরী রোডে ওদের ক্লিনিক ।প্রয়োজনে তারা আপনাকে বড় হাসপাতালে রেফার্ড করে দেবে , নিজেদের এম্বুলেন্সে নিয়ে যাবে । হাসপাতালটি আব্দুল আজীজ হাসপাতাল , মক্কার কাছেই নামকরা হাসপাতাল । হাজিদের খুব সন্মান করে তারা । এক পয়সাও লাগে না এই প্রসেসে। তবে আপনাকে হোটেলে ফিরতে হবে নিজ খরচায়।
হজের মূল কার্যক্রম শুরু হবার দিন ৪ এক আগে আপনাদেরকে হজের স্থান গুলো এবং বিভিন্ন বিখ্যাত স্থান দেখাতে নিয়ে যাবে । এটা আপনার হজের টাকার অংশেই পড়ে। মিনা , আরাফাত ও মুজদালেফা ঘুরিয়ে আনবে । মিনা ভাল করে চিনতে পারবেন কারণ মিনাকে বলা হয় তাবুর শহর । হাজারে হাজারে স্থায়ী তাবু সেখানে ।
জাবালে নূর : যেখানে রাসূল (সাঃ) প্রথম ওহী প্রাপ্ত হন , হেরা গুহা এখানে ।
জাবালে সুর : (মদীনায় হিজরত করার সময় রাসুল(সাঃ) কে কাঁধে নিয়ে আবু বকর (রাঃ) এখানে উঠেছিলেন , এটার উচ্চতা ২৫০০ ফুট। আবু বকর (রাঃ)কে সাপে কেটেছিল এখানেই ।
জাবালে রহমত : আরাফার ময়দানে , এখানে রাসূল (সাঃ) বিদায় ভাষন দিয়েছিলেন - এটাই হবে হাসরের ময়দান.
জান্নাতুল মাওলা : খাদিজা (রাঃ) এর কবর এখানে। কথিত আছে যে জান্নাতুল মাওলা ও জান্নাতুল বাকিতে কবরের আযাব হয় না / মাফ।
এসব স্থান আপনাদেরকে দেখাতে নিয়ে যাবে ।
**********************************************************************************************
মিনাতে যাবার আগের দিন মানে সাত তারিখ রাতে ( প্রকারান্তে সেটা আসলে ৮ তারিখের শুরু) আপনাকে রেডি থাকতে বলা হবে হজের ইহরাম বাঁধার জন্য । বলা হবে যে রাত সাড়ে আট টার (মানে 'এশার) পর যে কোন সময়ে গাড়ি আসবে । আপনাকে ওরা দরকার হলে ঘুম থেকে ডেকে নেবে।
এই ঘোষনা শোনার সময় আপনাদেরকে বলে দেবে যে 'আসরের সময় তারা দল বেঁধে যাবে। সেখানে নামাজ আদায় করে হজের জন্য দুইর রাকাত নামাজ পড়ে নেবে (নফল)।
খুব বেশী কিছু নিতে হবে না । তবে ইহরামের ২য় সেট কাপড় , বিছানা ও বালিশ নিতে ভুলবেন না ।
সকালে না নিয়ে আগের দিন রাতে নেবার কারণ হল , সকালে হাজারে হাজারে বাস এক সাথে মুভ করবে । এই ঝামেলা এড়ানোর জন্যই মোয়াল্লেমের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা করা থাকে।
বাস দেরিতে আসছে কেন - এই নিয়ে হৈ চৈ না করে তসবীহ পড়বেন বা ঘুমিওয়ে নেবেন । তবে টেনশনে ঘুমাতে পারি নাই।
মিনা মক্কা থেকে ৪-৫ মাইল দুরত্বের । যেতে যেত হয়ত রাত ১/২ টা বেজে যেতে পারে । তাবুগুলো এসি করাই থাকে । এক একটা তাবুতে প্রায় ১০০ জন থাকে । পুরুষ মহিলা আলাদা। তাবুর পাশে পানির ড্রাম আছে।
কার্পেটের উপর পাতলা বেডিং থাকে যার প্রস্থ এক হাত হবে কি না সন্দেহ। এখানেই আপনাকে শুতে হবে ।
মোবাইল চার্জেরও ব্যবস্থা আছে , তবে সেটার জন্য তটস্থ থাকতে হবে । মোবাইলে সব সময় চার্জ রাখবেন এবং ব্যালেন্সও থাকা চাই ।
বাথরুমের সমস্যার কথা শুনে এসেছি হজে আসার আগে থেকেই । আসলেই এখানে টাফ ফাইট দিতে হয় , তবে আগেভাগে গিয়ে সেরে আসলে সমস্যায় পড়তে হয় না বা যখন কোন রাশ থাকে না সে সময়ে যেতে পারেন। আমাদের মোয়াল্লেমের পাকিস্তানী হাজিরাও ছিল আরেক পাশে । তাদের টয়লেট আমাদেরটার চেয়ে কম হট্টগোলের।
বাথরুমে যে কল থাকে তাতে পাইপ লাগানো থাকে , তবে হ্যান্ড গান নেই । ফলে কল ধরে চালু করতে হয় । বেশীর ভাগ সময়ই পানি ছিটকে যায় এবং পাশের বাথরুমে চলে যায় নিচে ফাঁকা আছে বলে।
যেদিন আরাফাতে যাবেন তার আগে বিকেলে আপনাদেরকে সাথে নিয়ে দূর থেকে জামারাহ দেখাতে নিয়ে যাবে এবং কোন পথে জামারাতে পাথর মারতে যাবে এবং কোন পথে ফিরে আসবে সেটা ব্রিফ করবে।
রাতের জন্য বলা থাকবে যে গাড়ি আসবে , আরাফাতে যাবার জন্য তৈরি থাকতে । যদিও পরের দিন যোহর থেকে থাকার নিয়ম , তবুও রাতেই নিয়ে যায় । কারণ ঐ মিনায় যাবার কারণটাই। এখানে ব্যাপারটা আরও টাফ ।
আরাফার ময়দানের তাবুগুলো অস্থায়ী । এখানে কার্পেট থাকে , তবে বিছানা বালিশ আপনার ।
এখানে এসে ঘুমানোর পর সকালে উঠে তসবীহ পড়া শুরু করবেন এবং ক্বুরআন পড়বেন । একটুও সময় নষ্ট করবেন না । কারণ এখানে দোয়া কবুল হয় ।
গোসল করার সময় উপরের নিচের কাপড় ভিজানোর পর নতুন সেটের নিচের পাড়টা আগে জড়িয়ে ফেলবেন । কোনভাবেই ইহরামের কাপড় সম্পুর্ন ছাড়া হবেন না ।
প্রচুর খাবার সরবরাহ করা হয় এসময় । তবে বেশী খেলে সমস্যায় পড়বেন ।
মাগরিবের বেশ আগেই আপনাদেরকে বাসে উঠিয়ে নেবে , 'আসরের নামাজের পর পরই । মাগরিবের আগে গাড়ি আরাফাতের ময়দান ক্রস করতে দেওয়া হয় না ।
গাড়িতে আগে উঠলেও আপনার গাড়ি মুভ করতে করতে মাগরিবের ঘন্টা খানেক পার হয়ে যাবে ।
শুরু হবে মুজদালেফার উদ্দেশ্য যাত্রা । মাত্র আধা ঘন্টার পথ বাসে গেলে (যদি রাস্তা ক্লিয়ার থাকে)। হেঁটে গেলে শুনেছি রাত ১০ টায় পৌছে যাওয়া যায় ।
আমরা পৌছেছিলাম রাত পৌনে দুই টায় । মানে বাসে চড়া থেকে প্রায় ৯ ঘন্টা ।
আরাফাত থেকে মুজদালেফা গমনের এই সময়টা খুব টাফ । প্রচন্ড ধৈর্য্য ধরতে হয় এসময়ে । এত দীর্ঘ সময়ের কারণে বাথরুমেরও কঠিন সমস্যায় পড়তে হয় । দেরীতে পৌছানো পর আপনাকে যে সমস্যাটা ফেস করতে হবে যে, প্রথমেই বাথরুম করতে যেতে হবে ।
মাগরিব ও এশার নামাজ একত্রে পড়ে নিতে হবে । জামারাহতে মারার জন্য পাথর সংগ্রহ করতের হবে ( পাথর মুজদালেফা থেকেই নিতেন রাসুল (সাঃ))। তাহাজ্জুদের নামাজ ও ফজরের নামাজ পড়ে মিনাতে যেতে হবে , হয় তাবুতে না হয় জামারাতে পাথর মারতে।
বাথরুম , মাগরিব ও এশার নামাজ একসাথে এবং পাথর সংগ্রহ করা - দেরীতে পৌছালে স্বল্প সময় পাওয়া যায় এগুলো করতে।
আল'হামদুলিল্লাহ ! আল্লাহই সব সহজ করিয়ে দিয়েছেন ।
ফজরের নামাজের পর দল বেঁধে যাবার কথা ছিল মিনায় তাবুতে । পথ ভুলে দল ছুট হয়ে গিয়েছিলাম ।
চলে যাচ্ছিলাম জামারাহের দিকে । আল্লাহ সহায় ছিলেন যে পাথরগুলো আমার সাথেই ছিল । পরে সবার পক্ষ থেকে পাথর মেরে এসেছিলাম ।
অনেক ঘুরাঘুরির পর মাগরিবের আগে আগে তাবুতে পৌছি । খুব টাফ সময় গিয়েছিল আরাফাত থেকে মুজদালেফা হয়ে জামারাহতে পাথর মেরে মিনায় তাবুতে ফিরতে । আল্লাহ সহায় ছিলেন বলে সব ঠিক হয়ে গিয়েছিল ।
প্রথম দিন শুধু বড় জামারাহতেই পাথর মারতে হয় । যে তালবিয়াহ সৌদিতে আসার পর থেকে পড়তেছিলেন , বড় জামারাতে ১ম দি নপাথর মারার ঠিক আগে বন্ধ করে দিতে হবে ।সূর্যোদয় থেকে সুর্যাস্ত পর্যন্ত সময়। ''আল্লাহু আকবার'' বলে প্রতিটা পাথর মারবেন ।
জামারাহতে পাথর মারার সময় কখনও প্রথমে যে রাশটা থেকে তাদের সাথে যাবেন না । ধৈর্য্য ধরে ৫-৭ মিনিট পর যাবেন । রাশ থাকবেন না তেমন । একেবারে বেড়ার গায়ে গা লাগিয়ে মারতে পারবেন ।
চারটা তলা থাকে জামারাতে গিয়ে পাথর মারতে । আগে এখানেই অনেক প্রানহানী হত বলে এই ব্যবস্থা করা হয়েছে । বিশাল হলরুমের মত ফাঁকা জায়গা। আগের মত সমস্যা হবার কথা না ।
জামারাহতে পাথর মেরে অপেক্ষা করতে থাকি এজেন্সীর লোকেদের ফোন কলের , ক্বুরবানী হয়েছে কি না (ক্বুরবানীর জন্য ৪৫০ রিয়াল করে নিয়েছিল)।
সমস্যা এমন হয়ে গিয়েছিল যে পথ হারিয়ে ফেলেছিলাম ,মোবাইলে চার্জও নেই ,ব্যালান্সও নেই। আল্লাহর অশেষ রহমতে একটা দোকানে পানি - জুস খেলাম , চার্জার ছিল চার্জ দিলাম এবং মোবাইলে রিয়াল ভরলাম । সেখানে জোহর ও আছরের নামাজও পড়লাম । একটু পরই এজেন্সীর লোক ফোন করলো যে ক্বুরবানী হয়ে গেছে । কাছেই বাংলাদেশী ভাই নাপিত সেজেছিলেন । তার কাছে ন্যাড়া হলাম ।
কি কঠিন অবস্থা থেকেই না আল্লাহ আমাদের খুব সুন্দরভাবে পথ দেখিয়ে বের করে এনেছিলেন !!!! সুব 'হান আল্লাহ ।
পরে দিন আর ভুল না করে এজেন্সীর লোক ও সহ যাত্রীদের সাথে যাই । ২য় ও ৩য় দিনে সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ার পর থেকে সূর্যাস্তের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত জামারাহতে পাথর মারার সময় । টানেলের ভেতর দিয়ে খুব সুন্দরভাবে গিয়ে পাথর মেরে আবার চলে আসি ।
ঐদিন রাতে মক্কায় চলে আসি রাত ১টা দেড়টায় ফরজ তওয়াফের জন্য । মনে আশংকা ছিল যে খুব রাশ থাকবে এসময়ে হারাম শরিফে তওয়াফের জন্য ।
আশ্চর্যজনকভাবে লক্ষ্য করলাম যে সেখানে ঐ সময়ে ভীড় নেই বললেই চলে । রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে পড়লাম ফরজ তওয়াফের উদ্দেশ্যে । পরে ফজরের নামাজ পড়ে রুমে ফিরে আসি ।
সকাল ১০ টায় বের হই মিনার উদ্দেশ্যে ৩য় ও শেষ দিনের মত পাথর মারতে । সূর্যাস্তের আগে মিনা ত্যাগ না করতে পারলে পরের দিন আবারও পাথর মারতে হবে - এরকম একটা হিসেব আছে।
৩য় দিনেও দলছুট হয়ে পড়েছিলাম পাথর মারার পর । পাথর মারার সময় যে রাশ থাকে তাতে পদদলিত হবার আশংকা থাকে এবং জুতা খোয়ানো তো মাস্ট।
মক্কায় ফিরতে ফিরতে 'আসর পেরিয়ে গিয়েছিল । কোন গাড়ি পাওয়া যাচ্ছিল না আগের দিনের মত কারণ সব গাড়িই ফুল প্যাকড্ । এসময়ে সাথে পানিও ছিল না । পানির পিপাসা যে কি জিনিস সেদিন হাড়ে হাড়েই টের পেয়েছিলাম । রোদের তাপও সেদিন প্রচন্ড মনে হচ্ছিল।
যা হোক রুমে ফিরে এলাম । এর পর স্বাভাবিক ভাবে দিন পার করতে লাগলাম । সময়ে সময়ে তওয়াফ করতাম । বাকী ছিল মক্কা ছেড়ে যাবার আগে বিদায়ী তওয়াফ করা।
চলবে .... ইন শা আল্লাহ
বিষয়: বিবিধ
১৬৮৮ বার পঠিত, ২৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
দেখবেন আল্লাহই সব রাস্তা ক্লিয়ার করে দিচ্ছেন ।
জাযাকাল্লাহু খায়েরান
২। অসুস্থ হলে বাংলাদেশ হজ মিশনের অফিসে চলে যাবেন মিসফালাহ রোডে । হিজরী রোডে ওদের ক্লিনিক। আপনাকে প্রায় আধা ঘন্টা হাটতে হবে, চাইলে গাড়িতেও যেতে পারেন।
৩। মোয়াল্লেমরা বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে নিয়ে যায় একদিন। তবে আপনি যদি সচেতন হয়ে নিজে গাড়ি ভাড়া করে সময় নিয়ে ঘুরে আসেন তাহলে বেশী ভাল লাগবে।
৪। ইংরেজী বলার চেয়ে হিন্দি/উর্দু বেশি কাজে আসবে, কারন ড্রাইভার, দোকানদার, ক্লিনার বেশির ভাগই হিন্দি/উর্দু বুঝে।
৫। মিনায় বাথরুম/টয়লেটে আপনাকে ভীড় এড়িয়ে চলতে হলে আযানের আধা ঘন্টা আগে - পরে গেলেই চলবে।
৬। আপনি যদি খুব বেশী বয়স্ক/অসুস্থ না হন তাহলে আরাফা থেকে হেটে মুজদালিফা গেলে আপনার সময় কম লগবে। তবে মসজদে নামিরার এখানে সবাই সুর্য ডোবার অপেক্ষায় থাকার কারনে এখানে এসে অনেক ধাক্কাধাক্কি হয়ে যায়, যেখানে আপনাকে অনেক ধর্য ধরতে হবে। আবার যখন মুজদালিফার কাছাকছি পৌছে যাবেন সেখানে আবারও অনেক ভীড়ের মধ্যে পড়তে হবে। যদি কয়েক জন যান তাহলে অবশ্যই কাধে বা হাতে ভাল ভাবে ধরে রাখবেন যেন কোনমতেই দলছুট না হয়ে যান।
৭। আপনার মোবাইলে ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে বা সাথে ম্যাপ থাকলে মিনায় হারিয়ে যাবার ভয় থাকে না, আর যদি হাড়িয়ে যানও তাহলে বিভিন্ন জায়গায় সাইন বোর্ড লাগানো থাকে "mina start here", "mina ends here"। আপনি সেই মিনার সীমানার ভিতরে অবস্থান করলেই হল, অতএব ভয় না পেয়ে সেই রাস্তায়ই সবস্থান করুন । অসংখ্য মানুষ এভাবে রাস্থায় অবস্থান করে সেখানে। পরদিন জামারায় কংকর মারার সময় সঙ্গীদের খুজে নিন.
৮.মিনায় আপনারা কোন তাবুতে অবস্থান করবেন তা কয়েকদিন আগেই জানা যায়। প্রয়োজনে এক দুইবার ঘুরে লোকেশন্টা দেখে আসতে পারেন। অথবায় মিনায় আপনাদের নিয়ে যাওয়ার পরও সময় থাকে দনের বেলায় লোকেশনটা ভাল ভাবে দেখে বুঝে চিনে নিন।
৯. ভয় পাবেন না, আসলে ওখানে সবার লক্ষ্যই এক, তাই হারিয়ে গেলে সাহস রাখুন , কারন যখন কংকর মারার সময় হবে তখন দেখবেন সবাই সেদিকে যাওয়া শুরু করেছে, আবার কংকর মারা শেষ হলে সবাই মিনার দিকে রওনা হচ্ছে.তারপর ও নিজের পরিচিত মানুষ জনের সাথে থাকলে কনফিডেন্স বেশি থাকে.
১০.নিজে ভাল করে নিয়ম কানুন গুলি জেনে যাবেন আগেই। আর সাথে অবশ্যই সেই বইটা রাখুন যেখানে নিয়ম কানুন গুলি সহীহ ভাবে দেয়া আছে।
সর্বোপরি হজ্জ্ব অনেক কঠিন হলেও আল্লাহ তায়ালার রহমত অফুরন্ত, আর এখন সুযোগ সুবিধাও অনেক ভাল করা হয়েছে। অতএব ভয় না পেয়ে আল্লাহর উপর ভরষা রেখে চলে যান, আল্লাহ চাইলে যেকোন কঠিন কাজ সহজ হয়ে যায়.
৬. একা একা বা সম বয়সী পুরুষেরা এটা পারে । সাথে মহিলা ও শিশু থাকলে গতি কমে আসে । এবং তাদের জন্য থামতে হয় ঘন ঘন।
৭. সৌদিতে আপনি চাইলেও হারিয়ে যেতে পারবেন না । যেটা হয় সেটা হল পেরেশানী ।
৮. মিনায় যাবার আগে খয়েরি রংয়ের কার্ড দেয় , এতে আপনাট মোয়াল্লেম নং , তাবু নং এবং লোকেশনের কথা লিখা থাকে । মিনার পাশে তিনটা ব্রিজ আছে : ফয়সাল , আব্দুল আজিজ ও আবদুল্লাহ(সম্ভবত) ।
যারা নিয়মিত আসা যাওয়া করে তাদের জন্য চিনে আসা যারা প্রথমবার গিয়েছে তাদের চেয়ে সহজ।
ভাল কিছু এড করে দিয়েছেন - জাজাক আল্লাহু খাইরান
ফরজ কাজ হচ্ছে সবার আগে । বেড়াতে যাওয়া সওয়াবের মধ্যে পড়ে না খুব একটা ।
আবু বকর (রাঃ)কে সাপে কেটেছিল এখানেই । আমার জানা মতে এই ঘটনা প্রমানিত নয়
অনেক সুন্দর লিখেছেন তবে আমার মতো হতভাগা আর নেই অর্ধেক পর্যন্ত পড়েছি
নিয়ত করুন আল্লাহর কাছে খাস দিলে । দেখবেন আল্লাহই সব কিছু সহজ করে দিচ্ছে ।
এই ঘটনা তো সত্য নয় তাহলে অপেক্ষা কোরলো কেমন কোরে ভাইয়া
২০১৪ তে শুক্রবার হজ হয়েছিল
পোস্ট গুলো লিখতে দেড় থেকে দুই ঘন্টা লাগে ।
দেরী হয়ে গেল। খুব ভালো লেগেছে আপনার হজ্জ বর্ণনা। জাযাকাল্লাহ খাইর
মন্তব্য করতে লগইন করুন