জামায়াত শিবিরের সশস্ত্র প্রতিরোধে বাঁশখালীতে পুলিশি অভিযান পণ্ড ।। লাঠিসোঁটা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নামে শতশত লোক।
লিখেছেন লিখেছেন ইসলামের বাংলাদেশ ১৮ মার্চ, ২০১৩, ০৩:২২:৩৬ দুপুর
জামায়াত শিবিরের সশস্ত্র প্রতিরোধে বাঁশখালীতে পুলিশি অভিযান পণ্ড ।। লাঠিসোঁটা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নামে শতশত লোক
বাঁশখালী প্রতিনিধি ॥
বাঁশখালীতে জামায়াত শিবিরের সহিংসতার ১৬ দিন পর প্রথম বড় ধরনের অভিযান চালাতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছে থানা পুলিশ । জামায়াত শিবিরের ধাওয়া খেয়েই ফিরে আসতে হয়েছে ৭০ সদস্যের পুলিশ দলকে। উপজেলার শেখেরখীল এলাকায় শনিবার রাতে আসামি ধরতে গিয়ে ইটখোলা নামক স্থানে সশস্ত্র প্রতিরোধের মুখে পড়ে পুলিশ। জামায়াত-শিবিরের ধাওয়ার মুখে পুলিশ এলাকায় ঢুকতে পারেনি বলে জানা গেছে। এ সময় তারা রাস্তায় গাছ ফেলে ব্যারিকেড দেয়। পুলিশি অভিযানের তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ায় জামায়াত শিবির সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, পুলিশের উপস্থিতির সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে স্থানীয় বিভিন্ন মসজিদ থেকে মাইকিং করে প্রায় ২ হাজার নেতা-কর্মীকে লাঠি-সোঁঠা, ধারালো অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে জড়ো করে পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে এলাকা প্রকম্পিত করে তুলে জামায়াত শিবির। এ ঘটনা জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত পুঁইছড়ি, চাম্বল, গন্ডামারা ও ছনুয়াতে ছড়িয়ে পড়লে সেখানেও জামায়াত শিবিরের নেতা কর্মী সমর্থকরা রাস্তায় নেমে পড়েন। অবস্থা বেগতিক দেখে প্রায় ৭০ সদস্যের পুলিশ দল থানায় ফিরে যায়। এ নিয়ে বাঁশখালী জুড়ে আবারো আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।
শেখেরখীলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. ইদ্রিছ বাদশা বলেন, শেখেরখীল নিয়ে কোন কিছু বলার অবস্থা নেই। পরিস্থিতি খুবই খারাপ। পুলিশ ধর, পুলিশ ধর বলে মসজিদের মাইক থেকে মাইকিং করে জামায়াত-শিবির কর্মীদের জড়ো করা হয়েছিল রাতে। পুলিশ লোকজন বেশি দেখে ফিরে গেছে। অভিযোগ ওঠেছে, থানার কর্তব্যরত কয়েকজন কনস্টেবল তথ্য পাচারের সাথে জড়িত থাকতে পারেন। তাদের কারণে পুলিশের অভিযান ব্যর্থ হচ্ছে বলেও অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের। উপজেলা সদরের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, ঊর্ধ্বতন প্রশাসনের উচিত এসব তথ্য পাচারকারী পুলিশদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনা। তাহলে বাঁশখালীর ধ্বংসযজ্ঞের প্রকৃত রহস্য বের হয়ে আসবে।এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাঁশখালী আসার আগে ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুস সবুর এবং থানার ওসি(তদন্ত) মোহাম্মদ শাহজাহানকে ক্লোজড করা হলেও তারা গতকাল রবিবার ১৭ মার্চ পর্যন্ত থানায় অবস্থান করছেন। এমনকি গত শনিবার সকালে ওসি(তদন্ত) মোহাম্মদ শাহজাহান বাহারছড়া ডাকাতির ঘটনা তদন্তেও গিয়েছেন। অন্যদিকে নতুন ওসি কামরুল ইসলাম যোগদান করলেও ক্লোজড করা দুই ওসি পুনরায় কর্মস্থলে থাকার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন বাঁশখালী পৌরসভার কাউন্সিলর প্রণব দাশ। এদিকে দুই ওসি’র ঘুষ বাণিজ্য এবং জামায়াত প্রীতি নিয়ে অভিযোগ তুলে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের পক্ষে ব্যানার টাঙ্গানো হয়েছে উপজেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, পুলিশের মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার , র্যাবের মহাপরিদর্শক মোখলেছুর রহমানসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাঁশখালীর ধ্বংসযজ্ঞ ঘুরে দোষীদের গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দেয়ার পর পুলিশ আসামি ধরতে প্রথম বড় ধরনের অভিযান চালাতে গিয়েই হোঁচট খেয়েছে। বাঁশখালী থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, শেখেরখীলে অভিযানে পুলিশের ৭০ জনের বিশেষ দল ছিল। জামায়াত-শিবিরের প্রতিরোধের মুখে রাতের অন্ধকারে প্রাণহানির আশংকায় তাদের ফিরে আসতে হয়েছে। তথ্য ফাঁসসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি থানায় নতুন। যাবতীয় বিষয় নিয়ে তদন্ত করে পরে কথা বলব।
বাঁশখালীতে ৪০ জন র্যাব সদস্য নিয়ে সার্বক্ষণিক কর্তব্যরত র্যাব-৭ এর এএসপি আসাদুজ্জমান বলেন, শেখেরখীল এলাকায় পুলিশের ঘটনাটি শুনেছি। তবে র্যাব ঘটনার সময় ওখানে ছিল না।অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) ইলতুৎমিশ বলেন, পুলিশের অভিযানের তথ্য ফাঁসের ঘটনা সত্যি কিনা তা তদন্ত করা হবে। সত্য হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত: যে স্থানে ( শেখেরখীল ) অভিযান চালাতে গিয়ে পুলিশ প্রথম প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়েছে সে এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। তিনি উপজেলা জামায়াতের আমীরও। দুইমাস আগে অপর একটি ঘটনায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।
http://www.dainikazadi.org/details2.php?news_id=1910&table=march2013&date=2013-03-18&page_id=1&view=0&instant_status=0
http://www.dainikazadi.org
বিষয়: বিবিধ
১৫৫৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন