'হত্যা চেষ্টা'র খবরটি যেভাবে বানায় সুবীর-কবির-হাবিব-মোজা বাবু চক্র!!!
লিখেছেন লিখেছেন চেতনাবিলাস ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ০৭:৫৮:৫৪ সন্ধ্যা
এবার বাংলাদেশের বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে দেশে বিদেশে “বিতর্কিত এবং খুনি বাহিনী” হিসেবে পরিচিত করার জন্য মিশনে নেমেছে সুবীর-কবির চক্র। দেশের আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সাংবাদিকতা পরিচয়ের আড়ালে কলকাতার সুবীর ভৌমিক আর ঢাকার বোরহান কবির প্রচার করছে নানা কল্পকাহিনী। ঢাকায় এই চক্রের অনলাইন আউটলেট “বাংলা ইনসাইডার ” । “বাংলা ইনসাইডার” এর সহযোগী আউটলেট ভন্ডপীর হাবিবের “পূর্বপশ্চিম” ।
পরিকল্পনা অনুযায়ী এই চক্র প্রথমে একটি বানানো গল্প “বাংলা ইনসাইডার” এ প্রকাশ করে। এরপর সেটি প্রকাশ করে “পূর্বপশ্চিম” । এরপরই এই চক্রের গডফাদারদের ইশারায় দেশের অন্যান্য পত্রিকায় নির্দিষ্ট সংবাদটি প্রকাশিত হয়। একই ধারাবাহিকতায় ২২ সেপ্টেম্বর এই চক্রের সদস্য কলকাতার সাংবাদিক সুবীর ভৌমিক একটি সংবাদ প্রকাশ করে মায়ানমারের ইয়াঙ্গুন থেকে প্রকাশিত “মিজিমা” নামে একটি অনলাইন উইকলি ম্যাগাজিনে। নিউজের শিরোনাম ” বাংলাদেশ’স হাসিনা সার্ভাইভস এনাদার এটেম্প্ট অন হার লাইফ “।
সংবাদটির মূল বক্তব্য বক্তব্য হচ্ছে, ২৪ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছিল স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স-এসএসএফ। এই সুবীর সাংবাদিক পরিচয়ের আড়ালে মিয়ানমারে সংখ্যালঘু রোহিংগা জনগোষ্ঠীর উপর গণহত্যাকারী বর্বর সেনাদের দোসর হিসেবেও পরিচিত। সুবীর জাতীয় সাংবাদিকরা জানে, কলকাতা আসাম কিংবা মিয়ানমারে ভুয়া কিংবা অখ্যাত কোনো পত্রিকায় বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশেষ করে আওয়ামী স্বার্থের পক্ষে কোনো সংবাদ প্রকাশ হলেই বাংলাদেশের আওয়ামী বান্ধব পত্রিকাগুলোতে সেইসব নিউজ গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ হয়।
এ কারণে সুবীর জাতীয় সাংবাদিকরা কলকাতা কিংবা অন্যদেশে গিয়েও সমানতালে কখনো বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কিংবা কখনো বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্ভভৌমত্বের প্রতীক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রকাহ্র চালাতে দ্বিধা করেনা। তাই দেখা যায়, সারাবিশ্বে যখন মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর গণহত্যা এবং তাদের বর্বরতার কথা প্রচারিত হচ্ছে ঠিক তখন মিয়ানমারের ওই বর্বরদের আশ্রয়ে থেকে বাংলাদেশের এসএসএফ তথা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী সম্পর্কে অপপ্রচারের পথ বেঁচে নিয়েছেন সাংবাদিক পরিচয়ের আড়ালে মিয়ানমারে গণহত্যাকারী সহযোগী সুবীর ভৌমিক।
পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মিয়ানমার থেকে প্রকাশিত “মিজিমা” নিউজ পোর্টালে সংবাদটি প্রকাশ করার পরপরই ঢাকায় বোরহানের “বাংলা ইনসাইডার ” এবং ভন্ডপীর হাবিবের নিউজ পোর্টালে “পূর্বপশ্চিম” সংবাদটি প্রকাশিত হয়।
নিউজটি প্রকাশিত হলে বাংলাদেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে সেনাবাহিনীতে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। কারণ এই নিউজটি সত্য হলে বাংলাদেশে কি কোনো সাংবাদিক নেই যারা এই খবরটি জানতে পারেন ? বাংলাদেশের সাংবাদিকরা কি তাহলে ঘাস খায়?
বাংলাদেশের কোনো সাংবাদিক জানলোনা শুধু জেনেছে মায়নামারের গণহত্যাকারী সেনাদের দোসর সুবীর ভৌমিক? সুবীরের গাঁজাখোরি রিপোর্টে বাংলাদেশের রাষ্ট্র প্রধান, সরকার প্রধান এবং রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তায় নিয়োজিত স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স-এসএসএফকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। প্রশ্ন হলো, এতো গুরুত্বপূর্ণ (?) নিউজ প্রকাশের জন্য কি কারণে সারাবিশ্বে নিন্দিত মায়ানমারকে বেঁচে নেয়া হলো? এই নিউজটি মায়ানমারে প্রকাশ হওয়ার পর ঢাকার আর কোনো সাংবাদিক না জানলেও সবার আগে কেমন করে বোরহান কবির এবং তার দোসর ভন্ড পীর হাবিব জানলো ? এসএসএফ তথা সেনাবাহিনীর চরিত্র নিয়ে বিদেশের একটি ভুইফোঁড় সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এই নিউজটি নিজ দেশে প্রকাশের আগে বোরহান-হাবিব কি বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর ইমেজের দিকটি চিন্তা করেছিল?
সূত্রমতে, এই নিউজ প্রকাশের পর এসএসএফ এবং সেনাবাহিনীতে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। শনিবার শেষ বেলায় সুবীর চক্রের সদস্য বোরহান কবিরকে ডেকে নেয়া হয় ক্যান্টনমেন্টে। একজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বোরহান কবিরকে দাঁড় করিয়ে রাখেন। জানতে চান নিউজটি প্রকাশের কারণ। এই সময় বোরহান কবির কিছু বলার চেষ্টা করলে একজন মেজর বোরহানের গালে চড় বসিয়ে দেয়। তাকে নিউজটি প্রত্যাহার করতে বলা হয়। গোয়েন্দা সূত্রমতে বোরহান ওখানে বসেই তাদের অনলাইন থেকে নিউজটি প্রত্যাহার করে নেয়।
সূত্রটি আরো জানায়, ব্রিগেডিয়ার জেনারেলের সঙ্গে পূর্বপরিচয়ের সূত্র ধরে শেখ হাসিনার সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দ মোদাসসের আলী নিজে ক্যান্টনমেন্টে গিয়ে বোরহানকে ক্যান্টনমেন্টে এসে ছাড়িয়ে নেন। বোরহানকে দিয়ে অনলাইন নিউজ পোর্টাল “পূর্বপশ্চিম” এ ফোন করানো হয়। সেখানে খুজিস্তা নামে একজন ফোন ধরেন। তাকে দিয়ে তৎক্ষণাত নিউজটি প্রত্যাহার করিয়ে নেয়া হয়। যাচাই বাছাই ছাড়া সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে আর কোনো নিউজ প্রচার করা হবেনা মুচলেকা দিয়ে বোরহান কবির ক্যান্টনমেন্ট থেকে বেরিয়ে আসে।
এদিকে নিউজটি বাংলাদেশের মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারে ব্যর্থ হয়ে ভিন্ন পথ অবলম্বন সুবীর ভৌমিক। সূত্রমতে সুবীর তার নিজ দেশের প্রভাব খাটিয়ে তাদের ঢাকার নিউজ চ্যানেল ৭১ টিভিতে এ বিষয়ে একটি টকশো প্রচার করে। ভারতেও একটু চ্যানেলে এ বিষয়ে নিউজ প্রচার করে। ৭১ টিভিতে সুবীরের পছন্দের উপস্থাপক ফারজানা রুপাকে দিয়ে অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করা হয়। বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর ইমেজ বিনষ্টকারী এই নিউজটি প্রচার করতে হঠাৎ করেই মোজাম্মেল বাবু এবং অন্য একটি চ্যানেল এ মঞ্জু নামে এক সাংবাদিক তৎপর হয়ে উঠে। ৭১ টিভিতে ফারজানা রুপা মায়ানমারে গণহত্যাকারীদের দোসর সুবীরের সাক্ষাৎকার প্রচার করে। সুবীর নিজের গাঁজাখুরি নিউজের পক্ষে সাফাই গাওয়ার চেষ্টা করেন।
এদিকে একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক একজন সামরিক কর্মকর্তা বলেছেন, সুবীর ভৌমিকের এই রিপোর্টটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। আগামী নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য এ ধরণের আরো ঘটনা ঘটবে। তিনি বলেন, নিজের ব্যাক্তিগত স্বার্থে দেশের পুলিশ ও র্যাবকে খুনি বাহিনীতে পরিণত করেছেন শেখ হাসিনা। পিলখানা বিদ্রোহের অজুহাতে সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী বিডিআরের নাম পাল্টিয়ে দেয়া হয়েছে। বিডিআরের নাম এখন বিজিবি। আর এই বিজিবি এখন ভারতীয় সীমান্ত বাহিনী বিএসএফের সঙ্গে রাখি বন্ধনে আবদ্ধ। তিনি বলেন, কিছু সমালোচনা থাকলেও জনগণ এখনো সেনাবাহিনীর উপর আস্থা হারায়নি। তাই এবার সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করার টার্গেট নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। এরই অংশ হিসেবে জোট বেঁধেছে সুবীর-কবির চক্র। সামরিক গোয়েন্দাদের একটি সূত্রের আশংকা, সুবীর চক্র এবং তাদের এ দেশীয় দোসর কবির-হাবিব-মোজাম্মেল-মঞ্জুদের দৌরাত্ম জবাবদিহিতার মধ্যে আনা না গেলে খোদ বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সামনেই বড় রকমের বিপদ অপেক্ষা করছে।
( ডেইলিবিডিটাইমস রিপোর্ট)
বিষয়: রাজনীতি
৭৮৯ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভারতীয় দালাল সুভির ভৌমিকের বাংলাদেশী পাপেট মিথ্যাবাদী পীর হাবিবেরাকি সারাজীবনই পাড় পেয়ে যাবে?
হায় আফসোস!
মন্তব্য করতে লগইন করুন