বিসিএস ভাইভায় হিজাবি এক রমণীকে কচুকাটা করার গল
লিখেছেন লিখেছেন চেতনাবিলাস ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ০৮:১২:৫৬ রাত
বি সি এসের ভাইভায় সদ্য হিজাবি এক রমণীকে কচুকাটা
করার গল্প শুনলাম। ১০ যায়গায় পরীক্ষা দিয়ে ১০ যায়গায়
চাকরি কনফার্ম করা সর্বচ্চ বিদ্যাপীঠের ছাত্রী তিনি।
ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র নেতাদের সাথেও ভালো সম্পর্ক
আছে। তার প্রমাণ পাশের পরেও হলের সিটের
স্বত্বাধিকার।
তারপরেও রক্ষা হল না। মেধার যাচাইয়ের বদলে
হিজাবের পেছনে লুকায়িত জঙ্গিবাদের বীজ খুঁজতেই
ভাইভা বোর্ডের প্রশ্নকর্তারা ব্যস্ত। হুট করে হিজাব ধরা
মেয়েটার নৈতিক বা আদর্শিক যায়গাটা ও কিছুটা দুর্বল।
অনেক গবেষণা করে হিজাব ধরেন নি তিনি। কিছু একটা
ভালো লাগা থেকে বা অনুধাবনের যায়গা থেকেই
পড়া। টাই তিনি বিব্রত ছিলেন সেই সাথে নিরুত্তর ও।
অনেক বর্ণবাদি মানুষকেই বলতে শুনেছি- কারো মাথায়
কাপড় দেখলে মাথায় আগুন জ্বলে যায়।
এই ধরণের মন্তব্য অনেক জ্ঞানী গুণী মানুষের কাছ থেকেও
এসেছে। কারো মাথায় কাপড় থাকতেই পাড়ে। তাতে
আরেকজনের মাথায় আগুন ধরার কিছুই নেই। হিজাব শুধু
জামাতের মহিলারাই পড়ে ব্যাপারটা কী তাই? সেই
অনাদিকাল থেকে উপমহাদেশের নারী নেত্রীরা
বিশেষ করে বাংলাদেশের নেত্রীরা ন্যূনতম মাথায়
কাপড় দিয়েছেন। শুধু তাই নয় হজের মৌসুমে পট্টি ও
বেঁধেছেন। বেগম রোকেয়া, তিনি কী মাথায় কাপড়
দেননি?তারচেয়ে বড় কথা হল- মানুষের যোগ্যতা বর্ণ
গোত্র চেহারা দেখে নিরূপণ করাটাই বর্ণবাদ।
বর্ণ বৈষম্য যারা করে তারা মুখে যতো যাই বলুক তাদের
কাজ কখনোই মানুষের জন্য নিবেদিত নয়।
একজন ছাত্রীর পরনে কী পোশাক সেটা দেখে যদি
শিক্ষক খাতায় নাম্বার দেন সেটাকে কী বলা যায়?
বর্ণ বৈষম্যের চেয়ে বড় কিছু তো নয় তা। একজন ব্যক্তি , যার
বিবেচনা বোধ আছে, তাকে বিবেচনা বোধের প্রমাণ
দিতে হয় বস্তু নিষ্ঠতার মাধ্যমেই।
ব্যক্তির প্রতি অন্ধ মানুষ কীভাবে মানুষের জন্য কাজ
করবে?
অনেকেই এটা বিশ্বাস করেন- পর্দা প্রগতির বিরাট একটা
অন্তরায়। পর্দা নারীকে খুব বাজেভাবে করায়ত্ত করে
রেখেছে। তারা যদি তাই মনে করে থাকেন তাহলে এই
নারীদের প্রতি তাদের সবচেয়ে সহনশীল হবার কথা ছিল
এই ভেবে যে- এরা অনেক বাঁধা অতিক্রম করে এই পর্যায়ে
এসেছে।
কেননা পর্দা যদি সত্যিই সভ্যতার বাঁধা হয়, তাহলে সেই
বাঁধা অতিক্রম করে একজন মেয়ের বি সি এস ভাইভা,
কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনা পর্যন্ত যাওয়াটা
নিশ্চয়ই অনেক বন্ধুর পথ ছিল। সেই বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে যে
মেয়ে এতদূর আসতে পেরেছে তাকে শুধু এই পোশাকের
কারণে চাকরী না দিয়ে, পরীক্ষার খাতায় ভালো
নাম্বার না দিয়ে কোন নারী মুক্তির কাজ তারা করতে
চান আমার মাথায় আসে না। শুধু এতোটুকুই বুঝি! ব্যক্তি জা
দেখতে চায় তাই যদি দেখে তাহলে মুখে মুখে নারী
দরদী সাজার কোন প্রয়োজন নেই।
বিষয়: বিবিধ
১১১০ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
হিজাব দেখলেতো মাথায় আগুন ধরবেই ,,
তাতে সব কিছু ভালোভাবে দেখা যায় না যে
০ বোঝাই যাচ্ছে এই হিজাবটা সে আসলে ধর্মীর অনুভূতির কারণে পড়ে নি
মন্তব্য করতে লগইন করুন