সামরিক চুক্তিতে নীরবতা: হেফাজত কি ভারতের গুটি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে?
লিখেছেন লিখেছেন চেতনাবিলাস ১২ মার্চ, ২০১৭, ০৯:২৮:৪৪ সকাল
বিশেষ প্রতিনিধি
ভারত বাংলাদেশকে চাপ দিয়ে তার স্বার্থের অনুকূলে প্রতিরক্ষা চুক্তি করিয়ে নিতে চাচ্ছে। বাংলাদেশের জন্য প্রকৃতপক্ষে এই চুক্তিতে সম্মত হওয়া মানে ভারতের গোলামীর জিঞ্জিরে চিরতরে আনুষ্ঠানিকভাবে আটকে পড়া। শেখ হাসিনা তার ক্ষমতায় থাকা নিশ্চিত করতে এই চুক্তি করবেন। বা করতে চেষ্টা করছেন। কিন্তু বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এখনো তাতে বাধা দিয়ে যাচ্ছে বলে খবরে প্রকাশ।
কিন্তু ভারতের চাপের মুখে যে কোনো সময় নতিস্বীকার করতে পারেন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা। বিডিআর বিদ্রোহের মাধ্যমে ভারতীয় ষড়যন্ত্রে ৫৭ জন সেনা অফিসারকে হত্যা করার ঘটনা এখনো অনেক সেনাকর্মকর্তার জন্য ভয়ের কারণ হতেই পারে। ভারতের স্বার্থে বিরুদ্ধে দাঁড়ালে তাদেরকে হুমকির মুখে পড়তে হতে পারে।
এমতাবস্থায় সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি প্রয়োজন তাহলো সাধারণ মানুষ এবং রাজনৈতিক দলগুলো প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত এখন ভারত তোষণের রাজনীতি করছে আওয়ামী লীগের অনুসরণে। বামপন্থীরা ভারতের দালালী করছে বহু আগে থেকে। লোক দেখানো রামপাল প্রকল্পের বিরোধীতা করাও ভারতকে ক্ষেপিয়ে নয়। নিজেদের অন্য স্বার্থে। ভারতের দালাল মিডিয়াগুলোর অনেকে ইচ্ছা করেই এই ইস্যুকে এড়িয়ে যাচ্ছে। আবার কোনো কোনো মিডিয়া হাউজ অস্পষ্টভাবে কিছু কথা প্রকাশ করছে। তাদেরও প্রকাশনা টিকিয়ে রাখার জন্য ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়।
বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছে এখন হেফাজতে ইসলাম একটি বড় শক্তি। যে কোনো ইস্যুতে হেফাজত নেতারা মুখ খুললে তা সাধারণ মানুষের কাছে গুরুত্ব পায়। কিন্তু ভারতের সাথে যখন প্রতিরক্ষা চুক্তি হচ্ছে তখন তারা রহস্যজনকভাবে নীরবতা পালন করছেন। বরং হাইকোর্টে কোথাকার কোন গ্রীক দেবীর মুর্তি নির্মাণের বিরোধীতা নিয়ে সংগঠনটির নেতারা আকাশ পাতাল মাথায় উঠাচ্ছেন।
আওয়ামী লীগও এটাই চায়। ভারততো চায়ই। বাংলাদেশের দেশপ্রেমী অংশ অন্য কিছুতে মনোযোগী হোক, অন্য কিছু নিয়ে বিতর্কে ব্যস্ত থাকুক। আর তার ফাঁক দিয়ে তারা তাদের স্বার্থটি নির্বিঘ্নে হাসিল করে নিক।
হ্যাঁ, সেটা্ও একটা ইস্যু হতে পারে। ধর্মীয় দিক থেকে ইসলামকে কোনঠাসা করতে আ্ওয়ামী ইসলাম বিদ্বেষী সেকুলারদেরকে ব্যবহার করে ভারত চায় এখানে মুর্তি-প্রতীমার জয়জয়কার হোক। সেদিক থেকে এর প্রতিবাদ হতে পারে। কিন্তু শুধু মূর্তি নিয়ে পড়ে থেকে প্রতিরক্ষা চুক্তি বা এরকম দেশবিরোধী নানা কাজে নীরবতা অবলম্বন করা মোটেও ভাল কিছু নয়। উল্টো এটি অনেকের মনে সন্দেহের উদ্রেক করে যে, হেফাজত কি বুঝে, কিম্বা না বুঝে ভারতের স্বার্থ রক্ষার গুটি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে? ভারতের আগ্রাসী ইসলামবিদ্বেষী ও বাংলাদেশ বিদ্বেষী নীতির বিরুদ্ধে ইসলামী এই সংগঠনের নেতারা যদি সোচ্চার হতে না পারেন তাহলে ইতিহাসে তারাও ভারতের দালাল হিসেবে চিহ্নিত হবেন।
বিষয়: বিবিধ
১১২৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন