হতভাগার ফর্মূলা

লিখেছেন লিখেছেন হতভাগা ৩১ অক্টোবর, ২০১৩, ১১:১২:২৬ রাত

এটা একান্তই আমার নিজের ভাবনা । এর সাথে সহমত হবার সম্ভাবনা নেই।

বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে নির্বাচন হওয়াটা একটা বিরাট প্রশ্নের সন্মুখীন হয়ে পড়েছে । কোন দলই একে অন্যকে মানছে না এবং অন্যের প্রস্তাবকেও নাকচ করে দিচ্ছে ।

একে অন্যকে না মানার ফলাফল হিসেবেই এসেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার , যা কি না পৃথিবীর কোন দেশেও নেই ।

বিদেশীরা এ নিয়ে মুচকি মুচকি হাসে এই ভেবে যে - এরা নিজেরাই নিজেদেরকে মানে না । এরা কিভাবে উন্নতি করবে ?

তবে পারষ্পরিক এই না মানাকে তারা খুব গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখে । কারণ এর ফলে এদেশের অভ্যন্তরীন বিষয়ে নাক গলানো এবং দুতিয়ালী করার সুযোগ পায় তারা ।

দুই প্রধান গোসসা করে আর তাতে বিদেশী বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা নাক গলাতে এগিয়ে আসে । তারা যে এভাবে বাংলাদেশের ব্যাপারে এগিয়ে আসে সেটা তারা নিজেদের দেশের ব্যাপারে কাউকেই করতে দেবে না ।

পৃথিবীর আর কোন দেশের অভ্যন্তরীন ব্যাপারে বাইরের দেশ এতটা নাক গলায় না যেটা গলায় বাংলাদেশের ব্যাপারে ।

স্বাধীন হবার পর এমন কোন সময় যায় নি বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ কোন সিদ্ধান্ত নিজেরা বাইরের নাক গলানো ছাড়া এককভাবে নিয়েছে ।

রিসেন্টলি যে জিনিসটা আমাকে খুবই মর্মাহত করেছে তা হল --

বাংলাদেশে নিযুক্ত আমেরিকান রাষ্ট্রদূত ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে গেছেন এবং তা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন ব্যাপারেই ।

মজিনা যদি বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূতের সাথে দেখা করতেন তাহলে না হয় কোন সমস্যা ছিল না । এটাই প্রমাণ করে যে বাংলাদেশকে তারা কতটা দাম দেয় । উনি এ ব্যাপারে হাসিনা - খালেদার সাথে কথা না বলে গেলেন ভারতে মেননের সাথে দেখা করতে বাংলাদেশের ব্যাপারে !

একটা স্বাধীন দেশের জন্য এটা যে কতটা লজ্জাজনক যে ,তার ব্যপারে কি সিদ্ধান্ত হবে তা নিয়ে বাইরের দেশ তাদের নিজেদের মধ্যে শলা করে , আর আমরা চাতক পাখির মত চেয়ে থাকি !!

বাংলাদেশের মানুষই বা কেন এর প্রতিবাদ করে না ? একজন নেত্রী বলেন যে উনি তেল বিক্রি করতে করতে রাজি হন নি বলে তাকে আসতে দেওয়া হয় নি । তাহলে বাংলাদেশের জন গনের ভোটের কি কোন মূল্যই নেই ?

আসলে বাংলাদেশের জন গন মেনে নিয়েছে যে বাংলাদেশের ব্যাপার এখন আর বাংলাদেশের হাতে নেই । এটা বাইরে থেকেই নির্ধারিত হয় । উনাদেরকে কে বেশী খুশি করার অফার দিতে পারবে তার উপরই নির্ভর করে কে আসছে পাওয়ারে । জন গন ভোট দেয় নাম কা ওয়াস্তে । আগেই সিলেক্ট করা হয়ে যায় মসনদের উত্তরাধিকারী কে হচ্ছে ।

তাই এই পালাবদলের সময় হাসিনা ও খালেদা নিজেরা একে অন্যের প্রস্তাব মানবে না এটা একজন সদ্য ভূমিষ্ট হওয়া শিশুও বুঝে ।

২০০ বছর বৃটিশদের গোলামী , তার আগে মোগলদের গোলামী করার ফলে বাংলাদেশীদের রক্তে এখনও গোলামী লেগে আছে । সাদা চামড়ার লোক দেখলেই বাংলাদেশীদের গোলামী করার মানসিকতা জেগে উঠে । বাজারে গেলে বাংলাদেশীদের বিদেশী পণ্য কেনার বাতিক স্বাধীনতার আগে থেকেই ।

তাই আমার ব্যক্তিগত প্রস্তাব হচ্ছে :

যেহেতু বাংলাদেশে এখন আর কেউ সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি নেই এবং সর্বদলীয় সরকারও প্রধান বিরোধী দল মানতে চাইছে না - তাই নির্বাচনকে অর্থবহ করতে চাইলে দেশের বাইরে থেকে লোক আনতে হবে ।

এক্ষেত্রে আমার পছন্দ আমার দেখা আমেরিকার সেরা প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ।

যদিও ক্লিন্টন এখন সাবেক তবুও এখনও একটা সরকার পরিচালনা করতে সে পুরোপুরি সক্ষম ।

ক্লিন্টন এবং তার দুই আমলের বাছাই করা স্টাফদের নিয়ে যদি একটা সরকার গঠন করে বাংলাদেশের জন্য ৬-১২ মাস কাজ করানো হয় শুধু মাত্র নির্বাচন করানোই নয় এই দেশের মনমানসিকতা পরিবর্তনের জন্য তাহলে দুই নারীর দুই যুগ যাবত ক্যাচালে পিষ্ট এই হতভাগা দেশ একটা সঠিক ট্র‍্যাকে আসতে পারতো ।

যেহেতু বাংলাদেশের সব ব্যাপারে বিদেশীরা সদাই নাক গলায় , তারা এই একটা নাক গলানোর কাজ করুক এবং তা আক্ষরিক অর্থেই বাংলাদেশের ভালোর জন্য ।

বিষয়: বিবিধ

১২৫২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File