সব পাখিই মাছ খায় , দোষ হয় মাছরাঙ্গায়
লিখেছেন লিখেছেন হতভাগা ২৪ জুন, ২০১৩, ০৯:৫৭:৪৭ রাত
ক্রিকেট নিয়ে মাতামাতি শুরু করি সেই ১৯৮৭ থেকে রিলায়েন্স ওয়ার্ল্ড কাপের সময় । যেহেতু ঐ সময়ের দিন গুলোতে বাংলাদেশ তেমন ভাবে ছিল না তাই পাকিস্তান ছিল আমার ফেভারিট টিম এবং ২য় ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ।
ভারত - পাকিস্তান খেলার সময় খুব টেনশনে থাকতাম । পরে যখন বাংলাদেশ চলে আসলো সবগুলো হয়ে গেল সেকেন্ড টিম ।
বাংলাদেশের খেলা নিয়ে প্রথমে খুব একটা এসপেকটেশন প্রথমে না থাকলেও এখন আছে ।
প্রিয় বাংলাদেশ এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে না খেলায় খুবই বিরক্তি বোধ করেছি আইসিসির র্যাংকিংয়ের উপর । এই সেদিন বাংলাদেশ হারালো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে , সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে !
বাংলাদেশ না থাকাতে এবারের একটা খেলাও দেখিনি । ইদানিং ক্রিকেট খেলা আর ভাল লাগে না দেখতে , কারন সবখানেই ম্যাচ ফিক্সিং ঢুকে পড়েছে ।
একটা বিষয় লক্ষ্য করলে দেখা যায় এসব ম্যাচ/স্পট ফিক্সিং পাকিস্তানীরাই ম্যাক্সিমাম করলেও জুয়াড়ীর সবাই কিন্তু ভারতীয় । আইপিএলে শ্রীশান্তরা ধরা খেলেও এখন তারা জামিনে ।
আর আমাদের আশ্রাফুল গাধার মত সবকিছু আগে ভাগেই শিকার করে এখন সাসপেন্ডেড । কিন্তু আকসুর রিপোর্ট এখনও বিসিবির হাতে আসে নাই ।
আমার এই পোস্টের মূল বিষয় হল , গতকাল যে ফাইনাল হয়ে গেল চ্যাম্পিয়নস ট্রফির তা ছিল ২০-২০ রই ফাইনাল । বার বার বৃষ্টিবিঘ্নিত এই ম্যাচ শেষ মেষ ২০ ওভারে এসে ঠেকে । ইংল্যান্ডে সারা বছরই বৃষ্টি হয় । কেন যে এইসব দেশে ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফেলে ? আজিব কাজকারবার এই আইসিসির ! ৪-৫ টা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ বৃষ্টি খেয়ে ফেলেছিল ।
যা হোক , প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভারত করে ১২৯/৭ (২০) । ইংল্যান্ড হারে ৫ রানে ১২৪/৮ (২০) ।
আমি আগেই বলেছি যে একটা খেলাও দেখিনি এই চ্যাম্পিয়নস ট্রফির । আজ সকালে নেট সার্চ করতে গিয়ে দেখি যে খেলার এই অবস্থা !
এই অবস্থা এজন্য বললাম কারন , যারা ক্রিক ইনফো নিয়মিত সার্চ করেন তারা খেলার স্কোর কার্ড দেখলে বুঝবেন দেয়ার ইজ সামথিং ফিসি ।
ইংল্যান্ডের এক পর্যায়ে জিততে দরকার ছিল ১৫ বলে ২০ রান , হাতে ৬ উইকেট । টি টুয়েন্টির এই যুগে এটা কোন ব্যাপারই ছিল না । কিন্তু ইংল্যান্ড এই ২০ বলে চার উইকেট হারিয়ে করলো ১৪ রান!
ব্যাপারটা আপাত দৃষ্টিতে স্বাভাবিক মনে হলেও পারিপার্শিক পরিবেশ বিবেচনা করলে এতে সন্দেহ দানা বাঁধতে বাধ্য ।
ইংল্যান্ডের মত স্ট্যাবল একটা টিম পারলো না ১৫ বলে ৬ উইকেট হাতে রেখে ২০ রান করতে , তাও আবার নিজেদের মাটিতে !!
ইংল্যান্ডের জায়গায় আজ যদি পাকিস্তান হত তাহলে কি সবাই একেবারে বিনা সন্দেহে ব্যাপারটি হজম করে নিতো ?
বর্তমানে আইসিসিকে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের ব্যাপারে খুব কড়া হিসেবে দেখা গেলেও ভারতের ব্যাপারে তারা বেশ লিবারেল । কারণ হল ভারতের বিশাল বাজার । আইসিসি নিজের ফান্ড বড় করতে ভারতকে সবসময়ই ফেভার করে থাকে ।
যত ম্যাচ ফিক্সিং হয়েছে বলির পাঠা বানানো হয়েছে নেহায়েত বাটে পড়ে ফিক্সিং করা প্লেয়ারগুলোকে । এদেরকে সাজা দিয়ে আইসিসি আড়াল করে রেখেছে সেইসব বাজীকরদের যারা ভারতীয়ই সবাই । এইসব ভারতীয় বাজিকরদের সুবিধার জন্য আইসিসির প্রত্যক্ষ সাপোর্টে আইপিএল শুরু করেছে বিসিসিআই । এই আইপিএলের জন্য আইসিসি তাদের বার্ষিক ক্যালেন্ডারকে পর্যন্ত এডজাস্ট করেছে ।
আইপিএলে ব্যাপক টাকার ছড়াছড়ি বলে আইসিসিও এর লোভ সামলাতে পারে নাই । আইসিসি কিন্তু পরোক্ষভাবে এই ফিক্সিংয়ের জন্য দায়ী কারণ তারাই জুয়াড়ীদের জুয়া খেলার একটা ফিল্ড গড়ে দিয়েছে ।
এবারের আইপিএলে শ্রীশান্তরা ধরা খেলেও আকসু আছে আশরাফুল তথা বাংলাদেশকে পচাঁনোর কাজে । আইসিসি হচ্ছে বিসিসিআই এর দাশ , তার পথের কাঁটা নির্মুলে সে দায়িত্ব নিয়েছে ।
এখানে প্রশ্ন আসতে পারে ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়েরা কেন ফাইনালে হারতে যাবে ? বরং ভারত ভাল খেলেই ফিরে এসেছে এবং জিতেছে । এটা তো ক্রিকেটে হরহামেশাই হয় ।
হ্যা হয় , এখনও হয় এবং আগেও হত । কিন্তু আগে ম্যাচ ফিক্সিং ছিল কম , আগে আইপিএলের টাকার ঝনঝনানি ছিল না । এখন আছে । আছে বলেই সবকিছুকেই এত সহজভাবে নিতে ভয় লাগে ।
আইসিসির দরকার ফান্ড , তার জন্য তার দরকার বিশাল বাজার ধরা এবং তা ধরে রাখা নিশ্চিত করা ।
ক্রিকেটের আবিষ্কারক হলেও ইংল্যান্ড কিন্তু এই খেলাতে খুব একটা সফল দল না ।
স্কোর কার্ডের দিকে একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে ইংলিশদের শেষ আউট হওয়া চার ব্যাটসম্যান কিন্তু আইপিএলে খেলে বা খেলেছে ।
আর আগে ২০১১ এও ভারত ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতেছিল শ্রী লংকার সাথে ফাইনাল খেলে । ওটাও একসময়ে আইসিসির সন্দেহে চলে এসেছিল । পরে আর কোন খবর জানা যায় নি ।
২০১১ ও এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ভারত হয়ত যোগ্য দল হিসেবেই জিতেছে , কিন্তু প্রতিপক্ষ এমন ভাবে খেলেছে যে ,তাদের মনেই হয় নি তারা আদৈ ফাইনাল ম্যাচ খেলতে এসেছে এবং জিতলেই যে চ্যাম্পিয়ন এটা তারা মাথায় রেখে খেলছে ।
আইসিসির এই দুটো ফাইনালের ব্যাপারে তদন্ত করা উচিত ক্রিকেটের বৃহত্তর স্বার্থে । ভদ্রলোকের খেলা হিসেবে এখন কেউ আর ক্রিকেটের কথা বলে না । এখন সবাই বলতে শুরু করবে ক্রিকেট জুয়া খেলার আরেক নাম ।
শুধুমাত্র একটা বিশেষ দেশটে প্রায়রিটি দিতে গিয়ে আইসিসি ক্রিকেটকে ধ্বংসের দারপ্রান্তে নিয়ে গেছে ।
বিষয়: বিবিধ
১২৪২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন