উৎসর্গ চরমোনাইয়ের মুরিদদের,,,,,,

লিখেছেন লিখেছেন চেতনাবিলাস ১৮ মার্চ, ২০১৭, ০৮:০৩:৩২ সকাল

সম্মানের সহিত যুক্তিগুলো কপি করে দিলাম। বিবেচনা করে দেখবেন।

By Apu Ahmed

মওদূদীর (রহঃ) বিরুদ্ধে অভিযোগের হাকিকত। (পুরাটা না পড়ে

কমেন্ট নিষিদ্ধ, বেশি বেশি শেয়ার আশা করছি)

.

যে কোন মওদূদী (রহঃ) বিরোধী মুজাহিদের(?) হার্ড ড্রাইবে

কমন একটি স্টেটাস খুজে পাওয়া যাবে। মওদূদী (রহঃ) নবী (স)

কে গোনাহগার বলেছেন, তাকে তার ত্রুটি বিচ্যুতির জন্য ক্ষমা

প্রার্থনা করতে বলেছেন ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব নোংরামীর

কাতারে একটি বড় মাদ্রাসার মুফতি সাহেবও জড়িয়ে পড়েছেন

দেখেই এই কষ্টটুকো করতে হলো। মওদূদীর (রহঃ) সূরা

নসরের শেষ আয়াতের ব্যাখ্যাকে নিজেদের মতো করে

ব্যাখ্যা করে এসব হযরতগন লিখেছেন-

“মওদূদী বলেন, আল্লাহ তা’য়ালার নিকট কাতর কন্ঠে এই আবেদন

করুন, যে কাজের দায়িত্ব আপনাকে দেওয়া হয়েছিল তা সম্পন্ন

করার ব্যাপারে আপনার দ্বারা যে ভুল ত্রুটি হয়েছে কিংবা তাতে যে

অসম্পূর্ণতা রয়ে গেছে তা যেন তিনি ক্ষমা করে দেন।”-সূরা

নসরের তাফসির। এছাড়াও উদ্ধৃতিটি পাওয়া যাবে কোরআন কি চার

বুনিয়াদী এসত্যালাহে কিতাবের শেষ পৃষ্টায়। এমন ‍কুফরী কথা

বলার পরে কেউ হক হয় কি করে ?”

.

মিথ্যাচারের জবাব দেওয়ার আগে একটি বিষয় পরিস্কার করে দেই

যে, উপরের উদ্ধৃতিটি মওদূদীর (রহঃ) নিজের নয়, এটি তাফসিরে

জালালাইন শরীফের সূরা নসরের তাফসির। যার হাতে এই মুহুর্তে

জালালাইন শরীফ আছে তিনি দেখতে পারেন। তারপরেও এই

অংশের ব্যাখ্যা দেওয়া জরুরী যে, নবীদের ত্রুটি বিচ্যুতি বলতে

মওদূদী (রহঃ) কি বুঝিয়েছেন। আমরা আগেও বলেছি যে,

মওদূদীর (রহঃ) কোন লেখার ভাব ‍বুঝতে ব্যর্থ হলে তাফহিমের

অন্য অংশে তালাশ করে দেখা উচিত। অন্য কোন কিতাব দেখে

নয় বরং মওদূদীর (রহঃ) অন্যান্য রচণাবলী থেকেই আমি প্রমাণ

দিতে চাচ্ছি। প্রথমে সূরা মুহাম্মাদের একটি আয়াত নিয়ে চিন্তা করে

দেখুন-

.

“অতএব, হে নবী! ভাল করে জেনে নাও, আল্লাহ ছাড়া আর

কেউ ইবাদাতের যোগ্য নয়। নিজের ত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা

করো। এবং মু’মিন নারী ও পুরুষদের জন্যও। আল্লাহ তোমাদের

তৎপরতা সম্পর্কে অবহিত এবং তোমাদের ঠিকানা সম্পর্কেও

অবহিত। সূরা মুহাম্মাদ-১৯ ”

.

উপরোক্ত আয়াতে নবীকে (স) বলা হচ্ছে, তোমার গুনাহের

জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করো। অত্যান্ত স্পষ্ট করে গোনাহ শব্দটি

ব্যবহার করা হয়েছে। নবীদের ইসমত সম্পর্কে নেতিবাচক

কোন ধারণা নিতে চাইলে মওদূদী (রহ) এই আয়াত থেকেই নিতে

পারতেন কিন্তু তিনি কি সেটা করেছেন ? তিনি কি লিখেছেন সেটা

ভালো করে পড়লেই ‍বুঝা যায় যে তিনি ইসমতে আম্বিয়া

সম্পর্কে পাঠকদের কতটা স্বচ্ছ ধারণা দিয়েছেন। সূরা মুহাম্মাদের

এই আয়াতে ব্যাখ্যায় তিনি লিখেন-

.

“ইসলাম মানুষকে যেসব নৈতিকতা শিক্ষা দিয়েছে তার একটি হচ্ছে

বান্দা তার প্রভুর বন্দেগী ও ইবাদাত করতে এবং তাঁর দীনের জন্য

জীবনপাত করতে নিজের পক্ষ থেকে যত চেষ্টা-সাধনাই করুক

না কেন, তার মধ্যে এমন ধারণা কখনো আসা উচিত নয় যে, তার যা করা

উচিত ছিল তা সে করেছে । তার বরং মনে করা উচিত যে, তার ওপর

তার মালিকের যে দাবি ও অধিকার ছিল তা সে পালন করতে পারেনি ।

তার উচিত সবসময় দোষ-ত্রুটি স্বীকার করে আল্লাহর কাছে এ

দোয়া করা যে, তোমার কাছে আমার যে ক্রুটি-বিচ্যুতি ও অপরাধ

হয়েছে তা ক্ষমা করে দাও ।’’

.

"হে নবী ( সা) তোমার ক্রুটি-বিচ্যুতি জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করো"

আল্লাহর এ আদেশের অর্থ এ নয় যে, নবী ( সা) জেনে

বুঝে প্রকৃতই কোন অপরাধ করেছিলেন । (নাউযুবিল্লাহ!) বরং এর

সঠিক অর্থ হচ্ছে , আল্লাহর সমস্ত বান্দার মধ্যে যে বান্দা তার

রবের বন্দেগী বেশী করে করতেন নিজের এ কাজের

জন্য তাঁর অন্তরেও গর্ব ও অহংকারের লেশমাত্র প্রবেশ করতে

পারেনি । তাঁর মর্যাদাও ছিল এই যে, নিজের এ মহামূল্যবান খেদমত

সত্ত্বেও তাঁর প্রভুর সামনে নিজের অপরাধ স্বীকারই করেছেন

। এ অবস্থা ও মানসিকতার কারণেই রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া

সাল্লাম সবসময় বেশী বেশী ক্ষমা প্রার্থনা করতেন । আবু

দাউদ, নাসায়ী, এবং মুসনাদে আহমাদের বর্ণিত হাদীসে নবীর ( সা)

এ উক্তি উদ্ধৃত হয়েছে যে, "আমি প্রতিদিন আল্লাহর কাছে একশ,

বার ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকি"

”।

.

এর পরে আরো একটি আয়াতের দিকে তাকাতে পারেন। সূরা

ফাতেহ’র প্রথম আয়াতে বলা হচ্ছে-

“হে নবী, আমি তোমাকে সুস্পষ্ট বিজয় দান করেছি যাতে

আল্লাহ তোমার আগের ও পরের সব ক্রটি-বিচ্যুতি মাফ করে

দেন,তোমার জন্য তাঁর নিয়ামতকে পূর্ণত্বা দান করেন- সূরা

ফাতেহ-১-২।

.

এই আয়াতের ব্যাখ্যায় মাওলানা মওদূদী কি লিখেন তাও প্রনিধান

যোগ্য কারণ নবী (স) কে গুনাহগার প্রমাণ করার জন্য এখানেও

মালমশলা রয়েছে কিন্তু তিনি অত্যান্ত পরিস্কার ভাবে এই আয়াতের

ব্যাখ্যায় লিখেন-

.

“যে পরিবেশ পরিস্থিতিতে একথাটি বলা হয়েছে তা মনে রাখলে

স্পষ্ট বুঝা যায়, ইসলামের সাফল্য ও বিজয়ের জন্য রসূলুল্লাহ

সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নেতৃত্বের মুসলমানগণ বিগত ১৯

বছর ধরে যে চেষ্টা -সাধনা করে আসছিলেন তার মধ্যে যেসব

ক্রুটি -বিচ্যুতি ও দুর্বলতা রয়ে গিয়েছিলো এখানে সেসব ক্রুটি -

বিচ্যুতি ও দুর্বলতা ক্ষমা করার কথা বলা হয়েছে । এসব ক্রুটি-বিচ্যুতি কি

তা কোন মানুষের জানা নেই । বরং মানবীয় বিবেক-বুদ্ধি এ চেষ্টা -

সাধনার মধ্যে কোন ক্রুটি ও অপক্কতা খুঁজে পেতে একেবারেই

অক্ষম । কিন্তু আল্লাহ তা'আলার দৃষ্টিতে পূর্ণতার যে অতি উচ্চ

মানদণ্ড রয়েছে তার বিচারে ঐ চেষ্টা সাধনার মধ্যে এমন কিছু ক্রটি

-বিচ্যুতি ছিল যার কারণে মুসলমানগণ আরবের মুশরিকদের বিরুদ্ধে

এত দ্রুত চূড়ান্ত বিজয় লাভ করতে পারতেন না । আল্লাহ তা'আলার

বাণীর তাৎপর্য হচ্ছে, তোমরা যদি ঐ সব ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে চেষ্টা

সাধনা করতে তাহলে আবর বিজিত হতে আরো দীর্ঘ সময় দরকার

হতো । কিন্তু এসব দুর্বলতা ও ক্রটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করে কেবল

নিজের মেহেরবানী দ্বারা আমি তোমাদের অপূর্ণতা দূর করেছি

এবং হুদাইবিয়া নামক স্থানে তোমাদের জন্য সে বিজয় ও সফলতার

দ্বার উন্মক্ত করে দিয়েছি যা স্বাভাবিকভাবে তোমাদের প্রচেষ্টা

দ্বারা অর্জিত হতো না ।

.

এখানে একথাটিও ভালভাবে উপলব্ধি করা দরকার যে, কোন লক্ষ ও

উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য যে দল চেষ্টা -সাধনা চালাচ্ছে তার ক্রুটি-

বিচ্যুতির জন্য সে দলের নেতাকে সম্বোধন করা হয় । তার অর্থ

এ নয় যে, ঐ সব ক্রুটি ও দুর্বলতা উক্ত নেতার ব্যক্তিগত ক্রুটি ও

দুর্বলতা । গোটা দল সম্মিলিত ভাবে যে চেষ্টা-সাধনা চালায় ঐ সব

ক্রুটি ও দুর্বলতা সে দলের সম্মিলিত চেষ্টা -সাধনার । কিন্তু

নেতাকে সম্বোধন করে বলা হয়, আপনার কাজে এসব ক্রুটি -

বিচ্যুতি বর্তমান ।

.

তা সত্ত্বেও যেহেতু রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে

সম্বোধন করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে, আল্লাহ তা'আলা তাঁর

পূর্বপর সব ক্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করে দিয়েছেন, তাই সাধারণভাবে এ

শব্দগুলো থেকেএ বিষয়টিও বুঝা যায় যে, আল্লাহর কাছে তাঁর

রসূলের সমস্ত ক্রুটি-বিচ্যুতি ( যা কেবল তাঁর উচ্চ মর্যদার বিচারে

ক্রুটি -বিচ্যুতি ছিল) ক্ষমা করে দেয়া হয়েছিল । এ কারণে সাহাবায়ে

কিরামের যখন নবীকে ( সা) ইবাদাতের ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক

রকমের কষ্ট করতে দেখতেন তখন বলতেন , আপনার পূর্বাপর

সমস্ত ক্রুটি-বিচ্যুতি তো ক্ষমা করা হয়েছে । তারপরও আপনি এত

কষ্ট করেন কেন৷ জবাবে নবী ( সা) বলতেনঃ "আমি কি কৃতজ্ঞ

বান্দাও হবো না৷" ( আহমাদ, বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ) ।”

.

এগুলো হলো মওদূদীর (রহঃ) নিজের লিখিত ব্যাখ্যা। এরপরেও

কেউ যদি আম্বিয়াদের, বিশেষ করে হুজুর স কে গোনাহাগার

বলার, এমন আজগুবী অভিযোগটি নিজের মুখে দ্বিতীয়বার আনার

সাহস করেন তাহলে ধরেই নিতে হবে তিনি মানসিক রোগী,

নয়তো মওদূদী আতংক নামক সিলিসিলার রোগে ভুগছেণ। এটা

সিলসিলার প্রেমের ফসল হতে পারে যার কোন চিকিৎসা নেই।

বিষয়: বিবিধ

১০৪৮ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

382314
১৮ মার্চ ২০১৭ সন্ধ্যা ০৭:০১
মনসুর আহামেদ লিখেছেন : চমৎকার

382331
১৯ মার্চ ২০১৭ সকাল ১১:৪৬
এম এম নুর হোসাইন মিয়াজী লিখেছেন : মউদুদীর অপব্যাখার চেয়ে আরো বেশি অপব্যাখ্যা হয়েছে এখানে ! দু:িখত , মৃত মউদুদীর চেয়ে জিন্দা মউদুদীদের অপব্যাখা গুলির আরো জঘণ্য ।
আর মউদুদীর অপব্যাখা গুলির জবাব সব ওলামায়েকরাম আগেই থেকে দিয়ে আসছে ।কিন্তু চরমোনাইকে নিয়ে ওনার এ্যালার্জি েকন ? আসলে ওরা চরমোনাই আতংকে ভূগতেছে ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File