বাম, রাম ও অন্ধ আওয়ামীলীগারদের কাছে মুক্তি যুদ্ধের চেতনা
লিখেছেন লিখেছেন চেতনাবিলাস ৩১ মার্চ, ২০১৩, ০৫:১২:১৭ বিকাল
সন্দেহ নেই ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ ভূখন্ডে পশ্চিম পাকিস্তানী শাসক ও শোষক বিরোধী যে সর্বাত্মক যুদ্ধ হয়েছিল তার মূল উদ্দেশ্য ছিল যাবতীয় অন্যায় ও শোষণ প্রতিহত করে সাধারণের নায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা। মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় বিবেকবান সবাই এ যুদ্ধকে তাই সমর্থন দিয়েছিল। কিন্তু তৎকালীন বিশ্ব মোড়ল আমেরিকা এই যুদ্ধকে নিজেদের সম্রাজ্যবাদী সার্থের কারণেই সমর্থন দেয়নি। সেই সাথে দক্ষিণ এশিয়ার মোড়ল ভারত নিজেদের হীন সার্থেই মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নিয়ে অস্ত্র ও সামরিক সহায়তা দিয়ে পাশে দাড়িয়েছিল। ভারতের নিষ্ঠুর দাদাগিরির কারণেই হাতের কাছে পাক হানাদার যুদ্ধাপরাধীদের পেয়েও বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সরকার তাদের বিচার করতে পারেনি। আর ভারত মুক্তিযুদ্ধে সহায়তার প্রতিদান স্বরূপ পাক হানাদারদের ফেলে যাওয়া অস্ত্র সহ বিপূল সম্পদ হাতিয়ে নিয়েছিল। এসব সম্পদের আর্থিক মূল্যমান কোন অংশেই পাকিস্তানের দীর্ঘ ২৪ বছরের বাংলাদেশ ভূখন্ড থেকে শোষিত সম্পদের মূল্যের চেয়ে কোন অংশেই কম ছিলনা।
কিন্তু বর্তমান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সোলএজেন্টরা ভাসুরের এই বাঁশ দেওয়াকে ভুলেও মুখে আনতে নারাজ। এটাই বাস্তবতা। তারা সেই সাথে মার্কীনিদের বাঙলাদেশ বিরোধীতাকেও বেশ খাট করেই দেখে।
বাংলপাদেশের স্বাধীনতার পিছনে যারা ৪৭ এর বিভক্তিকে ভ্রান্তির দৃষ্টিতে মূল্যায়ণ করে তাদের বিবেক বোধ ইতিহাসের স্বাভাবিক গতিকে অস্বীকার করে। কিন্তু দুর্ভাগ্য , তারাই আজ 'ইতিহাস' 'ইতিহাস' বলে বড় বেশি চেচামেচি করে।
এই ইতিহাসের প্রবক্তারা দীর্ঘ দুশ বছরের বৃটিশ শোষন আর অসভ্যতার বিরুদ্ধে টু শব্দটিও করে না। বৃটিশদের শোষন কে তাই রবীন্দ্রনাথের মত কথিত মুক্ত মনারা ভারতে স্বাগত জানিয়ে অনেক প্রবন্ধ লিখেছিল। তবে আনন্দের কথা হল আবাল্য মুসলিম চেতনায় গড়ে ওঠা নজরুল বৃটিশদের এই শোষণকে কার্যকর ভাবেই ধিক্কার জানিয়েছিল। অথচ আজকের বিভ্রান্ত তরুণদের কাছে দালাল কবি সুফিয়া কামাল কিংবা পাক সরকারের পত্রিকায় দায়িত্ব পালন করা কবি শামসুররাহমান বড় আদর্শ। সময় মত যেসব কবিরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঝলসে উঠতে পারেনি , কিংবা নির্যাতনের ভয়ে যেসব কবিরা পাকিদের দালালী করেছে তাদেরকেই কথিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাওয়ালার বরণ করে নিচ্ছে। এর চেয়ে কূপমন্ডুকতা আর কী হতে পারে!
৭০ এর পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে ধর্মনিরপেক্ষতার নামে কোন অযৌক্তিক বিষয় জড়িত ছিল না। তার পরেও মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশের সংবিধানে অনাকাঙ্খিতভাবে এবং অগণতান্ত্রিক ভাবে ধর্মনিরপেক্ষতাকে মূলনীতি হিসেবে নেওয়া হয়।এটাও গণমানুষের সাথে একটা চরম প্রতারণা। এসব প্রতারণা করেই আজ রাম,বাম এবং অন্ধ আওয়ামী ভক্ত বুদ্ধিজীবীরা দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফেরি করে বেড়াচ্ছে। মোমবাতি জ্বালিয়ে অনুষ্ঠান করাকে তারা প্রগতি বলে বিশ্বাস করাতে চাচ্ছে।
বাম, রাম আর অন্ধ আওয়ামী ভক্তরা বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগণের বোধ বিশ্বাস কে মূল্য না দিয়ে বেহায়াপনা এবং ইসলাম বিরোধী অসভ্যতাকেই মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছে। ইসলাম বিরোধী ব্লগারদের আহবানে তাই শাহবাগের ভোগ বিলাসী তরুণদের নেশার ঘোরে বিভ্রান্ত করতে পারছে।অথচ শাহবাগের কথিত আন্দোলন জাতিকে অসভ্যতা ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি।
আজ শাহবাগের চেতনাওয়ালাদের সুর আস্তে আস্তে মিলিয়ে যাচ্ছে। হয়তো একবিংশ শতাব্দির বিশাল ব্যাঙ্গ চিত্রের ইতিহাস হতে যাচ্ছে এই শাহবাগ আন্দোলন।সেই সাথে তাদের সমর্থকরাও দিশা হারাচ্ছে স্বাভাবিক বোধের বলয় থেকে।
মুক্তি যুদ্ধের চতেনা আজ জায়গা দখল করছে' 'ফাঁসি চাই' 'জবাই কর' নামক প্রচন্ড ফ্যাসিবাদী স্লোগানে। যেখানে অন্যায়কে প্রতিরোধই মুক্তি যুদ্ধের চেতনা, সেখানে গণহত্যা চালিয়ে , জবাই করে মানুষ হত্যা করে মুক্তি যুদ্ধের চেতনাকে প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। এই হল বাম, রাম আর অন্ধ আওয়ামীলীগারদের কথিত মুক্তি যুদ্ধের চেতনা।
বিষয়: বিবিধ
১২০৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন