ফ্লাশ ব্যাক ১৯৭৪!!
লিখেছেন লিখেছেন চেতনাবিলাস ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৯, ০৬:৪০:১২ সন্ধ্যা
ধর্ষক থেকে মন্ত্রী - তাও আবার মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয় - ওনাদের জনকের কল্যানে বেঁচে গিয়ে আজ রাষ্ট্রের পতাকা বহন করছেন - নারী বাদীরা কি ইতিহাস পড়েন না - নাকি আপনাগো চেতনা ফাল দেয় শুধু জায়গামতন -
পড়েন ইতিহাসের দলীল - জয় বাংলা ধর্ষক সামলা।
ফ্লাশব্যাক: ১৯৭৪
এক নবদম্পতি গাড়ীতে করে যাচ্ছিল। টঙ্গীর আওয়ামীলীগ নেতা ও দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী মোজাম্মেল দলবলসহ গাড়িটি আটক করে। ড্রাইভার আর নববধূর স্বামীকে হত্যা করে, মেয়েটিকে সবাই মিলে ধর্ষণ করে, অতঃপর তিনদিন পর তাঁর লাশ পাওয়া যায় টঙ্গি ব্রীজের নীচে ।
পৈশাচিক এ ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয় সর্বত্র। বিশেষ অভিযানে দায়িত্বরত মেজর নাসেরের হাতে মোজাম্মেল ধরা পড়ে। মোজাম্মেল মেজরকে বলে- ঝামেলা না করে আমাকে ছেড়ে দিন, আপনাকে তিন লাখ টাকা দেবো। বিষয়টা সরকারি পর্যায়ে নেবেন না। স্বয়ং বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে আমি ছাড়া পাবো। আপনি পড়বেন বিপদে। আমি তুচ্ছ বিষয়ে বঙ্গবন্ধুকে জড়াতে চাই না। মেজর নাসের হুঙ্কার ছাড়লেন, এটা তুচ্ছ বিষয়? আমি অবশ্যই তোমাকে ফাঁসিতে ঝোলাবার ব্যবস্থা করবো। তোমার তিন লাখ টাকা তুমি তোমার গুহ্যদ্বারে ঢুকিয়ে রাখো!
এরপরের কাহিনী অতি সরল। কুখ্যাত সন্ত্রাসী মোজাম্মেলের বাবা, দুই ভাই গেল বঙ্গবন্ধুর কাছে। তিনি ঢোকা মাত্র মোজাম্মেল এর বাবা ও দুই ভাই কেঁদে মুজিবের পায়ে পড়লো। টঙ্গি আওয়ামীলীগের সভাপতিও পায়ে ধরার চেষ্টা করলেন। পা খুঁজে পেলেন না। পা মোজাম্মেলের আত্মীয় স্বজনের দখলে!
বঙ্গবন্ধু বললেন, ঘটনা কি বল্?
টঙ্গি আওয়ামী লীগের সভাপতি বললেন, আমাদের মোজাম্মেলকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছে। মেজর নাসের তাকে ধরেছে। নাসের বলেছে ৩ লাখ টাকা দিলে তাকে ছেড়ে দিবে।
মিথ্যা মামলাটা কি?
মোজাম্মেল এর বাবা কাঁদতে কাঁদতে বললেন, খুনের মামলা লাগায়া দিছে।
মুজিব জিজ্ঞাসিলেন, ঘটনা কি ?
টঙ্গি আ’লীগের সভাপতি বললেন, আমাদের সোনার ছেলে মোজাম্মেল মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছে।
মেজর নাসির তাকে ধরে নিয়ে গেছে। বলেছে তিন লাখ টাকা দিলে ছেড়ে দিবে। কাঁদতে কাঁদতে আরো বললো, এই মেজর আ’লীগের নাম শুনলেই তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে। সে প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছে, টঙ্গিতে আমি আ’লীগের কোন শূয়োর রাখবো না। বঙ্গবন্ধু, আমি নিজেও এখন ভয়ে অস্থির! টঙ্গিতে থাকি না। ঢাকায় চলে আসছি। (ক্রন্দন)
এবার হুঙ্কার ছাড়লেন মুজিব, কান্দিস না। কান্দার মত কিছু ঘটে নাই। আমি এখনো বাইচ্যা আছি তো, মইরা যাই নাই। এখনি ব্যবস্থা নিতাছি।
অতঃপর মোজাম্মেলকে তাৎক্ষণিক ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দিলেন এবং মেজর নাসেরকে টঙ্গি থেকে সরিয়ে দেবার জরুরী আদেশ দেয়া হলো।
মোজাম্মেল ছাড়া পেয়ে মেজর নাসেরকে তার বাসায় পাকা কাঁঠাল খাওয়ার নিমন্ত্রন করেছিল।
সেই মোজাম্মেল- আজকের মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী!!
(সুত্রঃ Bangladesh Legacy of Blood, Anthony Mascarenhas, p 48;
দেয়াল, হুমায়ুন আহমেদ, পৃষ্ঠা ৮৫-৮৬)
© Mohammed wahid un nabi
বিষয়: বিবিধ
৯৪৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন