বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি, জয় -হাসিনার কারসাজি!!!

লিখেছেন লিখেছেন চেতনাবিলাস ২৫ জুলাই, ২০১৭, ১২:৫৩:৫৭ দুপুর

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ফান্ডের ৮১০ কোটি টাকা লোপাট হয়ে যায় ২০১৬ সালের পাঁচ ফেব্রুয়ারী। সকালে অফিস এসেই সংবাদটি শুনেন বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন তৎকালীন গভর্নর ডক্টর আতিউর রহমান। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, সুইফট কোডের মাধ্যমে এই টাকা লুটে নেয়া হয়। অত্যন্ত গোপনীয় এই কোড নাম্বার ছিল হাতে গোনা কয়েকজনের কাছে।

শেখ হাসিনার তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে এই কোড নাম্বার জানতেন সজীব ওয়াজেদ জয়। ফলে ডক্টর আতিয়ার রিজার্ভ লুটের ঘটনা অর্থমন্ত্রী আবুল মালকে না জানিয়ে প্রথমেই জানান শেখ হাসিনাকে। শেখ হাসিনা সঙ্গে সঙ্গে ডক্টর আতিউরকে ডেকে নেন তার দপ্তরে। ডক্টর আতিউর প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে গিয়ে অবাক হন। শেখ হাসিনা এ নিয়ে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি। বরং আতিয়ারকে বলেন এ নিয়ে চুপ থাকতে এমনকি অর্থমন্ত্রীকে না জানানোর জন্যও বলেন। এই ঘটনার সঙ্গে যেহেতু সরাসরি তথ্যপ্রযুক্তির বিষয় জড়িত এই যুক্তি দেখিয়ে এ ব্যাপারে জয়ের নির্দেশনা মতো কাজ করার জন্য শেখ হাসিনা আদেশ দেন ডক্টর আতিয়ারকে। এরপরই শুরু হয় এ ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অপচেষ্টা। আতিয়ার শেখ হাসিনার অফিস থেকে বেরিয়ে এসে যোগাযোগ করেন জয়ের সঙ্গে। জয় সরাসরি এই ঘটনা নিয়ে উচ্চবাচ্য না করার জন্য ডক্টর আতিয়ারকে সতর্ক করে দেন। এরপরই গভর্নর আতিয়ার সিগন্যাল পেয়ে যায় যে করেই হোক এ ঘটনাকে ধামা চাপা দিয়ে রাখতে হবে। এ কারণে অর্থমন্ত্রী আবুল মালও প্রথমে রিজার্ভ চুরির ঘটনা জানতে পারেননি। ডক্টর আতিয়ারের জবানিতে এসব কথা রয়েছে একটি বিশেষ গোয়েন্দা বাহিনীর অভ্যন্তরীণ গোপনীয় রিপোর্টে। রাষ্ট্রীয় চাঞ্চ্যল্যকর ঘটনাগুলোর রিপোর্ট এভাবেই নিজেদের উদ্যোগে ওই বিশেষ সংস্থাটি তৈরী করে রাখে।

গোয়েন্দা সূত্রটির মতে, এই ঘটনা ধামা চাপা দেয়ার জন্য দেশে বিদেশে কয়েকটি জায়গায় খরচ করা হয় প্রায় ১শ ৯১ কোটি টাকা। ফলে রিজার্ভ লুটের ঘটনা প্রায় ধামাচাপা পড়ে গিয়েছিলো কিন্তু একটি পদ্ধতিগত ভুলের কারণে টাকাগুলো মাঝপথে আটকা পড়ে ফিলিপাইনে। আর মাত্র দুদিন সময় পেলে এই টাকা সম্পূর্ণ হজম করে ফেলা যেত। কিন্তু ২০১৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারী ফিলিপাইনের দ্যা এনকোয়েরার পত্রিকা এবং একটি টেলিভিশনে বাংলাদেশ ব্যাংক ডাকাতির ঘটনাটি প্রকাশ হয়ে পড়ে। ফলে শেখ হাসিনার ইচ্ছানুযায়ী ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়ে রাখার জন্য সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রানান্তকর প্রচেষ্টা নস্যাৎ হয়ে যায়।

সূত্রমতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের দশ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা সাইবার হ্যাকিং ছিলোনা। এটি ছিল সুইপ্ট কোড ব্যবহার করে ঠান্ডা মাথায় ডিজিটাল উপায়ে ব্যাংক ডাকাতি। তবে যাতে কেউ বাংলাদেশ ব্যাংকের কম্পিউটার সিস্টেমে এই সংক্রান্ত কোনো তথ্য প্রমান কখনো বের করতে না পারে এই কারণে সজীব ওয়াজেদ জয় আমেরিকা থেকে তার বন্ধু ভারতীয় নাগরিক রাকেশ আস্তানাকে ডেকে আনেন। বিশেষ গোয়েন্দা সূত্রটির দাবি, ২০১৬ সালের পাঁচ ফেব্রুয়ারী রিজার্ভ ফান্ডের ৮১০ কোটি টাকা ব্যাংকার দু’একজন কর্মকর্তার গোচরীভূত না হলেও রাকেশ আস্তানাকে আগে থেকেই প্রস্তুত রাখা হয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের সাইবার সিকিউরিটি সিস্টেম আপগ্রেডের নামে আলামত নষ্ট করে ফেলার জন্য। সিআইডি’র একজন তদন্তকারী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকল্পে রাকেশ আসতানার যোগদানের কথা ছিলো ২০১৬ সালের এপ্রিলে। কিন্তু তাকে জরুরিভিত্তিতে ডেকে আনা হয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অন্ধকারে তাকে সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব দেয়া হয়।সূত্রমতে, সজীব ওয়াজেদ জয়ের উপস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় বসে রিজার্ভ লুটের পরিকল্পনা করা হয়। সে বৈঠকে জয়ের সঙ্গে রাকেশ আস্তানাসহ আরও কমপক্ষে তিনজন ছিলেন বলে একটি গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে।

এর প্রমান পরেও যায় সিআইডির তদন্ত রিপোর্টেও। জানা যায়, বাংলাদেশী কাউকে দায়িত্ব না দিয়ে আমেরিকা থেকে ডেকে আনার পর রাকেশ আস্তানা ঢাকায় এসে প্রথমেই তড়িঘড়ি করে সাইবার সিস্টেম সিকিউরিটি চেকের নামে সুইফট সিস্টেম -সংশ্লিষ্ট ৩১টি কম্পিউটারের তথাকথিত ফরেনসিক পরীক্ষা চালান। এতো বড় লুটের ঘটনার পর একজন ভারতীয় নাগরিককে ডেকে আনা হলেও সম্পূর্ণ অন্ধকারে রাখা হয় বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে।

ভারতীয় নাগরিক রাকেশ আস্তানা সিকিউরিটি চেকের নামে যেসব কম্পিউটার নাড়াচাড়া করেছিলেন পরবর্তীতে সিআইডি কর্মকর্তারা দেখতে পান, সব কম্পিউটারের লগই মুছে ফেলা হয়েছে। সিআইডি’র এক কর্মকর্তা জানান যে তারা বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়ে একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে ১৩টি সার্ভার ও প্রায় দুই ডজন পরিত্যাক্ত কমপিউটার রাখা দেখতে পান। পরিত্যক্ত কমপিউটারগুলো ভাইরাসে আক্রান্ত।

জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এসব কম্পিউটার কোনোরকমের লিখিত আদেশ ছাড়াই রাকেশ আস্তানা নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। শেখ হাসিনা এবং জয়ের ভয়ে অনেকের মনে প্রশ্নের সৃষ্টি হলেও কেউ মুখ খুলতে সাহস পাননি। ফলে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ভারতীয় নাগরিক রাকেশ আস্তানার উপস্থিতির রহস্য জানতে শেখ হাসিনা। সজীব ওয়াজেদ জয় এবং আতিয়ার রহমানকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ফান্ডের ৮১০ কোটি টাকা ডাকাতির ঘটনায় ইতোমধ্যে তৈরী করা সিআইডির প্রতিবেদনে প্রতিবেদনে প্রমাণিত রিজার্ভ চুরির আলামত নষ্টের চেষ্টা যে হয়েছিল। এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন সম্প্রতি প্রকাশিত হয় বণিক বার্তা নামের একটি দৈনিকে।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো কম্পিউটার অন্যত্র স্থানান্তর বা কোনো ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হলে সংশ্লিষ্ট বিভাগের লিখিত আদেশের প্রয়োজন হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা বণিক বার্তাকে জানান, লিখিত কোনো আদেশ ছাড়াই বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্তত ৩০টি কম্পিউটার ওয়ার্ল্ড ইনফরমেটিকস সাইবার সিকিউরিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাকেশ আস্তানার জিম্মায় দেয়া হয়েছিল সে সময়। যদিও লিখিত আদেশ ছাড়া তার জিম্মায় কম্পিউটার দিতে চাননি কর্মকর্তারা। পরে গভর্নরের টেলিফোনিক নির্দেশে কম্পিউটার হস্তান্তর করেন তারা। অথচ তখনো গভর্নর সচিবালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তারাও কম্পিউটার জব্দ করার কারণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষাকারী ব্যক্তির পরিচয় সম্পর্কে জানতেন না।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আগে এ ধরনের স্পর্শকাতর বিষয়ে অন্য কাউকে সম্পৃক্ত করা আইনসিদ্ধ হয়নি বলে মনে করছেন তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, যেকোনো অপরাধ সংঘটিত হলে প্রথমে ঘটনাস্থলে গিয়ে আলামত সংগ্রহ করবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যতক্ষণ না তাদের সার্বিক আলামত সংগ্রহ শেষ হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত অপরাধ সংঘটিত হওয়ার স্থানটি থাকবে তাদের নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় এ নিয়ম মানা হয়নি। পুরো ঘটনাটি চাপা রেখে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তত্কালীন গভর্নরের নির্দেশে ভারত থেকে আসা রাকেশ আস্তানার হাতে ছেড়ে দেয়া হয় গুরুত্বপূর্ণ সব কম্পিউটার। বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে তদন্তকাজ চালাচ্ছে সিআইডি।

জানতে চাইলে সিআইডির মুখপাত্র ও অর্গানাইজড ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএস) মোল্যা নজরুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, শুধু রাকেশ আস্তানাকেই নয়, রিজার্ভ চুরির সঙ্গে জড়িত সব সন্দেহভাজনকে সামনে রেখেই তদন্তকাজ এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। বিষয়টি তদস্তাধীন হওয়ায় এর বেশি মন্তব্য করা সমীচীন হবে না।

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তাসহ সিআইডির একাধিক কর্মকর্তা রাকেশ আস্তানার সঙ্গে দেখা করতে গত বছরের শেষদিকে যুক্তরাষ্ট্রে যান। সরাসরি সাক্ষাত্ না হলেও ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে তার সঙ্গে কথা হয় কর্মকর্তাদের। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বণিক বার্তাকে বলেন, ভিডিও কনফারেন্সে রাকেশ আস্তানা রিজার্ভ চুরির ফরেনসিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত কিছু বিষয় সম্পর্কে কথা বলেন। এ ঘটনার সঙ্গে এক্সটারনাল টিমের পাশাপাশি ইন্টারনাল টিমও কাজ করেছে বলে তিনি জানান।

সাইবার ঝুঁকি মোকাবেলায় সরকার বাংলাদেশ কম্পিউটার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম (বিডিসার্ট) ও বাংলাদেশ ই-গভর্নমেন্ট কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (বিজিডি ই-গভ সিআইআরটি) গঠন করলেও রাকেশ আস্তানাকে দায়িত্ব দেয়ার আগে তাদেরকেও পাশ কাটানো হয়েছে।

আইসিটি মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এ প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, ঘটনা ঘটার পর পরই যদি তাদের জানানো হতো, সেক্ষেত্রে তারা বিদেশী যেকোনো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সহায়তা নিয়ে ফরেনসিক তদন্ত করতে পারতেন। তাছাড়া বিটিআরসির অধীনে থাকা বাংলাদেশ সাইবার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিমের সহায়তা নিয়েও ওই তদন্ত করা যেত।

দীর্ঘ ৪৩ দিন পর রিজার্ভ চুরির ঘটনায় অজ্ঞাতদের আসামি করে মতিঝিল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে ওই মামলার সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে সিআইডি।

সে সময়ই এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে রাকেশ আস্তানাকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। সে সময় বলা হয়, তিনি বিশ্বব্যাংকের সাবেক আইটি-বিষয়ক পরিচালক। বর্তমানে তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আইটি বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন। সংবাদ সম্মেলনে রিজার্ভ চুরি তদন্তের অগ্রগতি প্রসঙ্গে রাকেশ আস্তানা বলেছিলেন, আমরা এখন তদন্তের মাঝপথে আছি। এ ঘটনার সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব লোক, নাকি বাইরের লোক জড়িত ইত্যাদি বিষয় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত যেসব নমুনা (সাইন) পাওয়া গেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, বাইরে থেকে (এক্সটারনাল) এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তদন্ত মাঝপথে থাকায় এর বেশি কিছু আর বলা সম্ভব হচ্ছে না। এর পর এক মাস, দুমাস করে বছর পেরিয়ে গেলেও অপরাধীদের সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানাতে পারেননি মোটা অংকের পারিশ্রমিক চুক্তিতে আসা রাকেশ আস্তানা।

কমপিউটার হ্যাকাররা ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ১০১ মিলিয়ন ডলার চুরি করে নেয়ার পর এই ঘটনা সম্পর্কে স্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তি ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে অন্ধকারে রেখে সমস্যাটি অভ্যন্তরিকভাবে সমাধানের জন্য ভারতীয় নাগরিক রাকেশ আসতানা’র মালিকানাধিন প্রতিষ্ঠান ‘ওয়ার্ল্ড ইনফরমিক্স সাইবার সিকিউরিটি’কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো। তদন্তকারীরা সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছেন।

সিআইডি’র মুখপাত্র মোল্লা নজরুল ইসলাম জানান, রিজার্ভ চুরির ঘটনায় রাকেশ আসতানাসহ সংশ্লিষ্ট সবাই সন্দেহভাজন।

সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান যে, ২০১৬ সালের মার্চের প্রথম সপ্তাহে বিষয়টি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হয়ে পড়লে বাংলাদেশ ব্যাংকের একদল কর্মকর্তা রাকেশ আসতানাকে নিয়ে আগারগাওয়ে তাদের অফিসে আসেন।

ওই কর্মকর্তা জানান যে, চুরির ঘটনা ঘটার প্রায় এক মাসের মধ্যে সংবাদ মাধ্যমে তা প্রকাশ হওয়ার আগ পর্যন্ত ‘বাংলাদেশ সাইবার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম’ (বিসিআইআরটি)’র কারো কাছে সাহায্যের জন্য অনুরোধ জানানো হয়নি।আইসিটি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান যে, ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে তারা একটি ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম গঠন করার পরও তাদেরকে চুরির বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।

কর্মকর্তা জানান, সরকারের কোন আইটি টিম সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হলে পুলিশ তৎক্ষণাত ইন্টারপোল বা যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই’র সহায়তা চাইতে পারতো। প্রতিষ্ঠান দুটি অবশ্য পরবর্তীতে সহায়তা দিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক, সিআইডি ও আইসিটি বিভাগের একটি তদন্ত দল ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র সফরে যায় এবং রাকেস আসতানার সঙ্গে কথা বলে। তখন আসতানা রিজার্ভ চুরির জন্য ব্যাংকের দুর্বল সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে দায়ী করেন।

সিআইডি কর্মকর্তারা জানান, তারা তদন্ত শুরুর আগ পর্যন্ত রাকেস ওই সমস্যা নিরসনের চেষ্টা করেন এবং যেসব কর্মকর্তা এই অবহেলার জন্য দায়ী ছিলেন তাদের কাউকেই ডিউটি থেকে বিরত রাখা হয়নি।

সিআইডি’র মুখপাত্র মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেন, রিজার্ভ চুরির ঘটনায় শুধু রাকেশ আসতানা নয়, সংশ্লিষ্ট সবাই সন্দেহভাজন।

ইতোপূর্বে রয়টার্সের এক রিপোর্টে বলা হয় যে তদন্তকারিরা দায়িত্বে অবহেলা ও অসতর্কতার জন্য কেন্দ্রিয় ব্যাংকের পাঁচজন কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করেছেন। তবে, সরকার ওই তদন্ত রিপোর্ট এখনো জনসম্মুখে প্রকাশ করেনি।

বিষয়: বিবিধ

১০০৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File