সর্বদলীয় সরকার, দল ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র পাচ্ছেন খালেদা
লিখেছেন লিখেছেন হতভাগা ১৯ অক্টোবর, ২০১৩, ০৪:০০:৫৯ বিকাল
গত শুক্রবার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়ে তাতে বিরোধী দলের সদস্যদের নাম প্রস্তাব করতে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রতি প্রধানমন্ত্রী আহবান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এখনো জানায়নি জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। তবে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বদলীয় সরকার গঠনের প্রস্তাবে রাজনীতিতে ‘ভাঙ্গা-গড়ার ষড়যন্ত্র’ পাচ্ছেন!
প্রধানমন্ত্রীর গতকালের ভাষণের অনেক আগে খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে বিএনপিকে ভাঙতে সরকার ‘ষড়যন্ত্র’ করছে বলে অভিযোগ করেছিলেন। নির্দলীয় সরকারের দাবিতে বিএনপি যখন চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, ঠিক এ মুহুর্তে প্রধানমন্ত্রীর এ প্রস্তাবে ‘নতুন রাজনৈতিক খেলা’ আছে বলে মনে করছেন খালেদা জিয়া। বিএনপির শীর্ষ কয়েক নেতার কর্মকাণ্ড, দলটির নির্বাচনী প্রতীক দিয়ে নতুন আরেকটি রাজনৈতিক দল গঠনের প্রক্রিয়া ইত্যাদি বিষয়গুলো খালেদা জিয়া গভীরভাবে নজর রাখছিলেন। দলছুট, সংস্কারপন্থী ও সাবেক কয়েক বিএনপি নেতা দল ভাঙ্গার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বলে সন্দেহ করে আসছেন খালেদা জিয়া। তারাসহ বিএনপির অনেকে প্রধানমন্ত্রীর সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাবে রাজী আছেন।। খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ দুজন বিএনপি নেতা প্রিয় দেশকে আজ দুপুরে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
অন্যদিকে নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকার গঠনের প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবের একদিনের মাথায় দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া। আজ শনিবার রাতে রাজধানীর গুলশানে নিজের কার্যালয়ে দলের নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে তিনি বৈঠক করবেন। এরপর আগামীকাল রোববার ১৮ দলের জোট নেতাদের সঙ্গে তার বৈঠকের সূচি রয়েছে।
দুই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব নিয়ে খালেদা জিয়া আলোচনা করবেন বলে সূত্র জানায়। বিএনপি নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি থেকে সরে আসবে না, সর্বদলীয় সরকারের গঠনের প্রস্তাবে সাড়া দেবে না বলেও সূত্রটি উল্লেখ করে।
খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ দুজন বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে দীর্ঘ দিন ধরে বলা হচ্ছে, বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে। দলের চেয়ারপারসন থেকে শুরু করে শীর্ষ নেতারা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, নির্দলীয় সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। এরপরও সরকার দাবি করছে, বিএনপি নির্বাচনে আসবে। কারণ, বিএনপির কয়েক নেতাকে দিয়ে নতুন দল গঠন করিয়ে নির্বাচনে নেয়ার প্রক্রিয়া চালিয়ে আসছে সরকার। শেষ পর্যন্ত তাদেরকে নিয়ে কথিত সর্বদলীয় সরকার গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রিয় দেশ’র কাছে অভিযোগ করেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ভাষণে যখন সমঝোতার আহবান জানান, তখনও বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় পুলিশ অবরুদ্ধ করে রাখে। তার ভাষণের পরদিন থেকে ঢাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। আমাদের ২৫ অক্টোবরের সমাবেশ নস্যাৎ করতে এগুলো করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবটি আমরা পূঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা, বিশ্লেষণ করব। দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিষয়টি বিস্তারিতভাবে আলোচনা হবে।’
বিএনপির যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ প্রিয় দেশকে জানান, ‘জাতীয় স্থায়ী কমিটির আজ শনিবারের বৈঠকে চলমান আন্দোলন এবং গতকাল প্রধানমন্ত্রীর দেয়া প্রস্তাবের বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।’
উল্লেখ্য, আজ রাতের বিএনপির এ বৈঠক পূর্বনির্ধারিত। ২৫ অক্টোবরের আন্দোলনের চূড়ান্ত কর্মসূচি ঠিক করতে গত ১৫ অক্টোবর স্থায়ী কমিটির এ বৈঠক ডাকেন খা্লেদা জিয়া। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। আঠারো দলের জোটের শরিকরা প্রত্যাখ্যান করলেও নির্বাচনকালীন সময়ে সর্বদলীয় মন্ত্রিসভা গঠনে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবকে গঠনমূলক ও ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের মধ্যে অনেকে।
উৎসঃ প্রিয়দেশ
বিষয়: বিবিধ
১১৭৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন