শাবনূরে তোলপাড় চলচ্চিত্র অঙ্গন

লিখেছেন লিখেছেন হতভাগা ০৫ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০২:৩৪:০০ দুপুর



05 Dec, 2013

বহুচারিণী খ্যাত শাবনূরের কর্মকাণ্ডে হতাশ এবং হতবাক হয়েছে চলচ্চিত্র জগৎ।শাবনূরে তোলপাড় চলচ্চিত্র অঙ্গন

গতকাল পত্র-পত্রিকায় শাবনূরের মা হওয়ার খবর প্রকাশ পেলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক চলচ্চিত্রকার বাংলাদেশ প্রতিদিনের শোবিজ বিভাগে ফোন দিয়ে তাদের উদ্বেগ ও নিন্দার কথা জানান। চলচ্চিত্রকারদের কথায় বিয়ে করা অপরাধ নয়। তারপরও শাবনূর তার বিয়ের খবর সবার কাছ থেকে গোপন করলেন কেন! শুধু গোপনই করেননি, মিডিয়ায় এই খবর মাঝেমধ্যে প্রকাশ হলে বরাবরই তা অস্বীকার করে আসছিলেন এবং সাংবাদিকদের মামলার ভয়ও দেখিয়েছেন তিনি। চলচ্চিত্রকাররা বলছেন, শাবনূর যদি মনে করে থাকেন বিয়ের খবর প্রকাশ হলে তার ফিল্ম ক্যারিয়ারের ক্ষতি হবে, তবে তা ভুল। কারণ তার সমসাময়িক অভিনেত্রী মৌসুমী ক্যারিয়ারের তুঙ্গে থাকা অবস্থাতেই বিয়ে করেছেন এবং বিয়ের পর চলচ্চিত্রের কাজে এতটুকু ক্ষতি হয়নি বা দর্শক গ্রহণযোগ্যতা কমেনি তার। এর আগে শাবানা, ববিতাসহ অনেক নায়িকাই বিয়ে করেও জনপ্রিয়তা অক্ষুণ্ন রেখেছিলেন। চলচ্চিত্র জগতের মানুষের কথায়, বারে বারে বিয়ের খবর অস্বীকার করে এখন সন্তান হওয়ার কথা ফাঁস হয়ে পড়লে তিনি আসলে বিয়ে করেছেন কিনা তা নিয়েও সবার মধ্যে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। অনেকে অনাগত এই সন্তানকে অবৈধ বলে আখ্যা দিয়েছেন। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, বিয়ের কথা গোপন করলেও অনাগত সন্তানের কথা কেউই গোপন করে না। চলচ্চিত্রকারদের মতে, শাবনূরের এ ঘটনার কারণে চলচ্চিত্রশিল্পী, বিশেষ করে অভিনেত্রীদের প্রতি সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসযোগ্যতা মারাত্দকভাবে নষ্ট হয়েছে।

সাধারণ মানুষ বলছে চলচ্চিত্রের নায়িকাদের বিয়ে এবং সন্তানের কোনো ঠিকঠিকানা নেই। এ অবস্থায় চলচ্চিত্রকাররা ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, চলচ্চিত্র জগতের মুখে এভাবে কালিমা লেপনের অধিকার শাবনূরের নেই। তাকে শিল্পী সমিতি থেকে বহিষ্কার করা উচিত।

এদিকে গতকাল প্রকাশিত খবর অনুযায়ী ২০১১ সালের ৬ ডিসেম্বর অনিক নামের এক ছেলেকে বিয়ে করেছেন শাবনূর। এখন অন্তঃসত্ত্বা তিনি। ২২ ডিসেম্বর সন্তান ভূমিষ্ঠ হবে। শাবনূরের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা সন্তানের কথা স্বীকার করলেও বিয়ের বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।

