১০ দিন হলো মাহমুদুর রহমানের জামিনের আদেশ লেখাই হয়নি !
লিখেছেন লিখেছেন চেতনাবিলাস ১২ নভেম্বর, ২০১৬, ০৬:৪১:২৩ সকাল
অলিউল্লাহ নোমান
বাংলাদেশেই এমনটা সম্ভব। এই জুলুমের শেষ কোথায়!
দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক জনাব মাহমুদুর রহমানের জামিন মঞ্জর করেছে আপিল বিভাগ আজ থেকে ১০ দিন আগে। ৩০ অক্টোবর তাঁর জামিন মঞ্জর করেছে আপিল বিভাগ। কিন্তু আজো জামিনের আদেশ লেখা হয়নি। এখনো নিশ্চত নয় কবে জামিনের আদেশ লেখা হবে। তারপর কবে সাক্ষর হবে শুনানীতে উপস্থি থাকা বিচারপতিগনের। এর মাঝে রবিবার থেকে একজন বিচারপতি ছুটিতে যাচ্ছেন। তিনি ফিরবেন এক সপ্তাহ পর। আদেশের কপিতে তাঁর সাক্ষর অবশ্যই লাগবে। কারন তিনি শুনানীতে উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে আমরা যদি দেখি ফাঁসির আদেশ গুলো পৌছাতে কতক্ষণ লেগেছিল। আবদুল কাদের মোল্লার রিভিউ শুনানী শেষ হয়ে খারিজ আদেশ হয় বেলা ১১টায়। দুইটার আগেই আদেশের কপি পৌছে যায় কারাগারে। বিকালে শুরু হয়ে যায় ফাঁসির প্রস্তুুতি। রাত ১০টায় ফাঁসি কার্যকর হয়ে যায়।
অনুরুপ প্রত্যেকটি ফাঁসির আদেশ রিভিউ খারিজ হওয়ার দিন বিকালের আগেই কারাগারে পৌছেছে। শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলার রায়ে দন্ডপ্রাপ্তদের রিভিউ শুনানী শেষ হয় বেলা সাড়ে ১০টায়। আদেশের কপি পৌছায় ১২টার মধ্যে। ফাসি কার্যকর হয় সেই রাতে। জীবন কেড়ে নিতে ফঁসির আদেশ তড়িৎ লিখে দ্রুত গতিতে পৌছানের বিশেষ ব্যবস্থা থাকে। অথচ একজন মজলুমকে কারাগার থেকে মুক্তির জন্য জামিনের আদেশ লিখতে দিনের পর দিন চলে যায়। তারপরও কখন আদেশ লেখা হতে পারে সেই নিশ্চয়তা নেই। এই হচ্ছে আমাদের দেশের স্বাধীন(?) বিচার ব্যবস্থার চিত্র!
আমার নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে আজকের মত শেষ করতে চাই। ২০১০ সালে জনাব মাহমুদুর রহমান এবং আমাকে দন্ড দিয়েছিল আপিল বিভাগ। আমার ধারনা ছিল রায়ের কপি পেতে দুই-চারদিন লাগবে। কিন্তু আমি সুপ্রিমকোর্ট থেকে অফিসে পৌছে দেখি আদেশের কপি সিরপিশনে আমার জন্য অপেক্ষমান। আমি পৌছার আগেই বিশেষ ব্যবস্থায় আদেশের কপি আমার দেশ কার্যালেয়ে পৌছে গেছে। কারন আদেশ ছিল আমাকে কারাগারে গিয়ে আত্মসমর্পন করতে হবে।
তখন আমি মনে মনে কামনা করেছিলাম সুপ্রিমকোর্টের সব আদেশ যদি এভাবে দ্রুত গতিতে নির্দিষ্ট জায়গায় পৌছানো হত! তাতে কত মানুষ হয়রানির কবল থেকে রক্ষা পেত! অনেক মানুষ আদেশ বের করার জন্য দিনের পর হাটতে হয়। ঘুষ দিতে হয় বিভিন্ন স্থরে।
এই জুলুমের বিচারের ভাল আল্লাহপাকের কাছে রাখলাম। আল্লাহ যেন আমাদের জুলুম থেকে রক্ষা করেন।
বিষয়: বিবিধ
১২৩৩ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার অভিজ্ঞতাপূর্ণ লিখাটা পড়ে আজ আবারও অশ্রুসিক্ত হলাম। আজো খুব মনে পড়ে সেই বিশেষ দিনটির কথা। যেদিন খুব সকালে ঘুম থেকে জেগে প্রতিদিনের ন্যায় খবরের পাতায় চোখ বুলাতেই দেখি আমার পরম শ্রদ্ধেয় সত্যের নির্ভীক নিশান উড্ডয়নকারী ব্যক্তিটিকে কারাগারে বন্দী করা হয়েছে। সত্যকে তুলে ধরার জন্য।
আমার এক সহকর্মী সেসময়ে টুডে ব্লগে লিখতেন। অশ্রুপূর্ণ চোখে অফিসে যেতে যেতে ওনাকে অনেক বিনয়ের সুরে অনুরোধ করেছিলাম এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে লিখার জন্য। উনি বরং কিছুটা অভিযোগের সুরে বললেন, আমাকে বলছেন কেন, আপনি তো আমার চেয়ে বেশী শিক্ষিতা! আপনি লিখেন না কেন?
উনার কথা শুনে এক ধরণের জিদ চেপে গেল মনে আর সেই থেকে বিডি ব্লগে আমার আবির্ভাব। অথচ কী অদ্ভুত আমি! কতবার এই সম্মানিত মানুষটিকে নিয়ে লিখতে চেয়েছিলাম কিন্তু আজ পর্যন্ত তা হয়ে উঠেনি।
হৃদয়ের গভীর থেকে শুধুই প্রার্থনা আমার খুব প্রিয় ন্যায়ের পতাকাবাহী এই ব্যক্তিটি র জন্য। সেইসাথে আপনার জন্যও।
জাজাকাল্লাহু খাইরান।
মন্তব্য করতে লগইন করুন