অনিকের সঙ্গে শাবনূরের বিয়ের খবর প্রথম প্রকাশ হয় বাংলাদেশ প্রতিদিনের শোবিজ বিভাগে চলতি বছরের ৮ জানুযারি। ওই খবরে বলা হয়েছিল- নিজের চেয়ে কম বয়সের একটি বিবাহিত ছেলেকে গোপনে বিয়ে করেছেন শাবনূর। ছেলেটির নাম অনিক। এই ছেলের সঙ্গে ২০০৮ সালে 'বধূ তুমি কার' চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি। একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিবাহিত অনিক শাবনূরের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ার পর স্ত্রীকে তালাক দেন। ওই চলচ্চিত্রে সাদমান নামে অভিনয় করেছিলেন অনিক। এখন বিভিন্ন সূত্র এবং ওই চলচ্চিত্রের পরিচালক বজলুর রহমান জানিয়েছিলেন শুটিংয়ের সময় দুজন প্রায়ই সেট থেকে উধাও হয়ে যেতেন। তাদের বিভিন্ন জায়গায় ঘনিষ্ঠভাবে দেখা যেত এবং প্রায়ই তারা সোনারগাঁওসহ বিভিন্ন হোটেলে উঠতেন। এই সংবাদের সত্যতা জানতে তখন শাবনূর ও অনিক দুজনের সঙ্গেই যোগাযোগ করা হলে শাবনূর বলেন, এসব গুজব এখন সয়ে গেছে। এ পর্যন্ত অনেককেই তো আমি বিয়ে করেছি। সত্য-মিথ্যা তো আপনা আপনিই প্রমাণ হয়েছে। আমার তো নতুন করে কিছু বলার নেই। শত্রুরা যদি এভাবে মজা পায় পাক। এতে আমার কিছু যায় আসে না। অনিক বলেন, শাবনূর ম্যাডাম বয়সে আমার অনেক বড়। তাকে বড় বোনের মতো শ্রদ্ধা করি। এ ধরনের কুৎসা রটনা সত্যিই দুঃখজনক। আমি মর্মাহত।

চলচ্চিত্রকার এবং সাধারণ মানুষের এখন প্রশ্ন- শাবনূর তাহলে ছোট ভাইকে বিয়ে করলেন!

৮ জানুয়ারি এই সংবাদটি প্রকাশ হলে শাবনূর ফোনে বিভিন্ন লোক মারফত এই প্রতিবেদককে ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলারও ভয় দেখিয়েছিলেন।

১৯৯৩ সালে চলচ্চিত্রে আসার পর থেকে বিভিন্নজনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে বারবার খবরের শিরোনাম হন শাবনূর এবং বারবারই প্রেম-বিয়ের কথা অস্বীকার করেন তিনি। ১৯৯৩ সালে প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার এহতেশামের হাত ধরে চিত্র জগতে আগমন তার। শুরুতেই এহতেশামের সঙ্গে তার প্রেমের খবর চাউর হয়। এরপর ওই ছবির নায়ক সাবি্বরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান তিনি। পরে সাবি্বরকে ছেড়ে সালমান শাহর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেন। এতে সালমানের দাম্পত্যজীবনে অশান্তি নেমে আসে এবং সালমানের অপমৃত্যুর জন্য অনেকে শাবনূরকেই দায়ী করেন। এরপর চিত্রনায়ক রিয়াজের সঙ্গে তার গোপন প্রেম- বিয়ের খবর দীর্ঘদিন টিকে ছিল। রিয়াজ পরে অন্যত্র বিয়ে করলে হতাশ শাবনূর তার ছোট বোন ঝুমুরের স্বামীর ব্যবসায়িক পার্টনার মাইকেল চ্যাংয়ের সঙ্গে প্রণয়ে জড়ান।

২০০৭ সালে উভয়ে কঙ্বাজারে মধুচন্দ্রিমা শেষ করে ফেরার পথে দুর্ঘটনায়ও পতিত হয়েছিলেন। অবশেষে অনিককে বিয়ে ও অনাগত সন্তানের কথা স্বীকার করার মধ্য দিয়ে আগের সব ঘটনা সত্য প্রমাণ ও নিজের অস্তমিত ক্যারিয়ারের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুঁকলেন শাবনূর।

উৎসঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন

বিষয়: বিবিধ

২৫২১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File